সংবাদদাতা, দুর্গাপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় সময় যত এগিয়েছে, ততই স্বজন হারানোর বুক খালি করা আর্তনাদে ভারী হয়েছে দুর্গাপুরের (Durgapur) কাদারোড বস্তির বাতাস। শুক্রবার দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার বেসিক অক্সিজেন ফার্নেস (বিওএফ) বিভাগের স্টিল মেলটিং শপের কনভার্টারে কাজ করতে গিয়ে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের প্রভাবে মর্মান্তিক ভাবে প্রাণ হারিয়েছেন তিন ঠিকাকর্মী। মৃত সিন্টু যাদব (২৪), সন্তোষ চৌহান (৩৭) ও স্বজন চৌহান (৪৮)-এর পার্থিব দেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয় শনিবার। গ্যাস দুর্ঘটনার খবর ভাসা ভাসা ভাবে পেলেও এই তিন শ্রমিকের পরিবারের সদস্যদের এই মর্মান্তিক মৃত্যুসংবাদ প্রাথমিক ভাবে দেওয়া হয়নি। পরে খবর দেওয়া হলে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতদের নিকটাত্মীয়রা। এই তিন ঠিকাকর্মীর অকাল মৃত্যুর জন্য তাঁরা দুর্গাপুর (Durgapur) ইস্পাত কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন। এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়েই দ্রুত দুর্গাপুরে এসে পৌঁছন সেল অধীনস্থ বোকারো ইস্পাত কারখানার ডাইরেক্টর ইনচার্জ অমরেন্দু প্রকাশ। দুর্গাপুর ইস্পাতের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আশরাফুল হক মজুমদার জানান, অমরেন্দুবাবু এই দুর্ঘটনার জন্য বিভাগীয় কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন। কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল তার পূর্ণাঙ্গ তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি মৃত তিন ঠিকাকর্মীর নিকটাত্মীয়কে চাকরি ও অন্যান্য ক্ষতিপূরণ দেবারও আশ্বাস দেওয়া হয়। শনিবার আইএনটিটিইউসি-র পক্ষ থেকে কারখানার চিফ জেনারেল ম্যানেজার (স্টিল) কিশোর চৌধুরির দফতরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয় বলে জানান সংগঠনের নেতা জয়ন্ত রক্ষিত ও শৈবাল রায়। জয়ন্তবাবু বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে কেন বারবার কারখানায় দুর্ঘটনা ঘটছে তার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পাশাপাশি বিওএফ বিভাগের সমস্ত উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সাময়িক ছুটিতে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠনের আশঙ্কা, বিভাগীয় আধিকারিকদের ছুটিতে পাঠানো না হলে তদন্ত প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে বলে জানান জয়ন্তবাবু।