প্রতিবেদন : প্রধানমন্ত্রী (PM Narendra Modi) রিমোটে বোতাম টিপে আপনাদের টাকা আটকেছে। ২০২৪-এ ইভিএমে বোতাম টিপে আপনাদের ক্ষমতা বুঝিয়ে দিন। মানুষ ভোট দিয়ে যেমন প্রধানমন্ত্রী বানাতে পারে, তেমনি টেনে-হিঁচড়ে নামাতেও পারে। আমাদের ন্যায্য পাওনা আমরা ছিনিয়ে আনবই। এই আন্দোলনকে সর্বাত্মক করতে হলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলার সর্বত্র তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের জেতান। মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জনসভায় দাঁড়িয়ে এই আবেদন করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। একইসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকের প্রার্থী পছন্দ হতে পারে আবার নাও হতে পারে। নবজোয়ার কর্মসূচিতে দু’মাস ধরে ঘুরে মানুষের ভোট নিয়ে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন তাঁদেরই প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মানুষই তাঁদের জেতাবেন। দলীয় সহকর্মীদের বলব, যাঁর কাছে জোড়া ফুলের চিহ্ন আছে তাঁকে জেতানোর জন্য ঝাঁপাতে হবে। এর অন্যথা করা যাবে না। অনেকে তৃণমূল সমর্থিত নির্দল বলে প্রচার করছেন। মনে রাখবেন নির্দলকে ভোট দিয়ে নিজের ভোট নষ্ট করবেন না। কারণ, ওদের দরজা চিরকালের জন্য আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। সাফ কথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের। এদিন তিনি বলেন, নবজোয়ার কর্মসূচিতে পশ্চিম মেদিনীপুর এলেও নারায়ণগড় আসতে পারিনি। বিধায়ক-সহ জেলা নেতৃত্বকে কথা দিয়েছিলাম, এখানে আসব। কথা রেখেছি। যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেস কথা দিয়ে রাখে। প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, মোদির প্রচারের খরচই সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। ২ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে রামমন্দির তৈরিতে। সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা তো এইভাবেই খরচ হয়ে গিয়েছে। ফলে বাংলার মানুষের ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা ওখানেই খরচ হয়েছে। এই তো বিজেপির নমুনা। এরপরই তিনি প্রায় স্লোগানের ঢঙে বলেন, জোট বেঁধে হিসেব নিন। তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিন। একদিকে বাম-কংগ্রেস-বিজেপি ও আইএসএফের রামধনু জোট যখন মানুষের মনে প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ তখনই বাংলার পালস বুঝে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মানুষকে জোটবদ্ধ হতে বললেন। মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জনসভার পরে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে রোড-শো করেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)। সেখানেও দেখা গেল রেকর্ড ভিড়। অতীতে ভুল বুঝিয়ে ভোট নেওয়া বিজেপি যেভাবে বাংলার ন্যায্য পাওনা আটকেছে। বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে বাংলার মানুষকে ভাতে মারার জন্য যা খুশি তাই করেছে, সেখানে তাদের স্বরূপ চিনিয়ে দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদন, বিজেপি আপনাদের ভোট নিয়ে আপনাদেরই টাকা আটকেছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস গোটা বাংলা জুড়ে উন্নয়ন করেছে। যারা ভোট দিয়েছে তাদের উন্নয় হয়েছে। যারা ভোট দেননি তাদেরও উন্নয়ন হয়েছে। এটাই তৃণমূল কংগ্রেস। যারা কথা দিলে কথা রাখে। এদিন নারায়ণগড়ের সভা থেকে জেলার উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, ২০১৯-এ দিলীপ ঘোষ এখান থেকে জিতে সাংসদ হয়েছে। গত ৪ বছরে পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য কী করেছে? বিজেপি কী করেছে? পঞ্চায়েতে তো বটেই ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনে ২ লক্ষ ভোটে দিলীপ ঘোষকে হারাতে হবে। অভিষেক এদিন বলেন, অনেক জায়গায় প্রচার হচ্ছে তৃণমূল সমর্থিত নির্দল প্রার্থীকে ভোট দিন। আমি বলব, এসব ভুয়ো। নির্দল প্রার্থীকে ভোট দিয়ে একটা ভোটও নষ্ট করবেন না। কারণ আমরা ওদের জন্য আমাদের দলের দরজা চিরকালের মতো বন্ধ করে দিয়েছি। জোড়া ফুলের প্রার্থীকে ভোট দিন। উন্নয়নের গ্যারান্টি আমি নিচ্ছি। এই ভোটে জিতে যারা পঞ্চায়েত প্রধান-উপপ্রধান হবেন তারা মানুষকে পরিষেবা দিতে বদ্ধ পরিকর। প্রতি তিন মাস অন্তর তাদের কাজের রিভিউ হবে। কাজ না করলে সরে যেতে হবে। এদিনের সভা থেকে অভিষেক বলেন, অবিভক্ত মেদিনীপুর কখনও বিশ্বাসঘাতকদের রেয়াত করে না। এই জেলা আন্দোলনের জেলা। এক কাপড়ে থাকবে কিন্তু মাথা নত করবে না।
আরও পড়ুন- আজ কালনায় অভিষেকের জনসভা