প্রতিবেদন : শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন। ঝরছে রক্ত। অর্ধনগ্ন অবস্থায় লোকের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছে ১২ বছরের ধর্ষিতা নাবালিকা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কিংবা পুলিশে খবর দেওয়া তো দূর, সাহায্যের নামে ৫০ বা ১০০ টাকা ভিক্ষা জুটছে তার। বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে নারীসুরক্ষার বাস্তব ছবি এটাই।
আরও পড়ুন-টিকটকের পক্ষে সওয়াল করে বিতর্কে রামস্বামী
মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীর ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। লোকালয়ের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে সেই হাড়হিম করা দৃশ্য। ইতিমধ্যে ঘটনায় এক অটোচালকের পাশাপাশি আরও তিনজনকে আটক করেছে উজ্জয়িনী সিটি পুলিশ। উজ্জয়িনীর পুলিশ আধিকারিক সচিন শর্মা বলেন, এলাকায় কোনও বাসিন্দা ওই মেয়েটিকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। বদলে তার হাতে কেউ ৫০, কেউ বা ১০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে চলে গিয়েছে। মোট ১২০ টাকা ভিক্ষা দেওয়া হয় মেয়েটিকে। পুলিশ আধিকারিক আরও বলেন, ‘মেয়েটিকে রক্তাক্ত এবং অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেখে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। রক্তাক্ত বিপন্ন কিশোরীকে দেখে সাধারণ মানুষ কীভাবে মুখ ফিরিয়ে থাকল তা নিয়ে উদ্বিগ্ন মনস্তাত্ত্বিক থেকে সমাজকর্মীরাও। জানা গিয়েছে, রক্তাক্ত অবস্থায় ওই নাবালিকা সাহায্য চেয়ে ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত হেঁটেছিল। ইতিমধ্যে গোটা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ৩৮ বছরের অটোচালক রাকেশ এই ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলেই জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জীবন খেরি থেকে নাবালিকা একটি অটোতে ওঠে। সিসিটিভি ফুটেজে তেমনটাই দেখা গিয়েছে। ওই অটোতেই যে রক্তের ছাপ পাওয়া গিয়েছিল, তা নাবালিকার নমুনার সঙ্গে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি চলন্ত অটোতে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল? কত জন জড়িত এই ঘটনায়? যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আনেনি পুলিশ। জখম নাবালিকাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন স্থানীয় এক পুরোহিত। নিজের পোশাক দিয়ে নাবালিকাকে মানবিক সাহায্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন-লোকসভা ভোটের আগে আবার ধাক্কা, বিজেপির সঙ্গে যেতে চায় না আকালি দল
সর্বস্তরে চাপের মুখে উজ্জয়িনীর ঘটনায় সিট গঠন করা হয়েছে। পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, মেয়েটি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের বাসিন্দা। যদিও তার কাছে কোনও পরিচয়পত্র পাওয়া যায়নি। কোনও ফোন নম্বর কিংবা পরিবারের খোঁজও দিতে পারেনি মেয়েটি। প্রবল ট্রমায় আচ্ছন্ন কিশোরী নিজের নামটুকুও বলতে পারেনি। আপাতত তার চিকিৎসা চলছে। অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিধানসভা ভোটের আগে এই ঘটনায় মধ্যপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা ও নারীসুরক্ষার চরম অবনতিতে চাপে গেরুয়া শিবির।