এই হল বিজেপি, এটাই হল এদের আসলি রূপ

Must read

ক’দিন তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। অবশেষে অপারেশন সিঁদুরের পর তাঁকে প্রথম দেখা গেল দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রথম ভাষণ দেওয়ার সময়। সোমবার রাত ৮টায়। তিনি বললেন, ‍‘আমরা সন্ত্রাসবাদকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলাম। এখন সবাই জেনে গিয়েছে আমাদের মা-বোনের সিঁদুর মুছে ফেলার ফল কী।’
আর এখন শুনছি, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ‍‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’। শোনাচ্ছেন ওই যে বিজেপির নেতা নরেন্দ্র মোদি, সেই বিজেপিরই এক নেতা। নরেন্দ্র মোদি যেমন দেশের প্রধানমন্ত্রী, এই নেতাটিও মধ্যপ্রদেশে আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রী। নাম বিজয় শাহ।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

তিনি বলেছেন, ‍‘যারা আমাদের বোনদের সিঁদুর মুছে দিয়েছিল, মোদিজি তাদেরই বোনকে পাঠিয়ে তাদের শায়েস্তা করেছেন।’
বিজেপির সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রমাণ। তদাতিরিক্ত কিছু নয়। বিজেপির আসলি রূপের আর একটা নমুনা।
গত সোমবার ইন্দোরের রায়কুন্ডাতে একটি অনুষ্ঠান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওই বিজয় শাহ। তাঁর বক্তৃতার যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেটিতে শোনা যাচ্ছে, ‍‘তোমরা আমাদের বোনকে বিধবা করেছ, তাই তোমাদের সমাজের মেয়ে এসে তোমাদের উলঙ্গ করে ছেড়েছে। আমাদের দেশের সম্মান, জাতি-সমাজের মেয়েদের সিঁদুর তোমরা মুছতে গেছ। তার জবাবে আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে তোমাদের জাতি ও সমাজের মেয়েকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে এর বদলা নেওয়া যায়।’
পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসবাদীরা আমাদের দেশটাকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করতে চেয়েছিল। আমরা একজোট হয়ে তার জবাব দিয়েছি। অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন সোফিয়া কুরেশি ও ব্যোমিকা সিং ভারতীয় নারীশক্তির মুখ হয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছেন। আমরা ধন্য ধন্য করেছি। ঘরে এবং বাইরে।
আর তখনই পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় নিহত নৌ সেনা আধিকারিক বিনয় নারওয়ালের বিধবা হিমাংশী নারওয়াল সমাজমাধ্যমে উগ্র গেরুয়াপন্থীদের নোংরা আক্রমণের শিকার হন। হিমাংশীর অপরাধ, তিনি বলেছিলেন, কেউ যেন মুসলমান বা কাশ্মিরীদের পহেলগাঁওয়ের ঘটনার জন্য টার্গেট না করেন। কারণ, দেশ পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার ক্ষত সারিয়ে উঠতে পারেনি। তার মধ্যে বিশেষ ধর্মের ওপর লোকদের ওপর বিদ্বেষমূলক আচরণ, পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাবে।
তাঁর বক্তব্য ছিল, আমরা শুধু শান্তি চাই, অশান্তি নয়, তবে ন্যায় বিচারও দরকার। অর্থাৎ, টার্গেট হোক জঙ্গিস্তান, পাকিস্তান, মুসলমান নয়।
যুক্তিসঙ্গত কথা, সুস্থ বুদ্ধির উচ্চারণ। আর, তাই শুনে খেপে উঠল গেরুয়াবাদীর দল। পিএইচডি স্কলার হিমাংশীকে লক্ষ্য করে শুরু হল ট্রোলিং। তাঁর চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলল। এমনকী, তাঁর বিয়ে নিয়েও প্রশ্ন তোলা হল। স্বজনহারা, সদ্যবিধবা তরুণীকে নিয়ে চলল নোংরামি। অশালীন মন্তব্যের ঝড় উঠল। তখনও হয়েছিল ন্যাকামি। লোক দেখানো আদিখ্যেতা।

আরও পড়ুন-জঙ্গিদের শহিদের মর্যাদার পর এবার মসুদকে ১৪ কোটি ক্ষতিপূরণ, এরপরেও IMF-এর অর্থ সাহায্য

জতীয় মহিলা কমিশনকে মাঠে নামানো হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে সোশ্যাল পোস্টে বলা হয়, লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়ালজির মৃত্যুর পর যেভাবে তাঁর স্ত্রীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সেই পোস্টেই শেষ লাইনে লেখা হয়, ‍‘জাতীয় মহিলা কমিশন প্রত্যেক মহিলার সম্মান এবং সম্ভ্রম রক্ষায় দায়বদ্ধ।’
আর এবারও প্রায় অভিন্ন নাট্যদৃশ্য।
মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিজয় শাহের বক্তব্যের দায় নিতে রাজি হয়নি। উলটে হিতানন্দ শর্মা তাঁকে রাজ্য দফতরে ডেকে পাঠিয়ে ধমকে দিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে, বিজয় শাহ ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেছেন, ভবিষ্যতে তিনি আর এমন কাজ করবেন না।
এটা মেনে নেওয়া যেত। যদি না বিজয় শাহর নোংরা কথা বলার পুরানো রেকর্ড থাকত।
২০২২-এ এই বিজয় শাহ একজন প্রথম সারির বিরোধী নেতার অবিবাহিত থাকা নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন।
২০২৩-এ শোনা গিয়েছিল, বিজয় শাহ বিদ্যা বালানের শ্যুটিং বন্ধ করিয়ে দিয়েছেন, কারণ বিদ্যা বালান তাঁর সঙ্গে রাতে একান্তে দেখা করতে রাজি হননি।
এহ বাহ্য! ২০১৩-তে শিবরাজ সিং চৌহানের স্ত্রী সাধনা সিংকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন বিজয় শাহ। তখন তিনি শিবরাজ সিং চৌহান মন্ত্রিসভার সদস্য। ওই মন্তব্যের জেরে তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল।
আসলে, বিজেপি একটা পুরোদস্তুর নারী-বিদ্বেষী দল।
আসলে, বিজেপি একটা পুরোদস্তুর সাম্প্রদায়িক মনভাবাপন্ন দল।
সময়ে সময়ে তাদের মুখোশ খুলে গিয়ে মুখটা বেরিয়ে পড়ে। এবারেও তেমনটাই ঘটল।
ওরা নারীকে সম্মান দিতে জানে না। জানে কেবল হিন্দু-মুসলমান করতে।
দেশ একজোট থাকলেও ওরা বিরোধ-বিভাজনের বিষ ছড়াতে ব্যস্ত। সদাসর্বদা।ক’দিন তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। অবশেষে অপারেশন সিঁদুরের পর তাঁকে প্রথম দেখা গেল দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রথম ভাষণ দেওয়ার সময়। সোমবার রাত ৮টায়। তিনি বললেন, ‍‘আমরা সন্ত্রাসবাদকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলাম। এখন সবাই জেনে গিয়েছে আমাদের মা-বোনের সিঁদুর মুছে ফেলার ফল কী।’
আর এখন শুনছি, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ‍‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’। শোনাচ্ছেন ওই যে বিজেপির নেতা নরেন্দ্র মোদি, সেই বিজেপিরই এক নেতা। নরেন্দ্র মোদি যেমন দেশের প্রধানমন্ত্রী, এই নেতাটিও মধ্যপ্রদেশে আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রী। নাম বিজয় শাহ।
তিনি বলেছেন, ‍‘যারা আমাদের বোনদের সিঁদুর মুছে দিয়েছিল, মোদিজি তাদেরই বোনকে পাঠিয়ে তাদের শায়েস্তা করেছেন।’
বিজেপির সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রমাণ। তদাতিরিক্ত কিছু নয়। বিজেপির আসলি রূপের আর একটা নমুনা।

আরও পড়ুন-যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে পিছিয়ে গেল আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে শুভাংশুর যাত্রা

গত সোমবার ইন্দোরের রায়কুন্ডাতে একটি অনুষ্ঠান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওই বিজয় শাহ। তাঁর বক্তৃতার যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেটিতে শোনা যাচ্ছে, ‍‘তোমরা আমাদের বোনকে বিধবা করেছ, তাই তোমাদের সমাজের মেয়ে এসে তোমাদের উলঙ্গ করে ছেড়েছে। আমাদের দেশের সম্মান, জাতি-সমাজের মেয়েদের সিঁদুর তোমরা মুছতে গেছ। তার জবাবে আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে তোমাদের জাতি ও সমাজের মেয়েকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে এর বদলা নেওয়া যায়।’
পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসবাদীরা আমাদের দেশটাকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করতে চেয়েছিল। আমরা একজোট হয়ে তার জবাব দিয়েছি। অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন সোফিয়া কুরেশি ও ব্যোমিকা সিং ভারতীয় নারীশক্তির মুখ হয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছেন। আমরা ধন্য ধন্য করেছি। ঘরে এবং বাইরে।
আর তখনই পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় নিহত নৌ সেনা আধিকারিক বিনয় নারওয়ালের বিধবা হিমাংশী নারওয়াল সমাজমাধ্যমে উগ্র গেরুয়াপন্থীদের নোংরা আক্রমণের শিকার হন। হিমাংশীর অপরাধ, তিনি বলেছিলেন, কেউ যেন মুসলমান বা কাশ্মিরীদের পহেলগাঁওয়ের ঘটনার জন্য টার্গেট না করেন। কারণ, দেশ পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার ক্ষত সারিয়ে উঠতে পারেনি। তার মধ্যে বিশেষ ধর্মের ওপর লোকদের ওপর বিদ্বেষমূলক আচরণ, পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাবে।
তাঁর বক্তব্য ছিল, আমরা শুধু শান্তি চাই, অশান্তি নয়, তবে ন্যায় বিচারও দরকার। অর্থাৎ, টার্গেট হোক জঙ্গিস্তান, পাকিস্তান, মুসলমান নয়।
যুক্তিসঙ্গত কথা, সুস্থ বুদ্ধির উচ্চারণ। আর, তাই শুনে খেপে উঠল গেরুয়াবাদীর দল। পিএইচডি স্কলার হিমাংশীকে লক্ষ্য করে শুরু হল ট্রোলিং। তাঁর চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলল। এমনকী, তাঁর বিয়ে নিয়েও প্রশ্ন তোলা হল। স্বজনহারা, সদ্যবিধবা তরুণীকে নিয়ে চলল নোংরামি। অশালীন মন্তব্যের ঝড় উঠল। তখনও হয়েছিল ন্যাকামি। লোক দেখানো আদিখ্যেতা।
জতীয় মহিলা কমিশনকে মাঠে নামানো হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে সোশ্যাল পোস্টে বলা হয়, লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়ালজির মৃত্যুর পর যেভাবে তাঁর স্ত্রীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সেই পোস্টেই শেষ লাইনে লেখা হয়, ‍‘জাতীয় মহিলা কমিশন প্রত্যেক মহিলার সম্মান এবং সম্ভ্রম রক্ষায় দায়বদ্ধ।’
আর এবারও প্রায় অভিন্ন নাট্যদৃশ্য।

আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে চলন্ত বাসে আগুন, ঝলসে মৃত্যু দুই শিশু-সহ পাঁচ

মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিজয় শাহের বক্তব্যের দায় নিতে রাজি হয়নি। উলটে হিতানন্দ শর্মা তাঁকে রাজ্য দফতরে ডেকে পাঠিয়ে ধমকে দিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে, বিজয় শাহ ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেছেন, ভবিষ্যতে তিনি আর এমন কাজ করবেন না।
এটা মেনে নেওয়া যেত। যদি না বিজয় শাহর নোংরা কথা বলার পুরানো রেকর্ড থাকত।
২০২২-এ এই বিজয় শাহ একজন প্রথম সারির বিরোধী নেতার অবিবাহিত থাকা নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন।
২০২৩-এ শোনা গিয়েছিল, বিজয় শাহ বিদ্যা বালানের শ্যুটিং বন্ধ করিয়ে দিয়েছেন, কারণ বিদ্যা বালান তাঁর সঙ্গে রাতে একান্তে দেখা করতে রাজি হননি।
এহ বাহ্য! ২০১৩-তে শিবরাজ সিং চৌহানের স্ত্রী সাধনা সিংকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন বিজয় শাহ। তখন তিনি শিবরাজ সিং চৌহান মন্ত্রিসভার সদস্য। ওই মন্তব্যের জেরে তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল।
আসলে, বিজেপি একটা পুরোদস্তুর নারী-বিদ্বেষী দল।
আসলে, বিজেপি একটা পুরোদস্তুর সাম্প্রদায়িক মনভাবাপন্ন দল।
সময়ে সময়ে তাদের মুখোশ খুলে গিয়ে মুখটা বেরিয়ে পড়ে। এবারেও তেমনটাই ঘটল।
ওরা নারীকে সম্মান দিতে জানে না। জানে কেবল হিন্দু-মুসলমান করতে।
দেশ একজোট থাকলেও ওরা বিরোধ-বিভাজনের বিষ ছড়াতে ব্যস্ত। সদাসর্বদা।

Latest article