প্রতিবেদন: ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত ব্রিকস জোট বর্তমানে ১০টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। কিন্তু এই জোট এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (US President Donald Trump) চক্ষুশূল। তাই ব্রিকসকে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ব্রিকসের আমেরিকা-বিরোধী নীতির সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করা যেকোনও দেশকে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হতে হবে। এর আগে ট্রাম্প ব্রিকস দেশগুলিকে ১০০ শতাংশ শুল্কের হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, যদি তারা বৈশ্বিক বাণিজ্যে ডলারের ব্যবহার কমানোর কথা একবারও ভাবে তাহলে তাদের উপর মাত্রাতিরিক্ত শুল্ক চাপাবেন তিনি (US President Donald Trump)।
আরও পড়ুন-ভুয়ো মেডিক্যাল কলেজের অনুমতির বিনিময়ে মন্দির রাজস্থানে!
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ইরান এবং ২০২২ সালে রাশিয়াকে সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাঙ্ক ফিনান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন থেকে বাদ দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন বৈশ্বিক আর্থিক অবকাঠামোকে নিজেদের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল, তখন থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মার্কিন ডলার এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার উপর তাদের নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল রাশিয়া ও চিনের নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য শুরু করা। বর্তমানে ব্রিকস বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ এবং বিশ্বের জিডিপির ৩৫ শতাংশের বেশি অবদান রাখে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত তাদের শীর্ষ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠাতা পাঁচ সদস্য দেশ—ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা—আনুষ্ঠানিকভাবে মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে নতুন সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। পরে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ইন্দোনেশিয়া এই জোটে যোগ দেয়। যার ফলে এখন মোট সদস্য সংখ্যা দশে উন্নীত হয়েছে। ২০২২ সালের জুনে রাশিয়া ব্রিকস দেশগুলির মুদ্রাকাঠামোর উপর ভিত্তি করে একটি নতুন আন্তর্জাতিক রিজার্ভ মুদ্রা তৈরির প্রস্তাব করেছিল। তবে এক ব্রিকস রিপোর্ট অনুসারে, সদস্য দেশগুলি বলেছে যে তারা ‘বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে মার্কিন ডলারকে প্রতিস্থাপন করতে চায় না’। পরিবর্তে, ব্রিকসের লক্ষ্য হল একটি কার্যকর বিকল্প প্রস্তাব করা যা বাজারে তার চিরন্তন দক্ষতার লক্ষ্যে সহায়তা করবে এবং বৃহত্তর সমৃদ্ধি আনবে। এটি কার্যকর হলে সর্বজনীনভাবে উপকারী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক বিশ্বায়নকে উৎসাহ দেবে।
তবে ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি এমন এক সময়ে এসেছে যখন মার্কিন ডলার এই বছর তিন বছরের সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে। প্রস্তাবিত শুল্কের কারণে মার্কিন অর্থনীতিতে প্রত্যাশিত বিঘ্নের ফলে ইউরো এবং ইয়েনের মতো মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মূল্য ১০ শতাংশের বেশি কমে গিয়েছে। নিজেরা সংকটে পড়ে এখন ব্রিকসের সদস্য দেশগুলিকে ভয় দেখাচ্ছেন ট্রাম্প!