এবার প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিলেন অভিভাবকরা, সমলিঙ্গ বিয়ের আইনি স্বীকৃতি

দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে সমলিঙ্গের বিবাহের আইনি স্বীকৃতি সংক্রান্ত মামলা।

Must read

প্রতিবেদন : দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে সমলিঙ্গের বিবাহের আইনি স্বীকৃতি সংক্রান্ত মামলা। এরই মধ্যে সমলিঙ্গ বিবাহের আইনি স্বীকৃতির দাবিতে ৪০০-র বেশি মা-বাবার সংগঠন রেনবো পেরেন্টসের তরফে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লেখা হয়েছে। ওই চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, ভারতের মতো এক বৈচিত্রপূর্ণ দেশে সমলিঙ্গের বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। আমরা আশা করছি, আমাদের জীবদ্দশাতেই আমাদের সন্তানদের এই বিয়ে দেখে যেতে পারব। চিঠিতে আর্জি জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে বিবাহিত সমকামীদের বিশেষ বিবাহ আইনে আইনি বৈধতা হোক।

আরও পড়ুন-খেতাবি দৌড়ে আজ আর্সেনাল বনাম সিটি

মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানিতে আইনজীবী সৌরভ কৃপাল বলেন, সর্বোচ্চ আদালত যদি আবেদনকারীদের দাবিগুলি না মানে তাহলে বুঝতে হবে যে, সুপ্রিম কোর্টেও কিছু মিলবে না। আদালতের কাছে আমার আর্জি, প্রত্যেক মানুষের অধিকার যাতে সুরক্ষিত থাকে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হোক। ইতিমধ্যেই সমলিঙ্গের বিবাহের স্বীকৃতি নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে একাধিক মতামত জমা পড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সমলিঙ্গের বিবাহে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। অন্যদিকে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বিষয়টি সংসদের উপর ছেড়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে। আইনজীবী মানেকা গুরুস্বামী বলেন, সমলিঙ্গের বিবাহ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব সংসদের, কেন্দ্রের এই দাবি ভিত্তিহীন। সংবিধান অনুযায়ী এ বিষয়ে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

আরও পড়ুন-বিমানে আগুন, রক্ষা ফুটবলারদের

এদিনের শুনানিতে আবেদনকারীদের তরফে আইনজীবী গীতা লুথরা বলেন, গোটা বিশ্বের অগ্রণী গণতান্ত্রিক দেশগুলি সমলিঙ্গের বিবাহ মেনে নিয়েছে। কাজেই আমরা পিছিয়ে থাকতে পারি না। আমরা কাউকে তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারি না। সমলিঙ্গের বিবাহিত দম্পতিদের সন্তান দত্তক নেওয়া, সম্পত্তি সংক্রান্ত উত্তরাধিকার, ভিসা থেকে আমরা দূরে রাখতে পারি না। লুথরা আরও বলেন, এই মামলার প্রথম আবেদনকারী ছয় বছর ধরে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ। তাঁরা আমেরিকার টেক্সাসে থাকেন। সেখানে তাঁদের বিবাহ নথিভুক্ত হয়েছে। তাঁদের একটি মেয়ে আছে। কিন্তু ভিসা না পাওয়ার কারণে তাঁরা ভারতে আসতে পারছেন না। লুথরার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ফরেন ম্যারেজ অ্যাক্টে এ বিষয়ে কোনও সুযোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন প্রধান বিচারপতি।

আরও পড়ুন-গিলোটিনে ডারউইন

আইনজীবী আনন্দ গ্রোভার বলেন, আমেরিকায় সমলিঙ্গের বিবাহ সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে। ভারতীয় সংবিধানের ১৯ সি ধারায় এই বিবাহকে আইনে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত বিশ্বের ৩৪টি দেশে সমলিঙ্গের বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভারতে সমলিঙ্গের বিবাহ আইন স্বীকৃতি না পেলেও ২০১৮ সালে শীর্ষ আদালত এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়েছিল, সমকামী সম্পর্ক কোনও অপরাধ নয়। ওই রায়ের পর এদেশেও সমকামী বিবাহের স্বীকৃতির দাবিটি আরও জোরালো হয়েছে।

Latest article