প্রতিবেদন : অবিশ্রান্ত বৃষ্টি। সাম্প্রতিক অতীতে এমনটা দেখেনি কলকাতা। দেবীপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শহর কলকাতায় আগমন বর্ষাসুরের। সোমবার রাতের তিন ঘণ্টার বৃষ্টির ভয়াবহতা ’৭৮-কেও টেক্কা দেবে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ৫০ বছরের ইতিহাসে এই বর্ষণ বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। ১৯৭৮ সালে একদিনে সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল ৩৬৯.৪ মিলিমিটার। এদিনও কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ৩৫০ মিলিমিটারের কাছাকাছি বৃষ্টি হয়েছে। ’৭৮-এর বন্যায় দীর্ঘক্ষণ ধরে বৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু সোমবার রাতে মাত্র তিন ঘণ্টার বৃষ্টি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে ’৭৮-কে। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৮৬ সালে একদিনে ২৫৯.৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। আর ২০২৫-এর ২২ সেপ্টেম্বরের রাতে মাত্র তিন ঘণ্টায় ২৫১.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হল। এদিন রাত আড়াইটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাত জেগে মনিটরিং করেছেন। মেয়র ফিরহাদ হাকিম কন্ট্রোলরুম সামলেছেন রাতভর। তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-বিধায়কেরা রাস্তায় নেমে জনসাধারণের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
আরও পড়ুন-নবান্ন-পুরসভার অক্লান্ত পরিশ্রম, দ্রুত নামছে জল
আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতা ও কলকাতা সংলগ্ন এলাকাগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে গড়িয়ার কামডহরি এলাকায় ৩৩২ মিলিমিটার। এছাড়াও মানিকতলা, কাঁকুড়গাছি, উল্টোডাঙা, তপসিয়া, বালিগঞ্জ-সহ সমগ্র কলকাতা জুড়ে দাপটে বৃষ্টি হয়েছে রাতভর। প্রায় প্রত্যেকটি জায়গাতেই ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার করে বৃষ্টি হয়েছে। হাওয়া অফিস আগেই সতর্ক করেছিল অতি-ভারী বর্ষণের। কিন্তু এদিন যে রেকর্ড-ব্রেকিং বৃষ্টি হবে, তা কল্পনা করা যায়নি। কী কারণে এই বৃষ্টি? ব্যাখ্যা দিয়ে আলিপুর হাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, অতি-গভীর নিম্নচাপের জেরে প্রচুর জলীয় বাষ্প পুঞ্জিভূত হয়েছিল এক জায়গায়। কলকাতা ও তার সংলগ্ন আকাশে সেই মেঘ থেকেই অঝোর ধারায় বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়াবিদেরা আরও জানান, মাটি থেকে মেঘের দূরত্ব ছিল মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। তার ফলেই ছোট্ট পরিসরে বৃষ্টির প্রকোপ ছিল ভয়াবহ। নাগাড়ে বৃষ্টিতে বিপর্যয় নেমে আসে কলকাতার বুকে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এখনই কেটে যাচ্ছে না দুর্যোগ-পরিস্থিতি। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে।