প্রতিবেদন : শুধু মুখে বড় বড় কথা, কাজে নেই। বাংলার বদনাম করে গিয়েছে, অথচ নিজেদের রাজ্যে নিয়োগের বেহাল দশা। রবিবার বাংলার এসএসসি পরীক্ষা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, নিয়োগ নেই বিজেপির রাজ্যে! তাই উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের পরীক্ষার্থীরা ছুটে এল বাংলায় পরীক্ষা দিতে। এদিন এমনই ছবি ধরা পড়ল পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে।
আরও পড়ুন-১০ লক্ষ টাকা মাথার দাম, মাওবাদী নেতাকে নিকেশ করল নিরাপত্তা বাহিনী
বাংলায় নিয়োগে বারবার নানা জটিলতা তৈরি করেছে বিজেপি। কিন্তু নিজেদের রাজ্যেরই নিয়োগ পরিস্থিতির দিকে ফিরে তাকায়নি। নিরুপায় হয়ে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থানের মতো রাজ্যের প্রার্থীরা বাংলায় পরীক্ষা দিতে এলেন। তাঁদেরই অভিযোগ, বিজেপি ও তাদের সঙ্গী রাজ্যগুলিতে নিয়োগের পরীক্ষা প্রায় পাঁচ বছর বন্ধ। নিয়োগ হয়নি, নিয়োগের পরীক্ষাও হয়নি, বেড়ে চলেছে বেকারত্ব। যুবসমাজে হাহাকার। কোনও দৃকপাত নেই বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে। তাই তাঁরা বাংলায় এসেছেন চাকরির সন্ধানে। নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরে তাঁরা খুশি। এ-প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, উত্তরপ্রদেশ, বিহার-সহ তথকথিত ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্য থেকে আসা পরীক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন কীভাবে তাদের রাজ্যে কর্মপ্রার্থীদের চোখের জল পড়ছে। তাঁরা সরকারের কাজে হতাশ, বেকার সমস্যার সমাধান হয় না। একমাত্র বাংলাতেই তাঁরা আশার আলো দেখছেন। সবথেকে তাৎপূর্ণ হল, এখানে একবারও আওয়াজ ওঠেনি যে পরীক্ষা শুধু বঙ্গবাসীরাই দেবেন। যাঁরা ভিনরাজ্য থেকে এসে পরীক্ষা দিলেন তাঁদের কেউ বাজে কথা বলেনি, হয়রান করেনি। বাংলা সেই সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না।
রবিবার রাজ্যের ৬৩৬টি কেন্দ্রে এসএসসির নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। কলকাতা শহর থেকে বাংলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে সকাল থেকেই অপেক্ষা করছিলেন নিয়োগপ্রার্থীরা। মণীন্দ্রনাথ কলেজ থেকে শুরু করে উত্তর কলকাতার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাজির পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁরা কেউ এসেছেন বিহার থেকে, কেউ রাজস্থান থেকে। আবার দলে দলে পরীক্ষার্থীরা এসেছেন যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশ থেকেও। বিজেপি রাজ্যের পরীক্ষার্থীরা জানাচ্ছেন কোথাও ২০২১, কোথাও ২০২২ সালে শেষ নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছে। তাই বাংলাই তাঁদের নিয়োগের জন্য ভরসা।
বাংলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগের পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হলেই বিজেপি ও বামেরা মামলা করে আটকানোর চেষ্টা করেছে। এমনকী আদালতে সেই নিয়োগ বাতিলের রায় দেওয়া বিচারপতিও যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। সেখানে স্পষ্ট গোটা দেশের বেকারত্ব মেটাতে আদতে বিজেপি কতটা উদাসীন। সেই ছবি ধরা পড়ল রবিবারের এসএসসি পরীক্ষায়। প্রয়াগরাজ থেকে আসা মহিলা পরীক্ষার্থীরা জানালেন শনিবারই তাঁরা রাজ্যে এসেছেন এসএসসি পরীক্ষায় যোগ দিতে। বাংলার প্রশাসনের স্বচ্ছ ও সহজ নিয়োগ প্রক্রিয়ার আয়োজনে এদিন মুখোশ খসে পড়ল বিজেপির। একইসঙ্গে স্পষ্ট করে দিল বিজেপি-রাজ্যে নিয়োগের করুণ দশা।