আগরতলা : ত্রিপুরায় পুরভোটের প্রচারে নেমে বারবার বিজেপির গুন্ডাবাহিনীর তাণ্ডবের মুখে পড়ছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা। একাধিক হামলার ঘটনা ঘটলেও নিষ্ক্রিয় পুলিশ। কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। রাতের অন্ধকারে প্রার্থীদের বাড়িতে ঢুকে আক্রমণের পাশাপাশি ভাঙচুর করা হচ্ছে বাড়িঘর। বুধবার রাতেও ত্রিপুরায় তৃণমূল প্রার্থী অপর্ণা বিশ্বাসের ওপর হামলা চালিয়েছে বিজেপির গুন্ডাবাহিনী। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার আগরতলায় রাজ্য পুলিশের সদর দফতরের সামনে টানা অবস্থান বিক্ষোভ চালায় তৃণমূল কংগ্রেস। নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্য স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক, সাংসদ সুস্মিতা দেব ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিক। বলেন, এ রাজ্যে পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত কুৎসিত পর্যায়ে চলে গিয়েছে। খাকি উর্দি পরে দলদাসের ভূমিকা। গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে। মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার পরিবর্তে যে সমস্ত সংগঠন মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছে পুলিশ। বিজেপির গুন্ডারা আমাদের প্রার্থী ও কর্মীদের প্রকাশ্য দিবালোকে মারধর করছে। ঘুরে বেড়াচ্ছে বাইকবাহিনী। রাতের অন্ধকারেও চলছে হামলা। আমাদের প্রার্থী অপর্ণা বিশ্বাসের বাড়িতে বুধবার রাতে গুন্ডারা তাণ্ডব চালালেও কোনওরকম পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি। এদিন সকালে এসে ফের হুমকি দিয়ে গিয়েছে গুন্ডারা। সব জেনেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ, এই কি গণতন্ত্রের নমুনা?
আরও পড়ুন : চ্যাম্পিয়ন্স লিগে না উঠলে ম্যান ইউ ছাড়বেন রোনাল্ডো
সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, আমতলি বাজারে বুধবার যে হামলা হয়েছে তার সমস্ত রিপোর্ট ও ভিডিও ফুটেজ দেওয়া হলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ রাজ্যে পুলিশের ভূমিকা কি বিজেপির গুন্ডাবাহিনীকে সুরক্ষা দেওয়া?
রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে টানা ধরনার পর পুলিশের ডিজিকে স্মারকলিপি দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ডিজির অনুরোধে ডিআইজি রাওয়ের সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিত অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেন তৃণমূল নেতারা। পরে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আমরা পুলিশকে বলেছি, নির্বাচন হল গণতন্ত্রের উৎসব। সমস্ত দলের সব প্রার্থীর শান্তিপূর্ণ প্রচারের অধিকার রয়েছে। আমাদের দলের একের পর এক প্রার্থী আক্রান্ত হবেন আর পুলিশ হাত গুটিয়ে থাকবে তা মানা যাবে না। এরপর একজনও কর্মী আক্রান্ত হলে আমরা রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করব। রাজীব বলেন, ডিজি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আমরা পুলিশের সদর দফতরের সামনে থেকে ধরনা প্রত্যাহার করছি। আমরা চাই গণতন্ত্রের উৎসব গণতান্ত্রিকভাবেই পালিত হোক। সুবল ভৌমিক হুঁশিয়ারি দেন, নির্বাচন ১০০ শতাংশ ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করতে হবে। এরপর কোনও কর্মী আক্রান্ত হলে দায়ী থাকবে পুলিশ। মানুষকে নিয়েই পথে নামব আমরা।