প্রতিবেদন : প্রথমে ভর্ৎসনা, তারপর ঠাট্টা, শেষে অনুকরণ! এটাই বিজেপির পুরনো স্বভাব। টুকলিবাজির সেই স্বভাব বজায় রাখতে এবার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সেবাশ্রয়’ (sebaashray) প্রকল্পকে নকল করছেন বিরোধী দলনেতা গদ্দার অধিকারী। এই গদ্দারই একসময় ডায়মন্ড হারবারের মানুষের জন্য সাংসদ অভিষেকের ‘সেবাশ্রয়’ উদ্যোগ নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করেছিলেন, কুৎসা রটিয়েছিলেন। ‘সেবাশ্রয় জাল, ২৫ টাকার ওষুধ বেচছে আড়াইশো টাকায়, দাঁতের ডাক্তারকে দিয়ে বুক দেখাচ্ছে’ ইত্যাদি তির্যক মন্তব্য করেছিলেন ধান্দাবাজ বিরোধী দলনেতা। কিন্তু ‘সেবাশ্রয়’ (sebaashray) সাফল্যের পর হঠাৎ তার মনোভাব পাল্টে গিয়েছে! মরিয়া হয়ে নন্দীগ্রামে সেই একই মডেল নকল করার চেষ্টা করছেন। গদ্দারের টুকলিবাজির তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সমাজমাধ্যমে দলের বক্তব্য, ভণ্ডামিকেই এখন নিজেদের সরকারি নীতি বানিয়ে ফেলেছে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা নন্দীগ্রামে ‘সেবাশ্রয়’-এর নকল করতে বাধ্য হচ্ছেন কারণ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ‘সেবাশ্রয়’-এর বিপুল সাফল্য। যে মডেল গ্রামেগঞ্জে মানুষের দরজায় দরজায় স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছে—তাতে অনুপ্রাণিত হয়ে এখন নন্দীগ্রামের মানুষ নিজেরাই ‘এক ডাকে অভিষেক’-এ এমন উদ্যোগের দাবি জানিয়েছেন। এমনটা তখনই ঘটে যখন কেউ কথা কম বলে, ভাষণ কম দিয়ে কাজে বেশি মনোযোগ দেন— তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক সেই কাজটাই করেছেন।
আরও পড়ুন-কলকাতা পুলিশের পদ কাঠামোয় আনা হচ্ছে পরিবর্তন
প্রথমে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করে এখন সুবিধাবাদী রাজনীতি করতে নন্দীগ্রামে ‘সেবাশ্রয়’কে নকল করায় গদ্দার অধিকারীকে ধুয়ে দিয়েছেন দুই তৃণমূল যুবনেতা। গদ্দারকে কটাক্ষ করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের জনদরদি সরকারের কাজকে প্রথমে গালাগাল দেওয়া এবং পরে সেই কাজটাই চুরি করা বিজেপির পুরনো অভ্যাস! লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে দুয়ারে সরকার— কিছুই বাদ নেই নকলের তালিকায়। এবার সেই একই পথেই হাঁটছেন বিরোধী দলনেতাও। যখন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের সংসদীয় এলাকার মানুষের স্বার্থে ‘সেবাশ্রয়’ উদ্যোগ শুরু করেছিলেন, তখন ঠাট্টা করেছিলেন তিনি। আর আজ যখন নন্দীগ্রামের মানুষ সেই সেবাশ্রয়কেই চাইছেন, তখন তিনিই সেটাকে অনুকরণ করতে ব্যস্ত। এ কেমন দ্বিচারিতা?
আবার তৃণমূল আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য গদ্দারকে তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, টুকলি করে পাশ করা যায়, কিন্তু ফার্স্ট হওয়া যায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও জনকল্যাণমূলক প্রকল্প আনলে, বিজেপির প্রথম কাজ তৃণমূল সরকারের সেই জনদরদি উদ্যোগকে গালাগালি করা এবং সবশেষে সেটাকে অনুকরণ করা। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, দুয়ারে সরকার-সহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচুর প্রকল্পকে নকল করেছে বিভিন্ন বিজেপি রাজ্য। দুর্গাপুজোর জন্য ক্লাবগুলিকে দেওয়া অর্থসাহায্য নিয়েও আগে কটাক্ষ করে পরে দিল্লিতে সেই মডেলেরই নকল করা হল। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও যখন নিজের সংসদীয় এলাকার মানুষের কল্যাণার্থে ‘সেবাশ্রয়’ শুরু করেছিলেন, তখনও বিরোধী দলনেতা কটাক্ষ করেছিলেন। তারপর যখন নন্দীগ্রামের মানুষও সেবাশ্রয় চাইলেন, তখন উনি সেটাকেও কপি করে স্বাস্থ্যশিবির করলেন। চারবছর ধরে বিধায়ক রয়েছেন গদ্দার অধিকারী, এতদিন কেন করেননি?

