প্রতিবেদন : নোংরামি আর মিথ্যাচারের রাজনীতি করছে বিজেপি। সকাল থেকে রাত শুধু মিথ্যা বিজ্ঞাপন আর জুমলাবাজি। এবার ধর্মগ্রন্থ নিয়েও নোংরা মিথ্যা খেলা শুরু করল বিজেপি। তার সঙ্গে চলছে মোদি সরকারের এজেন্সি-রাজ। এবার এই বিজেপিকে তাড়াতে হবে দেশ থেকে। সোমবার কলকাতা উত্তরের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে বড়বাজারের সত্যনারায়ণ পার্কের জনসভা থেকে বিজেপিকে উপড়ে ফেলার ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Supremo Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, আমরা যদি ৩৪ বছরের সিপিএমকে উপড়ে ফেলতে পারি, বিজেপিকেও উপড়ে ফেলতে পারব। এরপরই প্রচারমঞ্চ থেকে তিনি ডাক দেন, বিজেপিকে হটান, দেশ বাঁচান। দেশে সিএএ-এনআরসি-ইউসিসি করে ওরা মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে চায়। এবার ওদের হটিয়ে দিন। ইন্ডিয়ায় এবার ইন্ডিয়ার সরকার গড়ব আমরা।
পাশে আছি : এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Supremo Mamata Banerjee) বলেন, আমি জানি প্রবল দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তরা চিন্তায় আছেন। কেউ চিন্তা করবেন না। আমরা আপনাদের পাশে আছি, রাজ্যের প্রশাসন আপনাদের পাশে আছে। প্রতি বছর আমাদের এই ধরনের দুর্যোগ ফেস করতে হয়। দুর্যোগের মধ্যেও নির্বাচনী প্রচার করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। কারণ ইলেকশন কমিশন মোদিবাবু ও বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে তিন মাস ধরে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট তৈরি করেছে। দুর্যোগ চলছে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মনিটরিং টিমের সঙ্গে থেকে কাজ করছিলাম দুর্যোগের মোকাবিলায়। তারপর আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।
নোংরা খেলা : মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। ভোট এলেই বিজেপি বিভাজনের খেলা শুরু করে। এটা রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের বাংলা, বিবেকানন্দ-নেতাজির বাংলা। বাংলা বিভাজন চায় না। বেঙ্গলি-নন বেঙ্গলি বিভাজন করে ভোট কাটাকাটির খেলা চালায়। তাঁর সাফ কথা, আমরা কখনও বলি না কোরান, পুরাণ, বেদ, মহাভারত খতম করে দেওয়ার কথা। এসব আমার কাজ নয়, আমার কাজ উন্নয়ন করা। বিজেপি মিথ্যাচার করে আমার উপর আরোপ লাগাচ্ছে। টাকা ছড়িয়ে নোংরা খেলা চালাচ্ছে বিজেপি। আর সিপিএম ও কংগ্রেস তাদের সাহায্য করছে। আমাদের এখানে রাজস্থানি, গুজরাটি, বিহারি সবাই একসঙ্গে থাকেন। আমরা সবাই মিলেমিশে থাকি। আমাদের উপর মিথ্যা দোষারোপ করলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না।
মোদি আর ফিরছে না : তৃণমূলনেত্রীর কথায়, বাংলায় বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেস আর সিপিএম মিলে মিথ্যচার করছে। কলকাতা উত্তরের এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী ভোট কাটাকাটি করবেন। তৃণমূল এখানে একা লড়াই করছে। বাংলায় কংগ্রেস আর সিপিএমের সঙ্গে আমাদের কোনও জোট নেই। দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটে আমরা আছি। এই জোট আমরা তৈরি করেছি। জেনে রাখুন, বিজেপি এবার ২০০ আসনও পাবে না। মোদি আর ফিরছে না। আমরা ইন্ডিয়া জোটকে ক্ষমতায় নিয়ে আসব।
আরও পড়ুন- আগামিকাল আকাশপথে মুখ্যমন্ত্রী দেখবেন দুর্গত এলাকার পরিস্থিতি
তৃণমূল ছাড়া ইন্ডিয়া নয় : তাঁর স্পষ্ট বার্তা, আপনারা যদি বিজেপির সরকারকে পরিবর্তন করতে চান, তাহলে জেনে রাখুন— তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া ইন্ডিয়া জোটের সরকার হবে না। সিপিএম ও কংগ্রেস এখানে চাইছে তৃণমূলের ভোট কেটে বিজেপিকে জেতাতে। সেই জন্য আমার আবেদন, তৃণমূলের ওপর রাগ করে কংগ্রেসকে ভোট দেবেন না। বিজেপি এখানেও ভোট বিভাজনের তাস খেলছে।
রয়্যাল বেঙ্গলের মতো : এদিন বড় বাজারের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার সময় কোনও নেতা আসেনি, আমি আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আমি এসে দেখলাম, সব শুনশান, বন্ধ। এশিয়ার সব থেকে বড় বাজার বন্ধ হয়ে রয়েছে। করোনায় কেউ কাজ করতে চাইছিলেন না। পুলিশকে ডেকে প্রশাসনকে নিয়ে যা যা দরকার করে দিয়েছি, পোস্তা বাজার চালু করেছি। নোটবন্দির সময় জিএসটির নামে আপনাদের উপর অত্যাচার হয়েছে। আমি আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। তাই ভয় পাবেন না, আমরা রয়্যাল বেঙ্গলের মতো লড়াই করব। আমরা লড়ব, আমরা জিতব।
অর্থনীতি খতম করেছে : মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপি মুখে যতই অর্থনীতির কথা বলুক, দেশের অর্থনীতি খতম করে দিয়েছে মোদি সরকার। আমাদের কাছে খবর আছে, বিজেপি যে শেয়ার বাজারে টাকা লগ্নির কথা বলছে, ওরা আসলে আপনাদের টাকা নিয়ে শেয়ার বাজার চাঙ্গা রাখতে চাইছে। কিন্তু নির্বাচনের পর ওরা যাবে কোথায়? বিজেপি জিতবে না।
ইন্ডিয়ার বৈঠক : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফ কথা, মোদি সরকারের বিদায় নেওয়ার সম্ভাবনা এবার প্রবল। এবার ইন্ডিয়া সরকার গড়বে। তাই ইন্ডিয়া টিম ১ তারিখেই বৈঠক ডেকে দিয়েছে। আমি বললাম, ওইদিন বাংলায় ৯টি আসনে নির্বাচন রয়েছে। উত্তরপ্রদেশেও নির্বাচন রয়েছে। অখিলেশও ব্যস্ত থাকবে। আমরা নির্বাচন মিটলেই বৈঠকে বসব।