কুণাল ঘোষ: কোর্টের নির্দেশে ৫০০ লোক আর পুলিশ দিয়েছে দু’হাজার! আজ এখান থেকে বলে যাচ্ছি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ শোনার পর এই দু’হাজার পুলিশের পরিবারের প্রত্যেক সদস্য আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকেই ভোট দেবেন। মিলিয়ে নেবেন তখন। এই রাজ্যে চূড়ান্ত অপশাসন চালাচ্ছে বিজেপি। ১০ হাজার ৩২৩ শিক্ষককে ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাঁদের দাবি মানবিকভাবে দেখা হবে। আর ভোট মিটতেই সেইসব শিক্ষকদের ছাঁটাই করে ফেলেছে এরা। ভোটে কাজে লাগিয়ে তারপর ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। এই হচ্ছে বিজেপি। এখানে অভিষেকের সভা আটকাতে মরিয়া হয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র হয়েছে। ১৪৪ ধারা লাগু করে আটকানোর চেষ্টা হয়েছে। এই প্রথম কোনও সভা করতে আমাদের কর্মীদের রাতে ফোন করে জানাতে হচ্ছে, লোক আনবেন না আপনারা। অনেক বেশি মানুষের জমায়েত করার ক্ষমতা আছে আমাদের, কিন্তু আদালতের নির্দেশকে মান্যতা দিয়েই মানুষকে সভায় আসতে বারণ করতে হয়েছে। ত্রিপুরার মানুষ পরিবর্তন চাইছেন। এ রাজ্যের কংগ্রেস ও সিপিএম সমর্থকদের বলছি, আপনারা মিছিল করুন, মিটিং করুন, নিজেদের নীতি-আদর্শ নিয়ে থাকুন, কিন্তু ভোটটা তৃণমূল কংগ্রেসকেই দিন। কারণ বিজেপিকে রোখার ক্ষমতা এখন নেই এই কংগ্রেস-সিপিএমের। ত্রিপুরায় বিপ্লব দেবকে উৎখাত করতে ভোট তাই তৃণমূলকেই দিন। ভিক্ষা নয় চাইছি ঋণ, জোড়া ফুলে ছাপ দিন। অভিষেকের নাম শুনলে হাঁটু কাঁপছে সরকারের। সাতসকালে হোটেলে হোটেলে ঢুকে হেনস্তা করেছে পুলিশ। ত্রিপুরায় যে আইনশৃঙ্খলা নেই, তা কোর্টেই সরকারপক্ষ স্বীকার করে নিয়েছে। পুলিশের এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে আমরা নিয়মমাফিক সভা করার আবেদন জানালে তার খবর আগে বিজেপির গুন্ডাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ। এমন হতে থাকলে এবার পুলিশ নয়, কোর্টকে চিঠি দিয়ে সভা করব। তৃণমূল কংগ্রেস শান্তি ও সম্প্রীতি চায়। হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান-ইশাই-শিখ সব সম্প্রদায়ের সব মানুষের কাছে উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়াই তৃণমূলের নীতি। ‘ভারতমাতা কি জয়’ বলে বিজেপি জ্বালানি, রান্নার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে, সুদের হার কমাচ্ছে! ওদের ভয়ঙ্কর জনবিরোধী নীতিকে যাঁরা সমর্থন করছেন না তাঁরা তৃণমূলকেই ভোট দেবেন।
আরও পড়ুন-
সুবল ভৌমিক
এই লড়াই আপনার। তবে শুধু আপনারই নয়, ৪০ লক্ষ মানুষকে শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে আপনারা এসেছেন আজকের এই সভায়। বিপ্লব দেবের অপশাসনে রাজ্যে কোনও গণতন্ত্র নেই। এর আগে চারবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা আটকাতে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে গিয়েছে বিজেপি। হামলা চলেছে। নিষ্ক্রিয় থেকে পুলিশ উল্টে অপরাধীদেরই মদত দিচ্ছে। আদালতের নির্দেশে অনুমতি পাওয়া গেলেও মানুষজনকে সভায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিপ্লব দেবের ষড়যন্ত্রকে বানচাল করে আমরা জয়ী হয়েছি। লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। এই লড়াই এবার সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়বে। ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় রাজ্য সরকার গড়বে তৃণমূল কংগ্রেস। কোনও রক্তচক্ষুই আর আমাদের আটকাতে পারবে না।
সুস্মিতা দেব
এই সভাতে ১০ হাজার মানুষের আমন্ত্রণ ছিল। তবে ত্রিপুরা পুলিশ এমন পরিস্থিতি তৈরি করল যে লোকসংখ্যা কমাতে হল। পুলিশ যাঁদের বাইরে আটকে দিয়েছে তাঁদের কাছে আমরা ক্ষমা চাইছি। চিন্তা করবেন না, আবার সভা হবে। বিপ্লব দেব কোনও কৌশলেই আমাদের আটকাতে পারবে না। আমার মনে আছে ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার আগে একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিল। ওরা বলেছিল প্রতিটি বাড়িতে একজন করে চাকরি পাবে। গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা পাবে। বাড়ির মেয়েদের জন্য সরকার কোনও প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। ত্রিপুরার লড়াইয়ের ময়দানে সিপিএম-কংগ্রেস নেই, আছে একমাত্র তৃণমূল। বিজেপির এই গুন্ডারাজের যথাযোগ্য জবাব ত্রিপুরার মানুষ দেবে, ২৩-এর নির্বাচনে বিপ্লব দেবকে উৎখাত করে।
শান্তনু সেন
গোটা রাজ্য জুড়ে বিজেপির গুন্ডারাজ চলছে। তৃণমূল নেতৃত্বের উপর লাগাতার হামলা চালানো হচ্ছে। মেরে মৃত্যুর মুখে পাঠিয়ে দিতে পারে, অথচ চিকিৎসাটুকুও দিতে পারে না এরা। অযোগ্য প্রশাসন, চারদিকে শুধু অনুন্নয়ন। একটা রাজনৈতিক দলের কাজ শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপ্লব করা আর অবিরাম মিথ্যা ও কুৎসা প্রচার করা। বিজেপির মন্ত্রী দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে শান্তিতে পুজো দিতে পারেন অথচ ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিতে গেলে তেরোবার হামলার শিকার হতে হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মানুষ সব দেখছে। সব বুঝতে পারছে। ত্রিপুরার মানুষ তৈরি হয়ে আছে। আর বেশি দিনের অপেক্ষা নয়। ত্রিপুরাবাসীই বিপ্লব করে এই বিপ্লব দেবকে সরিয়ে দেবে। আমরা মানুষকে নিয়েই রাজ্যে তৃণমূলের নেতৃত্বে প্রকৃত উন্নয়নের সরকার গড়ব।
আশিসলাল সিং
ত্রিপুরার গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। রাজ্যে গণতন্ত্র ফেরাতে একমাত্র বিকল্প মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসই। ত্রিপুরায় তৃণমূলের নেতৃত্বে একদিকে গণতন্ত্র ফিরবে, অন্যদিকে উন্নয়নের জোয়ার বইবে।
বাপটু চক্রবর্তী
ছাত্র-যুবদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে এই বিপ্লব দেব সরকার। এদের ত্রিপুরার মাটি থেকে সমূলে উপড়ে ফেলতে হবে। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসে ত্রিপুরায় গুন্ডারাজ কায়েম করেছে বিজেপি।
দেবব্রত দেব রায়
ত্রিপুরার সরল সাদাসিধে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভাঁওতা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন বিপ্লব দেব। কোনও প্রতিশ্রুতি রাখেননি তিনি। এবার বিপ্লব দেব সরকারকে উৎখাত করতে হবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তৈরি তৃণমূল।
শর্মিষ্ঠা দেব সরকার
বাংলার তৃণমূল সরকার মহিলাদের জন্য কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেছে। আর এখানে ত্রিপুরার মহিলারা বঞ্চিত। তাই এবার
মহিলাদের উন্নয়নে তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ইদ্রিস মিঞা
এই বিজেপি আর চলবে না। এই দল বিভেদকামী। ধর্মের ভিত্তিতে এরা মানুষে-মানুষে বিভাজন ঘটায়। তৃণমূল কংগ্রেস শান্তি ও সৌহার্দ্যের নীতিতে বিশ্বাস করে। মানুষে-মানুষে কখনও ভাগাভাগি করে না তৃণমূল। সম্প্রীতি রক্ষা করে সব মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে ত্রিপুরায় তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের লড়াই লাগাতার চলবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়েই এগোচ্ছি আমরা।
সুদীপ রাহা
এই লড়াই ত্রিপুরার মাটি বাঁচানোর লড়াই। পদ্মকে উপড়ে ফেলে দেওয়ার লড়াই। ২৩-এ ত্রিপুরাতে সেমিফাইনাল আর ২৪-এ দিল্লিতে ফাইনাল। বিজেপি দেশভক্তির কথা বলে। সত্যিই যদি এরা ভারতমাতাকে ভালবাসত তাহলে মায়ের গায়ের অলঙ্কার রেল, এয়ার ইন্ডিয়ার মতো সরকারি সংস্থাগুলিকে বিক্রি করে দিত না। মোদি-শাহ আসলে কুলাঙ্গার।
জয়া দত্ত
আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা বানচালের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত সত্যের পক্ষে রায় দিয়েছে। তাও আমাদের কর্মী-সমর্থকদের সভায় আসতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এভাবে তৃণমূলকে আটকে রাখা যাবে না। যতই হেনস্তা হোক, যত হামলাই নেমে আসুক, আমরা আমাদের লক্ষ্য থেকে সরব না। ত্রিপুরায় আগামী দিনে তৃণমূলেরই সরকার।