প্রতিবেদন : রাজ্যপালের (Governor) সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ফের গর্জে উঠলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। তা না হলে বাংলার কথা বলবেন বলে রাজ্যপাল মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে ফোন করলেও তিনি ধরেননি। এটা দুর্ভাগ্যজনক ছাড়া আর কী হতে পারে। বুধবার সন্ধ্যায় রাজভবনের গেটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তুলোধোনা করেছেন বাংলা-বিরোধী বিজেপির ঘৃণ্য প্রতিহিংসার রাজনীতিকে।
অসমে হ্যাঁ, বাংলায় না : বাংলাকে বিহু উৎসবের জন্য অসম সরকারকে টাকা দেওয়ার অনুমতি দিলেও বাংলায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষদের বাড়ি তৈরির জন্য অনুমতি দিল না নির্বাচন কমিশন। বিষয়টি ব্যখ্যা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, অসম সরকারকে বিহু উৎসবের জন্য টাকা দেওয়ার অনুমতি দেওয়ায় আমাদের কোনও আপত্তি নেই সবধর্মের সব উৎসবই আমাদের কাছে সমান। কিন্তু বাংলায় উৎসবের জন্য নয়, অনুমতি চাওয়া হয়েছিল ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষদের মাথার উপর ছাদ তৈরির জন্য। রাজ্য সরকারই ১৬০০ পরিবারের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেবে। নির্বাচন কমিশন শুধু অনুমতি দিত। কারণ আদর্শ আচরণবিধি চলছে। বুধবার দুপুরে রাজ্য সরকারকে এই অনুমতি না দেওয়ার কথা চিঠিতে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
১৬০০ পরিবারের সঙ্গে দেখা : আগামী শুক্রবার ধূপগুড়িতে কর্মসূচি রয়েছে অভিষেকের। এদিন তিনি জানিয়েছেন, ওই কর্মসূচির পর ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১৬০০ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। সঙ্গে থাকবেন ১০ সদস্যের তৃণমূল প্রতিনিধি দল যারা দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়েছিলেন অভিযোগ নিয়ে। তাদের চরম হেনস্থা করা হয় পুলিশ দিয়ে। বাংলার মানুষের কাছে তাঁরা সে-কথা বলবেন।
আরও পড়ুন-চোর ভাঙল সিসিটিভি, দিনভর বিজেপির নাটক-কুৎসা, জবাব দিল তৃণমূল
রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ : নির্বাচন কমিশনের ন্যক্কারজনক ভূমিকা ও বিজেপির এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের রাজনীতি নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবে তৃণমূল প্রতিনিধি দল।
সুপ্রিম দ্বারে : এনআইএর এসপি ধনরাম সিংয়ের সঙ্গে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির ষড়যন্ত্রের বৈঠকের খবর আমরা ফাঁস করে দিয়েছি। আমাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে, আইনি নোটিশ পাঠানো হবে! কোথায় সেসব! আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব এই বিষয়টি নিয়ে। প্রয়োজনে ভিডিও ফুটেজ জমা দেব।
বিষয় ‘বেলুড়ঘাট’ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বালুরঘাটকে বলছেন বেলুড়ঘাট! এই তো ওদের কৃষ্টি সংস্কৃতির বহর। বাংলার যে জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলছে সেই জায়গার নামটুকু পর্যন্ত উচ্চারণ করতে পারেন না। উনি না হয় গুজরাত থেকে এসেছেন। কিন্তু রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুদারের সাহস হল না অমিত শাহকে বলার যে আপনি ভুল বলছেন! বললেই তো চাকরি যাবে। এঁরা কি বাংলার মানুষের জন্য ভাবে?
শ্বেতপত্র কোথায় : প্রধানমন্ত্রী বাংলায় এসে বলছেন আবাসের টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তাঁকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করে জানাতে বলেছিলাম— কত টাকা আবাসের বাড়ি তৈরির জন্য দিয়েছেন? যদি ১০ পয়সা দিয়ে থাকে তবে রাজনীতি ছেড়ে দেব। আগেও বলেছি এখনও বলছি। ২৭ দিন হয়ে গিয়েছে কোথায় শ্বেতপত্র।
প্রসঙ্গ ডায়মন্ড হারবার : ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি এখনও প্রার্থী দিতে পারেনি। খুঁজে বেড়াচ্ছে। একজন প্রার্থী, তাই দিতে পারছে না। এরা আবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় কত কথা বলেছিল। ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে তো কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই ভোট হয়েছে। প্রতি ভোটে আমাদের জয়ের ব্যবধান বেড়েছে।
শপথে বাধা : মমতাবালা ঠাকুর রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে বুধবার শপথ নিয়েছেন। রীতি অনুযায়ী শপথ গ্রহণের সময় ঈশ্বরের নামে শপথ করতে হয়। তিনি তাঁদের ঈশ্বর (মতুয়া সমাজের) হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে শপথ নিচ্ছিলেন। তা বন্ধ করে দেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়। এই তো ওদের আচার-আচরণ। এরা আবার মতুয়াদের ভালবাসার কথা, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলে। বাংলার মানুষ সব দেখছেন তাঁরাই এর উত্তর দেবেন।