নয়াদিল্লি : সংসদের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে সরকারের সমালোচনায় অগ্রণী ভূমিকা নেবে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC- Parliament)। আজ থেকে দ্বিতীয় দফায় শুরু হচ্ছে সংসদের বাজেট অধিবেশন। চলবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। তৃণমূলের সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সাধারণ সম্পাদক ও লোকসভার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের মধ্যে একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সংসদে তৃণমূল কংগ্রেস যথাসম্ভব তুলে ধরবে সাধারণ মানুষের স্বার্থবাহী ইস্যুগুলি। সেইসঙ্গে সরব হবে বাংলাকে প্রাপ্য বকেয়া না দিয়ে বঙ্গবাসীকে বঞ্চনা করার বিরুদ্ধে। সোমবার থেকে শুরু হতে চলা অধিবেশনের সুর বেঁধে দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলের সংসদীয় কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলি নিয়ে সংসদের দুই কক্ষে নোটিশ দিতে শুরু করেছেন তৃণমূল সাংসদরা। এরপর সংসদের ভিতরে সেই সমস্ত ইস্যুগুলি তুলে ধরা হবে দলের তরফে। একইসঙ্গে লোকসভা ও রাজ্যসভার মধ্যে প্রয়োজনীয় ফ্লোর কোঅর্ডিনেশনের মাধ্যমে কর্মসূচি পালন করবে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC- Parliament)। এবারের অধিবেশনে সংসদের বাইরেও একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের।
আরও পড়ুন: কর্নাটকে কি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে?
দলের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই অধিবেশনে প্রধান ইস্যু হবে এলআইসি এবং এসবিআইয়ের বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তা নিয়ে। আদানি কেলেঙ্কারিতে এই দুই সংস্থায় রাখা সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত টাকা যেভাবে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে তার জবাব চাওয়া হবে। লিখিত ও মৌখিক প্রশ্ন ছাড়াও বক্তব্য রাখার সুযোগ এলেই এই বিষয়টি তুলে ধরা হবে। রান্নার গ্যাস সহ অত্যাবশ্যক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ইস্যুতেও সরব হবে দল। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বারবার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করার অভিযোগ করেছে তৃণমূল সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি। রাজনৈতিক কারণে মোদি সরকার কীভাবে বাংলাকে অর্থনৈতিকভাবে অবরুদ্ধ করতে চাইছে তা তুলে ধরবেন দলীয় সাংসদরা।
তৃণমূলের অভিযোগ, একশো দিনের কাজ, গ্রাম সড়ক যোজনার মতো প্রকল্পগুলির টাকা বকেয়া রেখে রাজ্যবাসীর প্রতি চরম বৈষম্য দেখাচ্ছে কেন্দ্র। এর পাশাপাশি সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতরের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার অভিযোগও সংসদে তুলবে তৃণমূল। বেছে বেছে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচকদের পিছনে কেন্দ্রীয় এজেন্সি লাগিয়ে তাঁদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ তুলে সংসদে সরব হবেন তৃণমূল সাংসদরা। পাশাপাশি তৃণমূলের সংসদীয় অ্যাজেন্ডায় রয়েছে কর্মসংস্থান, আন্তর্জাতিক সীমান্তে নজরদারির ইস্যু। দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন জানিয়েছেন, এই সমস্ত ইস্যুগুলি তৃণমূলের একার নয়। অন্যান্য দলগুলিরও এই ইস্যুগুলি রয়েছে। ফলে, এই বিষয়টিগুলি নিয়ে সংসদে অন্যান্য বিরোধী দলগুলির সমর্থন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তৃণমূল। লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের পার্লামেন্টারি পার্টির চেয়ারপার্সন সাতবারের সংসদ। উনি স্ট্র্যাটেজিটা খুব ভালই বোঝেন। তাঁর পরামর্শেই দুই কক্ষে তৃণমূল কংগ্রেস কাজ করবে।