নয়াদিল্লি : এয়ার ইন্ডিয়ার পথ ধরে দেশে একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারীকরণের যে ঝড় উঠেছে তা এবার ব্যাঙ্কিং সেক্টরেও আছড়ে পড়তে চলেছে। গত ফেব্রুয়ারিতেই সংসদে ব্যাঙ্কিং সেক্টরে বড় ধাক্কার পূর্বাভাস দিয়েছিল কেন্দ্র। ২০২১-’২২ সালের সাধারণ বাজেটে দেশের কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের কথা ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। বেসরকারীকরণের জন্য নীতি আয়োগের প্রস্তাব মেনে প্রাথমিকভাবে চারটি মাঝারি মাপের ব্যাঙ্ককে বেছে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। যে চারটি ব্যাঙ্ককে বেসরকারীকরণের জন্য প্রাথমিক তালিকায় রাখা হয়েছিল, সেগুলি হল ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক এবং সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। নীতি আয়োগ প্রস্তাব দিয়েছিল, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে পুরোপুরি বিক্রি করে দেওয়া হোক। আর ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক এবং সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার অধিকাংশ শেয়ার বিক্রি করা হোক। ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের এই পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র বিরোধিতা শুরু হয় সর্বস্তরে। কড়া প্রতিবাদ জানায় তৃণমূল কংগ্রেস। চাপের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার তখন কিছুটা ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করে। সংসদের বাদল অধিবেশনে বিনা আলোচনায় বিল পাশ করিয়ে ব্যাঙ্কের পরিবর্তে বিমাক্ষেত্রকে পুরোপুরি বেসরকারীকরণের পদক্ষেপ করে সরকার।
আরও পড়ুন : আরিয়ানকাণ্ডে গ্রেফতারের শঙ্কা এনসিবি-কর্তা সমীরের
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক সূত্রের খবর, এর পর এবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে মোদি সরকার। এজন্য ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যাঙ্কিং কোম্পানিজ (অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ট্রান্সফার অব আন্ডারটেকিংস) অ্যাক্ট, ১৯৭০ এবং ব্যাঙ্কিং কোম্পানিজ (অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ট্রান্সফার অব আন্ডারটেকিংস) অ্যাক্ট, ১৯৮০-র সংশোধনী আনার প্রস্তুতি শুরু করেছে মোদি সরকার। আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে ওই সংশোধনী পেশ হওয়ার কথা। কেন্দ্রের এই পরিকল্পনা সামনে আসতেই আগে থেকে প্রতিবাদ ও বিরোধিতার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের লোকসভার বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, বিজেপি সরকার আগেই ঘোষণা করেছিল ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণ করবে। আমরা এর বিরুদ্ধে। ব্যাঙ্ক কর্মীদের সংগঠনগুলিও বেসরকারীকরণের বিরোধিতা করেছে। সরকার সংসদে কোনও বিল পেশ করলে আমরা তার তীব্র বিরোধিতা করব। সংসদের ভিতরে প্রতিবাদ এবং বাইরে এই নীতির বিরোধিতায় জনমত গড়ে তোলা হবে।