চাকরিখেকো বিকাশবাবু! আপনাকে বলছি

বিকাশবাবুর তথাকথিত ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়ায় ১৭ হাজারের বেশি নির্দোষ প্রার্থীর চাকরি গিয়েছে। সে দায় কার? এই প্রশ্নের উত্তরের অন্বেষণে ডাঃ বৈদ্যনাথ ঘোষ দস্তিদার

Must read

আপনার সাম্প্রতিকতম বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, আপনি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগের জাল বুনেছেন। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণকে আপনি ‘ঘৃণ্য অপপ্রচার’ বলে অভিহিত করেছেন, কিন্তু আমরা বলি এটি ছিল জনগণের প্রতি তাঁর স্বচ্ছতা ও প্রকাশ। তিনি কখনওই সত্যকে গোপন করেননি, বরং SSC নিয়োগে উদ্ভূত জটিল পরিস্থিতির বাস্তব চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন।

আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর জনহিতকর প্রকল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন স্বাস্থ্যসেবায়

আপনি SSC নিয়োগেেে দুর্নীতির প্রসঙ্গে যে পরিসংখ্যান দিয়েছেন, তা সুপ্রিম কোর্টের রায়েরই একটি অংশ। আমরা অস্বীকার করছি না যে নিয়োেগ প্রক্রিয়ায় সমস্যা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল এর জন্য দায়ী কে? আদালতের নির্দেশে ২৫,৩২৭ জনের চাকরি বাতিল হয়েছ, এটা কি আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে করেছি? একজন আইনজীবী হিসেবে আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, আদালতের নির্দেশ মানতে আমরা বাধ্য। তবুও, যারা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে তৃণমূল সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। দোষীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তদন্ত চলছে এবং আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে স্বচ্ছতার সঙ্গে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আপনি দাবি করেছেন যে, আপনি ও আপনার টিম চাকরি হারানো প্রার্থীদের পক্ষে লড়েছেন। কিন্তু এই লড়াইয়ের পরিণতি কী হয়েছে? আপনার তথাকথিত ‘ন্যায়বিচারের’ প্রচেষ্টায় আজ ১৭,০০৩ জন নির্দোষ প্রার্থীও চাকরি হারিয়েছেন। এই দায় কি আপনি এড়িয়ে যেতে পারেন? তৃণমূল সরকার চাকরি দেওয়ার জন্য নিরন্তর কাজ করে গেছে ২০১১ সাল থেকে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীকে কর্মসংস্থান দিয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল প্রতিটি যোগ্য প্রার্থী যেন সুযোগ পান, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আইনি জটিলতা ও কিছু অসাধু ব্যক্তির কারসাজির কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
আপনি প্রশ্ন তুলেছেন কে SSCকে ‘ঘুষের কারখানা’ বানিয়েছে? আমর বলি, এর উত্তর খুঁজতে হলে অতীতের দিকে তাকান। তৃণমূলের আগে যারা রাজ্য শাসন করেছে, তারা শিক্ষাব্যবস্থাকে কীভাবে ধ্বংস করেছিল, তা জনগণ ভোলেনি। আমরা সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের জন্য লড়াই করছি। আপনার অভিযোেগ যে আমরা তথ্য গোপন করেছি— তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সরকার আদালতকে সমস্ত তথ্য সরবরাহ করেছে, এবং তদন্তে সহযোগিতা করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর আপনি যে দায় চাপাতে চাইছেন, তা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি দিনরাত রাজ্যের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন-চাকরি হারানো প্রার্থীদের জন্যও তিনি বিকল্প পথ খুঁজছেন। আপনার ‘চাকরি রক্ষাকারী সৈনিক’ হওয়ার দাবি রাজনৈতিক মঞ্চে হয়তো জনপ্রিয়তা পেতে পারে, কিন্তু বাস্তবে এটি শুধুই অভিযোগের পাহাড়।
তৃণমূল কংগ্রেস জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী। যারা দোষী, তারা শাস্তি পাবে— কিন্তু এই ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়ে নির্দোষ যুবক-যুবতীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলবেন না। আমরা আহ্বান জানাই-আসুন, সমাধানের পথে একসঙ্গে কাজ করি, অপপ্রচারে নয়।

Latest article