প্রতিবেদন : ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে উত্তেজনা তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছে ওপার বাংলার রাজনৈতিক দলগুলি। অবশ্য সেই উসকানিতে কান দিচ্ছে না নয়াদিল্লি। শান্তির বার্তা দিতে ঢাকার সঙ্গে আলোচনার জন্য সোমবারই বাংলাদেশ যাচ্ছেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রি। দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী যৌথ প্রদর্শনও চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন-আজ ঋতব্রতর মনোনয়ন পেশ
বাংলাদেশের তরফে গত কয়েকদিন ধরে দাবি করা হচ্ছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খারাপের দায় কেবলই ভারতের। অথচ প্রায় প্রতিদিনই সে দেশের মাটিতে ভারত-বিদ্বেষী উসকানিমূলক মন্তব্য করা হচ্ছে। প্রাক্তন সেনাপ্রধানদের মিছিল থেকে চারদিনের মধ্যে কলকাতা দখলের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি সেনার ক্ষমতা প্রদর্শনেরও হুঁশিয়ারি দিয়ে ভারতে তৈরি বস্ত্রও পোড়ানো হয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভির নেতৃত্বে। তারপরই তিনি ভারতের তিন রাজ্য বাংলা, বিহার, ওড়িশা দখল করার আজব দাবিও করেন। এই জাতীয় উসকানিমূলক কাণ্ডের পরও নীরব ইউনুস সরকার। ফলে আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সে দেশের মৌলবাদী সংগঠনগুলি। ভারতের ইসকনের তরফে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সেখানকার ইসলামি ও মৌলবাদীরা ইসকনকে বাংলাদেশ নিষিদ্ধ করার ডাক দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, ইসকনকে নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারকে রীতিমতো ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছে মৌলবাদীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মৌলবাদীরা হুমকির সুরে ইউনুস সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছে, ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে চিন্ময় দাসের মুক্তির আবেদন জানানো হয়েছে, ঠিক তখনই রবিবার ফের চিন্ময় দাস-সহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়ের হয়েছে।
আরও পড়ুন-মোদির এবার পেনশনে ধাপ্পা
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেই সোমবার বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রির বাংলাদেশ সচিবের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেখানেও যে খুব একটা কড়া বার্তা ভারতের তরফ থেকে দেওয়া হবে না, শনিবারই তার প্রমাণ মিলেছে। শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি সীমান্তে যৌথ প্রদর্শনী করে বিএসএফ ও বিজিবি। এক বিএসএফ আধিকারিক জানান, দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। তবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন থামার কোনও লক্ষণ নেই। বরং তা বেড়েই চলেছে। ইসকনের আরও একটি মন্দিরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় মৌলবাদীরা। এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে কলকাতায় ইসকনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস বলেছেন, এটা খুবই ভয়ঙ্কর। এখন ডেডলাইন বেঁধে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার কথা বলা হচ্ছে, সে দেশের সরকারকে। সরকার যদি এখনই এই সব লোকেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আগামীতে আরও ভয়ঙ্কর দিন আসতে চলেছে। সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ইউনুস সরকারকে রাজধর্ম পালনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের অবদানের কথা মনে রাখতে হবে।