মিতা নন্দী, ঝাড়গ্রাম: বিশ্ব আদিবাসী দিবসে আদিবাসী উন্নয়নে কল্পতরু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরা স্টেডিয়ামে ছিল বিশ্ব আদিবাসী দিবস পালনের অনুষ্ঠান। উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসী শিল্পীদের সঙ্গে যেমন নাচের তালে পা মেলান, তেমনই ধামসা-খঞ্জনি বাজিয়ে অনুষ্ঠানকে বর্ণময় করে তোলেন।
আরও পড়ুন-ব্যান্ড বাজিয়ে শহিদ তর্পণ করল বিজেপি!
এদিন বেশ কয়েকজন আদিবাসী সমাজের কৃতী মানুষকে সংবর্ধনা জানান মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানেই উপস্থিত দর্শকদের মনে করিয়ে দেন যে, পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র রাজ্য, যেখানে সাঁওতালি ভাষায় পঠনপাঠন হচ্ছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সফর উপলক্ষ্যে সাজো সাজো রব ছিল ঝাড়গ্রাম-সহ গোটা জঙ্গলমহলে। প্রায় বেলা দুটো নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে ওঠেন। মমতা বলেন,‘গত তিন বছর ধরে আমরা আদিবাসী উৎসব পালন করে আসছি। সারা বাংলা জুড়ে এই অনুষ্ঠান হচ্ছে। রাজ্য সরকার থেকে যে প্রর্দশনী হচ্ছে তাতে সিধু-কানহু, বীরসা মুন্ডা, রঘুনাথ মুর্মুর মাধ্যমে সাঁওতাল বিদ্রোহের কিছুটা অংশ তুলে ধরেছি। আজ ৯ অগাস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস। এদিন গান্ধীজির নেতৃত্বে ১৯৪২ সালে ভারতছাড়ো আন্দোলন হয়েছিল। স্বাধীনতার জন্য আদিবাসী ভাইবোনেরা অনেক আন্দোলন করেছিলেন। তাঁদের সকলকে প্রণাম ও জয় জহর জানাই। ঝাড়গ্রাম, জলপাইগুড়ি, বাঁকুড়া,আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ ও উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, নদীয়া, পূর্ব মেদিনীপুর,পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এই অনুষ্ঠান হচ্ছে। আগামীদিনে আদিবাসী সমাজ আরও এগিয়ে যাবে। আমি নিজে আদিবাসী অলচিকি ভাষায় বই লিখেছি।’
আরও পড়ুন-জিতবে ত্রিপুরা: এবার ত্রিপুরার পরে তৃণমূল কংগ্রেসের নয়া স্লোগান
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন,‘ঝাড়গ্রাম জেলার ৯৫ শতাংশ মানুষকে কিছু না কিছু পরিষেবা দিয়েছি। ঝাড়গ্রামকে নতুন জেলা করেছি। ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল। রাজ্যে মোট ২৪টি মেডিক্যাল কলেজের মধ্যে ১৪টা নতুন হচ্ছে। তিনটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ঝাড়গ্রাম, নয়াগ্রাম আর গোপীবল্লভপুরে হয়েছে। রাজ্যে ৪২টি। ঝাড়গ্রামে সাধুরাম চাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হচ্ছে। যিনি অনেক শিক্ষা দিয়েছিলেন। ঝাড়গ্রাম জেলায় চারটি নতুন কলেজ করে দেওয়া হয়েছে। ঝাড়গ্রাম, নয়াগ্রাম, লালগড় ও গোপীবল্লভপুরে। একশো শতাংশ বৈদ্যুতীকরণ করা হয়েছে। ঝাড়গ্রামে যাঁরা মাওবাদী হামলায় মারা গিয়েছিলেন বা নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের একজন করে স্পেশাল হোমগার্ডে চাকরি দেওয়া হয়েছে এবং ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে। সুবর্ণরেখা নদীর ওপর জঙ্গলকন্যা সেতু ও লালগড়ে আমকলায় কংসাবতী নদীর ওপর সেতু আমরা তৈরি করেছি। ঝাড়গ্রামে স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি হয়েছে। আমাদের সকল কাজে আপনারা আছেন।” মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন মঞ্চে ছিলেন মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া, মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো প্রমুখ। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তার হাতে অনুমোদনপত্র তুলে দেন। জানান, আরও দেড় হাজার পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ হবে।