আজ চিন্তা করার দিন

দুশ্চিন্তা দূরে সরিয়ে আজ ‘বিশ্ব চিন্তা দিবস’। ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সৌভ্রাতৃত্ব এবং বন্ধুত্বের দিন। পরস্পরকে নিয়ে চিন্তা করার দিন। ১৯২৬ সালে এই দিনটির পালন শুরু হয়েছিল এক ভিন্ন উদ্দেশ্যে। কী ছিল সেই ইতিহাস? আসলে যাঁরা ভাবনাকাজি তাঁদের ভাবনার দৌড়টি ঠিক কেমন হয়? জানালেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

‘ভাবার কোনও শেষ নাই ভাবার চেষ্টা বৃথা তাই’ বাক্যটা এ-যুগে একেবারেই ব্যাকডেটেড। ভাবতে ভাবতে ভবাপাগলা হয়ে যাবার ট্রেন্ডি একবিংশ এটা। আগে মানুষ লুকিয়েচুরিয়ে ভাবতেন আজ স্মার্ট ভাবুকরা খোলা ময়দানে চিৎপাত হয়ে শুয়ে আকাশপাতাল ভাবেন। শতাব্দী পেরিয়ে আজ গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ভরা শুধু ভাবনাকাজির দল। বিশেষ করে মেয়েরা। গবেষণা বলছে মেয়েরা ছেলেদের থেকে অনেক বেশি ভাবেন এবং চিন্তা করেন। তার বেশিরভাগটাই নাকি অলীক, বাকিটা সাংসারিক। জীবনের জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ, কান্না-হাসি, সুখে-দুঃখে তাঁদের সেন্ট্রাল পয়েন্টে থাকে ভাবনা আর চিন্তা। আট থেকে আশি এই ডিজিটাল যুগে ভাবনা-চিন্তা বেচে রোজগারও করে ফেলছে। যার ভাবনা যত বেশি ইউনিক তাঁর তত ফলোয়ার্স, যার চিন্তা যত বেশি তাঁর তত ভিউয়ার্স। কাঁদতে কাঁদতেও মানুষ এখন ভেবে ফেলেন! যে-মুদির বেচার ভাবনা যত অভিনব তার কেনার খদ্দের তত বেশি। তাই ভাবের ঘরে আর চুরি করার উপায় নেই, করলে সোজা আইনের আওতায়। আমি বলছি কনটেন্টের কথা। কনটেন্ট ক্রিয়েটিং-এর যুগে ভাবনাই আসল। চিঁড়ে ভেজানোর মতো সাধারণ বিষয়কেও ইনোভেটিভ ভাবনার দৌড়ে অসাধারণ করে তুলছে মানুষজন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভাবনা আর চিন্তা পিঠোপিঠি ভাই-বোন। একজন এলে সুতোর টানে অন্যজনও হাজির হয়। আর চিন্তার পরেই আসে দুশ্চিন্তা! তাই চিন্তার বাড়বাড়ন্ত না-হোক এটাই বলছেন তাঁরা।
তবে সব ভাবনা এবং চিন্তার ফল দুশ্চিন্তাই হবে এমনটা নয়। বিশ্ব চিন্তা দিবস বা ওয়ার্ল্ড থিংকিং ডে আমাদের ভাল চিন্তার কথা বলে। কারণ এইদিনটা হল বিশ্ব জুড়ে সৌভ্রাতৃত্ব এবং বন্ধুত্ব উদযাপনের দিন। শুনতে একটু অদ্ভুত লাগলেও আসলে সিস্টারহুড সেলিব্রেশন-এর দিন হল ‘ওয়ার্ল্ড থিঙ্কিং ডে’। এই দিনটি বিশ্বের প্রতিটি স্কাউট মেয়েকে আরও উন্নত চিন্তা করতে, একে অপরের সঙ্গে দৃঢ় বন্ধন গড়ে তুলতে, গঠনমূলক চিন্তার মাধ্যমে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে। কী রয়েছে এই দিনের ইতিহাসে?

আরও পড়ুন-প্র্যাকটিক্যালের নম্বর জমা দেওয়ার সময় দিল সংসদ

বিশ্ব গার্ল গাইডস ও গার্ল স্কাউটস সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা লর্ড রবার্ট ব্যাডেন পাওয়েল ও বিশ্ব চিফ গাইড লেডি ওলেভ ব্যাডেন পাওয়েলের জন্মদিন হল এই ২২ ফেব্রুয়ারি। যেদিনটা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় ‘বিশ্ব চিন্তা দিবস’ বা ‘ওয়ার্ল্ড থিঙ্কিং ডে’। লর্ড ব্যাডেন-পাওয়েল ছিলেন স্কাউটিং আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। আর তাঁর স্ত্রী ওলেভ ছিলেন গার্লস গাইড আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। স্কাউট হতে ইচ্ছুক মেয়েদের জন্য এই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। আজ থেকে প্রায় ৯০ বছর আগে ১৯২৬ সালের মেয়ে স্কাউটদের কথা মাথায় রেখে বিশ্ব জুড়ে এই দিন উদযাপন শুরু হয়। তখন থেকেই দিনটা ছিল বিশ্বের গার্ল স্কাউট এবং গার্লস গাইডদের জন্য বন্ধুত্বের দিন। পরে ধীরে ধীরে এই বন্ধুত্বের ভাবনা হয়ে ওঠে সার্বিক। ১৯২৮ সালে ভারতে শুরু হয় গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের যাত্রা। শুধু ভারতে নয়, ওয়ার্ল্ড থিঙ্কিং ডে বা বিশ্ব চিন্তা দিবস পালিত হয় বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে। যার মধ্যে রয়েছে ইংল্যান্ড, মিডল্যান্ড, আলস্টার, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, পোল্যান্ড, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ইত্যাদি।
পৃথিবী জুড়ে গার্ল গাইডস এবং গার্ল স্কাউটসের মেয়েদের সংখ্যা ১০ লক্ষ। যাঁদের প্রত্যেকেরই পরিবেশ, পটভূমি, সংস্কৃতি এবং অভিজ্ঞতা ভিন্ন ভিন্ন। এই দিনে তাঁদের আরও উন্নত ভাবনা-চিন্তার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়। চিন্তা মানে জাত, ধর্ম, লিঙ্গ, বয়স নির্বিশেষের সঙ্গে সমান আচরণের চিন্তা, বন্ধুত্বের চিন্তা। ভবিষ্যতে গার্ল গাইডস এবং গার্ল স্কাউট কীভাবে এগিয়ে যাবে তা নিয়ে চিন্তা, আলাপ-আলোচনা হয়। স্কাউট মেয়েরা অন্যান্য দেশের স্কাউট মেয়েদের নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তারা সারা বিশ্বে গার্ল স্কাউটের কাজকে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রয়াসে এই দিনে অনুদান সংগ্রহ করে। ওয়ার্কশপ করে, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান করে, গ্রুপ ক্যাম্পেইন করে। তবে আজ আর এই গণ্ডিতেই দিনটা সীমাবদ্ধ নেই। সবাই আন্তর্জাতিক বন্ধুত্বের দিন হিসেবে এই দিনটি পালন করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন নিজের মনের যত দুশ্চিন্তা, খারাপ ভাবনা সব ফেলে ভাল বা পজিটিভ চিন্তা করুন এবং পরস্পরকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিন।

আরও পড়ুন-এত দ্বেষ-হিংসা, তবু ভালবাসারই জয়, মাগুরা থেকে এগরায় সঞ্চিতা

নিজের আত্মিক উন্নতির চিন্তা করি
পায়েল ঘোষ | পেরেন্টিং কনসালটেন্ট
পেরেন্টিং কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করতে গিয়ে আমাকে দিনের অনেকটা সময় বাচ্চাদের এবং তাঁদের অভিভাবকদের নিয়ে কাজ করতে হয় আর সেই কাজে সবচেয়ে বেশি যেটা করতে হয় তা হল চিন্তা। কোন চিন্তা? উল্টোদিকের মানুষটা যে কথাগুলো বলছেন তা কোন প্রেক্ষিতে বলছেন বা মনের কোন অংশ থেকে বলছেন সেই চিন্তা। তাই আমি প্রথমে আমাদের মধ্যের কথাবার্তাগুলোকে নথিবদ্ধ করি। সেটা খাতাতেও যেমন করি, মাথাতেও করি। এবার প্রত্যেকটি বক্তব্যের জায়গাটা বোঝার চেষ্টা করি, ভাবতে থাকি। এবার তার সেই চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে বর্তমান সামাজিক অবস্থানগুলোকে মিলিয়ে চেষ্টা করি সমাধান দেবার। ফলে দিনের অনেকটা সময় এগুলো নিয়ে আমাকে ভাবতেই হয়। না ভেবে আমি এতটুকু পথ চলতে পারি না। কারণ, আমাদের প্রত্যেকের দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে যখন আমরা ভাবার সুযোগ পাই না শুধুই কাজটা করি। আমারও তাই। এরপর সন্ধে থেকে আমি অনেকটা সময় ধরে রাখি যেটা আমার ননডিজিটাল টাইম। ওই সময়টা আমার ভাবনা-চিন্তার। তখন আমি ভাবি আমার কাছে যারা আসে তাদের মনকে কীভাবে ইতিবাচক করা যেতে পারে। কী কী সহজ প্রক্রিয়া রয়েছে। আর প্রকৃতির সঙ্গে কীভাবে মানুষকে যুক্ত করানো যায়। সমাজের বদল কীভাবে করা যেতে পারে ইত্যাদি। এরপর নিজের পার্সোনাল গ্রোথ নিয়ে ভাবি। আত্মিক উন্নতির চিন্তা করি। আজ নিজেকে কতটা সমৃদ্ধ করতে পারলাম। আমি কী শিখলাম। কাল হয়তো কারও সঙ্গে কঠিনভাবে কথা বলেছি আজ সেটাকে আবার ব্যালান্স করতে পারলাম কি না। অর্থাৎ সংসারে আমার নিজের ভূমিকা। কোথায় আমার ঠিক বা ভুল অর্থাৎ আমি চেষ্টা করি যাতে ইতিবাচক চিন্তাই যেন আমার সারাদিনের রসদ হয়ে ওঠে।

আমার সব ভাবনা লিখে রাখি
রেশমী মিত্র | পরিচালক
ভাবনা আর চিন্তা দুই আমার সারাদিনের সঙ্গী। তবে বেশি ভাবি রাতে। ইদানীং কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকি, একাই থাকি। সারাদিন হেকটিক শিডিউলের পর রাতে বাড়ি ফিরে দৈনন্দিন চিন্তার মধ্যে প্রথম বাড়ির চিন্তাটাই বেশি আসে। বয়স্ক শ্বশুর, স্বামী রয়েছেন কলকাতায়— তাঁদের কথা চিন্তা করি, আবার মেয়ে লন্ডনে পড়াশুনো করে— তার জন্য চিন্তা করি, আমার পোষ্য কুলপি— ওর জন্য চিন্তা হয়। এগুলো আমার সার্বিক চিন্তা। আর আমার কাজের ক্ষেত্রে আমি চিন্তার চেয়ে ভাবনা শব্দটাই ব্যবহার করব। যেমন এই মুহূর্তে আমি একটা হিন্দি ছবি করছি নাম ‘মীরা’। আরবাজ খান, অর্জুন রামপাল এবং সুস্মিতা সেনকে নিয়ে। সেই ছবির প্রত্যেক দৃশ্য আমার কাছে আলাদা ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ফলে ওইগুলো নিয়েই সারাদিন ভাবছি। আরও কীভাবে নিখুঁত করা যায়। সেটের ডিজাইন নিয়ে ভাবছি। চরিত্রগুলোকে আরও কত শেডস দেওয়া যায় সেটা ভাবছি। ডিটেলিংটা আমার কাছে খুব ম্যাটার করে ফলে ভাবতেই হয়। সব ভাবনা লিখে রাখি তারপর আর্ট ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলি। এছাড়া পরবর্তীতে যে পরিকল্পনাগুলো রয়েছে। আমার আগামী ছবির স্টোরি লাইন, স্ক্রিপট সেগুলোর ভাবনা চলতে থাকে। আমি সব সময় বাস্তবঘেঁষা জীবন থেকে গল্পের প্লট খুঁজি। লেখালেখি, পড়া, পরিকল্পনা— সবটাই রাতেই করি। আর দিনের শেষে যখন আমি বেডরুমে ঢুকি তখন আমার একান্ত নিজের সময়। আমার অনেক পুতুল আছে তাদের সঙ্গে কথা বলি। ওরা তখন যেন আমার কাছে জীবন্ত হয়ে ওঠে। ওদেরকে আমি আমার ভাবনাগুলো শেয়ার করি। আমার মেয়ে শুনে হাসে। আসলে তা নয়, সবার মধ্যেই একটা শৈশব লুকিয়ে থাকে। ওই পুতুলেরা আমার সেই শৈশবকে মনে করায়।

চিন্তাই আমার নাচের থিম হয়ে ওঠে
মমতাশঙ্কর | অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী
যদি সত্যি কথা বলি, ইদানীং আমাদের চারপাশের যা ঘটছে টিভির পর্দায় চোখ রাখলে, সোশ্যাল মিডিয়া দেখলে ভাল চিন্তা-ভাবনার চেয়ে দুশ্চিন্তাই বেশি আসে। ভাবি আমরা কোন পথে এগোচ্ছি। আবার বাস্তব সমাজের সেইসব ঘটনাই আমার শিল্পের, নাচের অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে। আমাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সেই সামাজিক সমস্যাগুলোকে নাচের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করি, নাচের মধ্যে দিয়েই সমাধান দেখানোরও চেষ্টা করি। আসলে যখনই কিছু নতুন করেছি— নাচ হোক বা অভিনয়, আমার অন্তরেই রয়েছেন এমন একজন, কোনও দৈবিক কিছু যে বা যিনি আমাকে দিয়ে সবকিছু ভাবিয়ে নিয়েছেন এবং করিয়ে নিয়েছেন। ভাবতে কেউ শেখাতে পারে না, চিন্তা করতে কেউ শেখাতে পারে না। ওটা আপনা আপনিই এসে যায়। যেমন নাচের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের প্রথম যখন নাচ শেখানো শুরু করি তখন অন্যান্য নাচের স্কুলের মতো এক, দুই, তিন করে ধাপে ধাপে কিছু শেখাই না। আমরা ওদের হাতে এক-একটা জিনিস ধরিয়ে দিই আর বলি তোমরা ভাব এবং ভেবে বের করো এর থেকে কী তৈরি করতে পারো। ওদের ভাবনাটাকে আমরা জাগিয়ে দিই। একটা গাছের পাতা হোক বা একটা সুন্দর ডিজাইন সেটা থেকেই একটা নাচ তৈরি করো। একটা বাক্স সামনে রেখে দেওয়া হল এটা থেকে একটা নাচের থিম তৈরি করো। আমার ছোটবেলায় গুরুজনদের কাছে আমি কিন্তু এটাই শিখেছি যে নিজের ভিতরের ভাবনাকে, চিন্তাকে নিজে জাগিয়ে তোলো। সারাদিন কাজে-কর্মে, স্কুলে সময় কেটে গেলেও দিনের শেষে যখন বাড়ি ফিরি বা রাতে ভাবনার দৌড়টা একটু বেড়ে যায়। তখন আমি খুব আধ্যাত্মিকতার বই পড়ি। ওই বইগুলো পড়তে পড়তে খুব ভাবি। আজকের পরিবেশ পরিস্থিতির নেগেটিভিটি যখন আমাকে খুব বেশি প্রভাবিত করে তখন তা থেকে বেরতে সেটাকেই হাতিয়ার করে নিই, ওটা নিয়েই ভাবতে থাকি। সেটাই হয়ে ওঠে আমার নাচের থিম। কারণ আমি জানি সেটা দেখে মানুষ হয় কিছু শিখবে বা মানুষ ভাববে এবং সচেতন হয়ে উঠবে।

আরও পড়ুন-সাইনবোর্ডে বাংলাভাষার ব্যবহার কতটা, যাচাই শুরু করল পুরসভা

খারাপ, ভাল দুটো চিন্তাই বেশি হয়
সোহিনী সেনগুপ্ত | নাট্যব্যক্তিত্ব
আমি খুব ভাবুক মানুষ। তবে ভাবনা বা চিন্তা দু’রকমের হয় একটা ভাল আর একটা খারাপ। আমার, দুটোই বেশিরকম হয়। যেমন চারপাশে পরিস্থিতি বিশেষ করে খারাপ কোনও ঘটনা আমার ওপর ভীষণ প্রভাব ফেলে। এতটাই প্রভাব ফেলে যে নিজের কাউন্সেলিং করাতে হয়। সচেতনভাবে আমি যদি চেষ্টা না-করি চিন্তা থেকে সরতে, মারাত্মক হতে পারে। তখন আমি ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ করি, কাজের মধ্যে ডুবিয়ে দিই নিজেকে। বাবাকে নিয়ে একটা চিন্তা হয়। নিজের দল নিয়ে, অভিনয় নিয়ে সবসময় চিন্তা করি, ভাবি। যদিও দল আর নিজের কাজ নিয়ে ভাবনাটা পজিটিভ ভাবনা। হয়তো একটা গল্প মঞ্চস্থ করার কথা ভাবছি। সেটা নিয়ে পড়াশুনো করি। কী করব তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করি। মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে। ভোরে উঠে পড়াশুনো করা আমার একটা অভ্যেস। তখন একটা বই বেশ খানিকটা পড়লাম তারপর সেটা বন্ধ করে রেখে বেশ কিছুটা সময় ভাবতে থাকলাম বইটা নিয়ে। আসলে ভাল চিন্তাগুলো আমার কাছে খুব আরামের।

আমার কাছে ভাবনা যেন এক স্বপ্ন
লোপামুদ্রা মিত্র | সঙ্গীতশিল্পী
আমি ভীষণ ভাবনাকাজি। আমার কাছে ভাবনাটা যেন এক স্বপ্ন। স্বপ্ন তো মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে আমি কিন্তু জেগেও দেখি। আমার গান সারাক্ষণ ভাবি। কীভাবে তা পরিবেশন করব সেটা ভাবি। কীভাবে গাইব সেটার একটা প্রতিরূপ দেখার চেষ্টা করি আমার ভাবনার মধ্যে দিয়ে। আবার আমার বুটিক ‘প্রথা’ নিয়ে যখন থাকি তখন নতুন, নতুন ডিজাইন মাথায় ঘোরে, রং নিয়ে ভাবতে থাকি। আরও নতুন কী করা যায় সেটা নিয়ে ভাবি। আমি একটা ফেস্টিভ্যাল করি সেটা নিয়েও ভাবি। সেই ফেস্টিভ্যাল কীভাবে করব, তাকে বাস্তব রূপ কীভাবে দেব সেই চিন্তা করতে থাকি। আমার ভাবনা-চিন্তার শেষ নেই। নিজেকে নিয়ে আগে একেবারেই ভাবতাম না এখন সবসময় আনন্দে কীভাবে থাকব সেটা ভাবি। ঠিক সময় যেন রিটার্য়ার করতে পারি সেটা ভাবি। কারণ আমাদের কোনও রিটায়ারমেন্ট নেই। যত রাত বাড়ে ভাবনাটাও বাড়ে। সবটাই পজিটিভ ভাবনা আসে এমন নয় অনেক নেগেটিভ ভাবনাও আসে। চেষ্টা করি সরিয়ে ফেলতে।

Latest article