অলোক সরকার: মায়াঙ্ক আগরওয়াল আর হ্যারি ব্রুক যখন পাশাপাশি দুই নেটে ব্যাট করছেন, তখন পিছনে ব্রায়ান চালর্স লারা। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে সোজা চলে গেলেন বোলারদের পাশে। ডেল স্টেইন, মুথাইয়া মুরলিধরণের মতো মহারথীরা ওখানে। কিন্তু লারা মানে অন্য ব্যাপার। সেখানেও বেশিক্ষণ থাকলেন না সানরাইজার্স হেড কোচ। এবার সোজা সেন্টার পিচের পাশের নেটে। কথা কম, দেখা বেশি ক্যারিবিয়ান প্রিন্সের। সানরাইজার্স (KKR vs SRH) প্র্যাকটিসে মাথায় পানামা হ্যাট পরে সারাক্ষণ এই নেট-ওই নেট ঘোরাঘুরি করে গেলেন।
তিন ম্যাচে দুটি হার। একটি জয়। লারাদের জন্য কেকেআর (KKR vs SRH) ম্যাচ তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। অন্তত দৌড়ে টিকে থাকার জন্য। অতএব, ভরবিকেলে ইডেনে তাঁকে গোটা দলের পিছনে পড়তে হল। ইতিমধ্যেই ব্যাটিং নিয়ে একবার তোপ দেগেছেন। বিশেষত টপ অর্ডার ব্যাটিং। তবে এটাও ঘটনা হ্যারি ব্রুক, এইডেন মার্করামের মতো ব্যাটাররা যদি রান না পান তাহলে লিটল প্রিন্স নিজে কী করবেন! তিনি তো আর মাঠে নেমে নাইটদের স্পিনার ত্রয়ীকে খেলতে যাবেন না।
সানরাইজার্স যখন আগে নেমে অনেকটা ঘাম ঝরিয়ে ফেলেছে, তখন নীতীশ রানারা এলেন রিল্যাক্সড মুডে। পরপর দুটো ম্যাচে আরসিবি ও গুজরাট টাইটান্সের মতো ওজনদার দলকে হারিয়েছে কেকেআর। নীতীশরা এখন ঢিলেঢালা মেজাজ দেখাতে পারেন। আন্দ্রে রাসেলকে দেখা গেল প্রথম নেটে বারবার বল মিস করতে। কিন্তু নেট বদল করে অন্য নেটে ঢুকতেই স্বমূর্তিতে। কিন্তু শেষ দুই ম্যাচে দ্রে-রসের রান বলতে ০ ও ১। রাসেলের মেজাজে ফেরার অপেক্ষায় কেকেআর।
আরও পড়ুন- কোন্দলে জর্জরিত কর্নাটকে বিজেপির শেষ ভরসা মোদিই
আরসিবি ম্যাচের আগে যে হাইপ উঠেছিল, সেটা এই ম্যাচের আগে নেই। তবু ক্লাব হাউসের মেন গেটের সামনে আগের মতোই ভিড়। জনতার মুখে রিঙ্কুর নাম। মোতেরায় ছক্কা-কাণ্ডের পর রিঙ্কু এখন নাইটদের সুপারস্টার। শাহরুখ গণমাধ্যমে পাঠানের পোস্টারে তাঁর ছবি দিয়েছেন। এদিন সাংবাদিকদের সামনে এসে সানরাইজার্স অধিনায়ক মার্করাম অবশ্য রিঙ্কুর সঙ্গে শার্দূলের কথাও বললেন। তাঁর কথায়, ‘‘যে কোনওদিন এরা আমাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে পারে। রিঙ্কু অসাধারণ। তবে আমাদের অনেক পরিকল্পনা আছে। আমাদের দলে ভাল ডেথ বোলার আছে। আশা করি এই ম্যাচে সব পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারব।” আইপিএল ক্রিকেটের ধারণাই কিছুটা বদলে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের ব্যাটার। এর আগে শেষ ওভারে ৩৩ রান করেও জিতেছে কোনও দল। কিন্তু রিঙ্কুর ব্যাটে অমন পাঁচ ছক্কা দেখার পর বোলাররা কিঞ্চিৎ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছেন। এদিন অবশ্য রিঙ্কুকে প্র্যাকটিসে সেভাবে দেখা গেল না। একেবারে শুরুতে সামান্য গা ঘামিয়েই উঠে যান তিনি। এদিকে, প্রেসের সামনে এসে লকি ফার্গুসন আবার ১৫০ কিমি গতিতে বল করা ফাস্ট বোলারদের কথাই তুলে ধরলেন। উমরান, নরখিয়া ইত্যাদি। ‘‘আমিও জোরে বল করতে চাই। কটা উইকেট পেলাম ভাবি না।” অনেকের কাছে শুক্রবারের ম্যাচ গতির লড়াইও। উমরান বনাম লকি। এবার এখনও পর্যন্ত সবথেকে জোরে বল করেছেন লকিই। গতি ছিল ১৫৫ কিমি।
সানরাইজার্সের চাপ অবশ্য তিন কেকেআর স্পিনারকে নিয়েও। নারিন-বরুণের সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছেন সুয়শ শর্মা। মার্করাম বলছিলেন, এই তিন স্পিনার যে এই ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিতে পারে সেটা জানেন। সুতরাং এঁদের প্রত্যেকের জন্য আলাদা পরিকল্পনা থাকবে। সবমিলিয়ে শুক্রবারের ম্যাচ গতি বনাম স্পিনের হতে পারে। একদিকে লকি-উমরানদের আগুনে পেস, অন্যদিকে নারিন-বরুণ-সুয়শ, আদিল রশিদদের ঘূর্ণি।