প্রতিবেদন : মালাপ্পুরম থেকে প্রায় ১২-১৪ কিলোমিটার বাস সফর করে ফাইনালের আগেও অনুশীলনে যেতে হয়েছে বাংলা দলকে। কিন্তু বাংলার কোচ বা ফুটবলারদের তাতে কোনও অভিযোগ নেই। গোটা দল স্বপ্নপূরণের ম্যাচের আগে টগবগিয়ে ফুটছে। গ্রুপ ম্যাচে কেরলের কাছেই হারতে হয়েছিল মনোতোষ চাকলাদারদের। আবার বছর চারেক আগে যুবভারতীর সন্তোষ (Santosh Trophy) ফাইনালে কেরলের কাছে হেরেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল রেকর্ড ৩২ বারের চ্যাম্পিয়ন বাংলার। তাই প্রতিশোধের আগুন বুকে নিয়েই ফাইনালে আইএম বিজয়নের রাজ্যকে হারিয়ে ট্রফি কলকাতায় ফেরাতে মরিয়া বঙ্গ ব্রিগেড।
জিজো জোশেফ, জেসিনকে নিয়ে তৈরি কেরলের আক্রমণভাগ টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা। সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন দু’জন। ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগেও অনুশীলনে ডিফেন্ডারদের নিয়ে কেরলের আক্রমণ থামানোর মহড়া সেরেছেন বাংলার কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তবে জিজোদের বেশি গুরুত্ব দিতে নারাজ রঞ্জন।
মালাপ্পুরম থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘‘জিজো বা জেসিন ভাল খেলোয়াড়। কিন্তু গ্রুপের ম্যাচে ৭৫ মিনিট পর্যন্ত আমরা ওদের খেলতেই দিইনি। ফাইনালেও খেলতে দেব না। আমাদের ভুলে ওই ম্যাচে কেরল জিতেছিল। ডিফেন্সিভ থার্ডে ওদের পায়ে আমরা বল জমা করেছিলাম। আশা করি, ছেলেরা আর এই ভুল করবে না।”
আরও পড়ুন: আগামী মরশুম থেকে বদলাচ্ছে আইএসএল
রক্ষণ সামলে শুরুতেই গোল তুলে নেওয়ার চেষ্টায় বাংলা। আক্রমণে দলের ভরসা ফারদিন আলি মোল্লা, দিলীপ ওরাওঁ এবং মহীতোষ রায়। এঁদের সঙ্গে গোলের মধ্যে রয়েছেন সুজিত সিংও। পাল্টা আক্রমণ অস্ত্রেই কেরল-বধের স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছেন বাংলার কোচ। ফোনে রঞ্জন বললেন, ‘‘কেরলের রক্ষণে অনেক ফাঁকফোকর আছে। ওরা শেষ তিন ম্যাচে ছ’টা গোল খেয়েছে। ওই জায়গাটা আমরা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। গ্রুপ ম্যাচে এই সুযোগটা নিয়েও আমরা গোল মিস করি। ফলে ম্যাচটা সেদিন জিততে পারিনি। ফাইনালে এই ভুল করা যাবে না।” মাঝমাঠে কেরলের বড় চেহারার খেলোয়াড়দের সঙ্গে টক্কর দিতে নবি হোসেন খানকে খেলাতে চাইছেন কোচ।
কুঁড়ি থেকে ফুল হয়ে ফুটতে চান ফারদিন, মহীতোষরা। বাংলাকে সন্তোষ চ্যাম্পিয়ন করতে পারলে তাঁদেরও কেরিয়ার মজবুত হবে। ডাক আসবে আইএসএল বা আই লিগের দল থেকে। অথবা মিলবে ভাল চাকরির প্রস্তাব। প্রাক্তন ফুটবলার ফরিদ আলি মোল্লার ছেলে ফারদিন মোহনবাগানের এএফসি কাপ স্কোয়াডে সুযোগ পান গত মাসে। সন্তোষে (Santosh Trophy) পরপর ম্যাচে গোল করছেন। ফাইনালেও গোল করে বাংলাকে ট্রফি এনে দিতে পারলে ফারদিনের উপর ভরসা আরও বাড়বে সবুজ-মেরুনের।
একই কথা বলা যায় নতুন মরশুমের জন্য ইস্টবেঙ্গলে সই করা মহীতোষ রায় বা এখনও বড় দলের ডাক না পাওয়া দিলীপ ওরাওঁ, বাসুদেব মান্ডিদের ক্ষেত্রে। ফারদিন-মহীতোষরা বলছেন, ‘‘আমরা এখন নিজেদের কেরিয়ার নিয়ে ভাবছি না। আমাদের মাথায় শুধু সন্তোষ ফাইনাল। এতদূর আসাটা বৃথা হয়ে যাবে ট্রফি জিততে না পারলে। কেরল ম্যাচ জিতেই ক্লাব বা কেরিয়ার নিয়ে ভাবব।”