জয়িতা মৌলিক
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া…। ভ্রমণপিপাসু (Tourist) বাঙালির বেড়াতে যাওয়ার জন্য শুধু একটা বাহানা চাই। আর পুজোর মতো ভাল সময় বা সুযোগ আর কী আছে! যেমন আবহাওয়া, তেমন ছুটি। সবমিলিয়ে ভ্রমণপিপাসু বাঙালির আদর্শ সময়। কাছে-দূরে যে জায়গাই হোক, বাঙালি বেরিয়ে পড়েন দিঘা-মন্দারমণি-শান্তিনিকেতন-দার্জিলিং-ডুয়ার্স, একইসঙ্গে বাংলা তথা দেশের বাইরেও। তবে এবার পর্যটকের ঢল বাংলামুখী।
প্রধান কারণ দুটি। এক- উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়। আর দুই- কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলা। ভয়াবহ স্মৃতি মুছে ফেলতে পারছেন না অনেকেই। ফলে ভিড় জমছে বাংলার উত্তরে। দার্জিলিং, কালিম্পং, ডুয়ার্স তো আছেই, পাশাপাশি অফবিট জায়গাগুলিতেও ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই অবস্থা। একইসঙ্গে দিঘা থেকে শুরু করে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, তাজপুরের পর্যটনস্থলও প্রায় ভর্তি। কিছু মানুষ অবশ্য উত্তর ভারতের আশা ছেড়ে দক্ষিণ ভারতে পা রাখছেন। পছন্দের গন্তব্য কেরল। সঙ্গে আছে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
বাংলার বিভিন্ন বনবাংলো বা পর্যটন আবাসের বুকিং নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ভর্তি। পছন্দের ডেস্টিনেশন উত্তরবঙ্গ। কুণ্ডু ট্যুর অ্যান্ড ট্র্যাভেলসের অপারেশনাল ম্যানেজার অর্ণব কুণ্ডু জানান, এবার কাশ্মীর ও গুয়াহাটিতে বুকিং কম। বেশি বুকিং হয়েছিল কুলু মানালি সিমলার জন্য। রাজ্যে দার্জিলিংয়ের বুকিং সবচেয়ে বেশি। সাগরের চেয়ে মানুষ পাহাড়কেই বেশি প্রেফার করছে। বোস ডিমস হলিডেজের কর্ণধার সুরজিৎ বসু জানান, উত্তরাখণ্ড আর হিমাচলের বুকিং সব ক্যানসেল। এখন পছন্দের ডেস্টিনেশন কেরল ও আন্দামান নিকোবর। স্টার ট্যুরের কর্ণধার অলক দত্তের মতে, কাশ্মীর, হিমাচল, উত্তরাখণ্ড প্রাকৃতিক কারণে পর্যটন বন্ধ। ডুয়ার্স, তিনচুলা-র গেস্ট হাউসে প্রচুর বুকিং হচ্ছে। পিছিয়ে নেই দিঘাও। হোমস্টে বা রিসর্ট মালিকরাও বলছেন, উত্তরে অক্টোবরের মাঝখান পর্যন্ত কোনও জায়গা নেই। হ্যাপি রোডস কর্ণধার মৃন্ময় চন্দ্র জানান, কালিম্পং-এর বার্মিক, দাড়াগাঁও এবং দার্জিলিংয়ের ছোটা মাংওয়া-সমেত সব হোম স্টেতেই বুকিং কমপ্লিট। রাজ্যের পর্যটন শিল্পে জোয়ার এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উদ্যোগেই বাংলার উত্তর থেকে দক্ষিণ গড়ে উঠেছে হোম স্টে। তাঁর সুষ্ঠু পরিকল্পনার ফল পাচ্ছেন রাজ্যের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। পুজোর মরশুমে তাঁদের লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে। আর পর্যটনপ্রিয় (Tourist) বাঙালিও পাচ্ছে বেড়াতে যাওয়ার পছন্দসই ডেস্টিনেশন।
আরও পড়ুন-৩৫০ বছর আগে স্বপ্নাদেশে সন্তানলাভে শুরু দারোগাবাড়ির পুজো