মেদিনীপুরের বিভিন্ন বাজার এবার মাতাল ঐতিহ্যবাহী দেওয়ালি পুতুল

মেদিনীপুর শহর ছাড়াও কেশপুর, শালবনি, গড়বেতার গ্রামীণ এলাকার বাজারগুলিতে বিক্রি হল বিপুল পরিমাণ দেওয়ালি পুতুল।

Must read

প্রতিবেদন : আলোর উৎসব পালনে এবার বড় ভূমিকা পালন করল মেদিনীপুরের দেওয়ালি পুতুল। মেদিনীপুর শহর ছাড়াও কেশপুর, শালবনি, গড়বেতার গ্রামীণ এলাকার বাজারগুলিতে বিক্রি হল বিপুল পরিমাণ দেওয়ালি পুতুল। এর ফলে খুশি মির্জাবাজারের কুমোরপাড়ার শিল্পী ও মেদিনীপুরের বিভিন্ন বাজারের বিক্রেতারা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর প্রচুর দেওয়ালি পুতুল বিক্রি হয়েছে বলে জানান তাঁরা। এমনকি প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড, ওড়িশাতেও বিকোনোর জন্য গিয়েছে এই পুতুল। দেওয়ালি পুতুল নিয়ে চালু আছে নানা জনশ্রুতি। অনেকের মতে, ভিনরাজ্যের কুমোররা দীপাবলির সময়ে এই দেওয়ালি পুতুল গড়তেন। সেই পুতুল গড়া হত তাঁদের রীতি অনুযায়ী।

আরও পড়ুন-খরিফ শস্য কেনার এবারের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লক্ষ ৫ হাজার মেট্রিক টন, সহায়কমূল্যে ধান কেনা শুরু হল জেলায়

মেদিনীপুরের মৃৎশিল্পীদের মতে, প্রায় দুশো বছর ধরে তৈরি হচ্ছে এই পুতুল। মনে করা হয়, ১৮৫৭ সাল নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়ার কুমোরপাড়ায় এই পুতুল তৈরি শুরু হয়। প্রথম থেকেই দেওয়ালি পুতুলের চাহিদা ছিল। পাশাপাশি অনেকের মতে, ইংরেজ আমলের সূচনায় জঙ্গলমহলে ভিনরাজ্যের মানুষ বসবাস শুরু করায় তাঁরাই দীপাবলিতে দেওয়ালি পুতুল তৈরি করতেন। যা দিয়ে ঘর সাজাতেন তাঁরা। পরে ধীরে ধীরে এই রেওয়াজ ছড়ায় স্থানীয় বাঙালিদের মধ্যেও। তবে এই পুতুল যে বাংলার বাইরের কোনও অঞ্চলের সংস্কৃতি তা নিয়ে দ্বিমত নেই। পশ্চিম মেদিনীপুরের দেওয়ালি পুতুলও রীতিমতো বিখ্যাত। এই পুতুল বহন করছে প্রাচীন সংস্কৃতি। দেওয়ালি পুতুল, মাটির প্রদীপের ব্যবসা আসলে সিজনাল। তবে মাটি, রঙের দাম অস্বাভাবিক বাড়ায় মৃৎশিল্পীরা সমস্যায় পড়লেও এবার বিক্রির বাজার বাড়ায় লোকসানের তেমন ভয় নেই তাঁদের। তিন মাস আগে পুতুল তৈরি শুরু হয়। মাঝে ঝড়বৃষ্টির জেরে ক্ষতির আশঙ্কা বেড়েছিল। শেষ পর্যন্ত কালীপুজোর সময় বিক্রি ভাল হওয়ায় পুষিয়ে যাবে তাঁদের। জেলার বিভিন্ন বাজারে দেওয়ালি পুতুল কিনতে উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয়। বড় পুতুল ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অনেকেই ঘর সাজাতে নানা মাপের দেওয়ালি পুতুল কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন। বিক্রেতাদের মতে, এবার বাজারে মোমবাতি, প্রদীপের চেয়ে দেওয়ালি পুতুল বিক্রির পরিমাণ ছিল অনেক বেশি।

Latest article