অমৃতের বদলে গরল, ফিরে এসে জানাল পুণ্যার্থীরা, যোগীরাজ্যে মহাকুম্ভে মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা স্বজনহারানোদের

পদত্যাগ করুন যোগী

Must read

প্রতিবেদন : মহাকুম্ভকে (Maha Kumbh) কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে যোগী সরকারের অব্যবস্থা ও পরিকল্পনার অভাব। মহাকুম্ভ জুড়ে এখন শুধুই স্বজনহারা মানুষদের হাহাকার। এমনকী মৃত ব্যক্তিদের মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে পর্যন্ত অস্বীকার করেছে সেই রাজ্যের সরকার। নিখোঁজ মানুষদের নিয়েও কোনও চিন্তাভাবনা প্রচারসর্বস্ব যোগী সরকারের পদক্ষেপে নেই। এই দায় নিয়েই এবার যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করল দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ।
কেন্দ্রের সহায়তা থাকলেও সাধারণ পুণ্যার্থীদের কোনও নিরাপত্তা দিতে পারেনি যোগী সরকার। তা সত্ত্বেও যথেষ্ট পরিকল্পনার অভাব থাকায় একেবারে অব্যবস্থার চূড়ান্ত নিদর্শন গড়ে উঠেছে এই মেলায়। এই বিষয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে যাদবপুরের বাসিন্দা অভিষেক রায়। তিনিও গিয়েছিলেন কুম্ভ মেলায়। এদিন তাঁর মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন অভিষেক। তিনি বলেন, ৬ ঘণ্টার বেশি সময় দিশাহীনভাবে ঘুরেছেন। সেখানে কী পরিমাণ জলকষ্ট হয়েছে তাঁদের সেই কথাও উল্লেখ করেন তিনি। সুরজিৎ পোদ্দারের কাহিনি তো আরও বেদনাদায়ক। পরিবারের তিন মহিলাকে নিয়ে গিয়েছিলেন সেখানে পুণ্য লাভের আশায়। সেখানে গিয়ে এই মর্মান্তিক পরিস্থিতির সাক্ষী হবেন তা বোধহয় ঘুণাক্ষরেও বোঝেননি তিনি। ভিড়ের মধ্যে চোখের সামনে মা-কে পদপিষ্ট হতে দেখেছেন তিনি। দেড় ঘণ্টা কোনও প্রশাসনিক সাহায্য পাননি আহত মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। শেষে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে বিনা ময়নাতদন্তে কোনও কাগজ ছাড়াই মায়ের মৃতদেহ রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন।
দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের সদস্য রন্তিদেব সেনগুপ্ত বলেন, এই ঘটনার দায় স্বীকার করে যোগী আদিত্যনাথকে পদত্যাগ করতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলার ও অন্যান্য রাজ্যের পুণ্যার্থী ও তাঁদের পরিবারের জন্য তাঁরা আরও দাবি করেন, যাঁরা কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে মারা গেলেন এবং তাঁদের মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হয়নি, অবিলম্বে উত্তরপ্রদেশ সরকার সেই শংসাপত্র দিক। মৃতের সঠিক সংখ্যা কত সেটা অনুসন্ধান করে বের করতে হবে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। পদপিষ্টের ঘটনার পর যেসব মানুষ এখনও নিখোঁজ তাঁদের সন্ধান জানানোর জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার অবিলম্বে তৎপর হোক। যাদের অপদার্থতা এবং অপরিণামদর্শিতার কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

আরও পড়ুন- অন্ধ্রের বার্ড ফ্লু নিয়ে অযথা প্যানিক নয় সতর্ক দৃষ্টি রাখছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর

যে কেন্দ্রের সরকার ও উত্তরপ্রদেশ সরকারের গাফিলতিতে পুণ্যার্থীদের এভাবে মৃত্যু, সেই দুই সরকারের উপর চাপ তৈরির দাবি সাধারণ মানুষের কাছে করেন গণমঞ্চের সদস্যরা। কুম্ভমেলায় মিলেছে কোটি কোটি টাকার অনুদান। কিন্তু কুম্ভমেলার মৃত্যুমিছিল এবং অব্যবস্থা ওই প্রচারের বেলুন ফুটো করে দিয়েছে। এরই পাশাপাশি ইউনিয়ন সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণও প্রকাশ পেয়েছে গঙ্গাসাগর মেলার ক্ষেত্রে। অবিলম্বে পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করারও দাবি জানান তাঁরা।

Latest article