প্রতিবেদন : প্রয়াগরাজ থেকে নয়াদিল্লি রেল স্টেশন, মহাকুম্ভের ব্যবস্থাপনায় ডাহা ফেল ডবল ইঞ্জিন সরকার। কুম্ভের জন্য রেলের ‘বিপুল আয়োজন’ যে কতটা সস্তা প্রচার ছিল তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নয়াদিল্লি রেল স্টেশনের নিথর দেহগুলি। ঘটনার পরই কেন্দ্রীয় সরকার ও উত্তরপ্রদেশের ডবল ইঞ্জিন সরকারকে তোপ দেগেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই আবহে চাপে পড়ে কার্যত নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে নিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। নয়াদিল্লি স্টেশনের ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এর জন্য দুই সদস্যের কমিটি গঠনের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে ১৮ জন যাত্রীর নির্মম মৃত্যুর জন্য রেলের কোনও গাফিলতি ছিল না বলেই জানিয়ে দিয়েছেন নর্দার্ন রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক। স্বজন হারানো পরিবারগুলির প্রশ্ন, কুম্ভে ডেকে আনা এত মানুষের দায়িত্ব তাহলে কার ছিল?
ঘটনার পরই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তোপ দেগেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন-কুকথার সাম্রাজ্যের অধিপতি বিজেপি
দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, নিন্দনীয় ও প্রতিবাদযোগ্য। মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু, কুম্ভে যাওয়ার পথে নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু, এরা চাইছেটা কী? রেলের যাত্রী সুরক্ষা বলে কিছু নেই। একের পর রেল দুর্ঘটনা, লোকাল থেকে দূরপাল্লার ট্রেনে অনিয়মিত পরিষেবা, পানীয় জল, খাবার, অপরিচ্ছন্নতা-সহ অজস্র অভিযোগ। কোথাও ট্রেনের মধ্যে বহিরাগতরা ঢুকে পড়ে যাত্রীদের ওপর হামলা করছে। তার মধ্যে সামনে এল এই চূড়ান্ত অব্যবস্থার ছবি। দেশের রাজধানীর বুকে রেলস্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুমিছিল। এত কিছুর পরও নিজের চেয়ারে বসে আছেন রেলমন্ত্রী! প্রচারপ্রিয় রেলমন্ত্রী কি এবার বলবেন, আর কতগুলি দুর্ঘটনা, আর কতগুলি প্রাণ গেলে উনি বলবেন ওই চেয়ারটিতে বসে থাকার কোনও নৈতিক অধিকার তাঁর নেই? যেভাবে রেলের নিরাপত্তা ও পরিচালন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা করছি। নয়াদিল্লি রেলস্টেশনের ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুঃখপ্রকাশ করে পোস্ট করেন দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই পোস্ট মুছে ফেলা হয়। সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলে কুণাল বলেন, কেন সেই পোস্ট মোছা হল? পিছনে কি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কোনও চাপ ছিল?
আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যের হস্টেলে ধর্ষণ করে খুন ছাত্রীকে অভিযোগও নেয়নি পুলিশ
কুণালের সুরে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দুই সাংসদ সাগরিকা ঘোষ ও সাকেত গোখেলও। সাগরিকা বলেন, এটা চরম দুর্ভাগ্যজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা। অন্য ঘটনাগুলির মতো এক্ষেত্রেও মোদি সরকার তথ্য গোপন এবং ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রথমে তো সরকার মানতেই চায়নি এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে। পুরোটাই গুজব বলে ওড়ানোর চেষ্টাও হয়েছে। পরে বেকায়দায় পড়ে সরকার ঘটনার কথা স্বীকার করে নেয়। পুরো ঘটনা এটাই প্রমাণ করছে যে মোদি সরকার এতবড় জমায়েত সামলাতে পুরোপুরি ব্যর্থ। আমরা চাই সরকার অবিলম্বে মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করুক।