প্রতিবেদন : নারীশক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভণ্ডামি চলছেই। কথায়-কাজে কোনও মিল নেই। মুখে নারীশক্তির কথা বললেও মহিলা প্রতিনিধিত্বে ব্যর্থ তাঁর দল ও তাঁর সরকার। সেই ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেখিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। ছত্রে ছত্রে প্রমাণ দিয়ে তৃণমূল বুঝিয়ে দিল প্রধানমন্ত্রী আসলে ভণ্ড। গ্যারান্টির নামে শুধু ভাঁওতা দেন। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখিয়ে দিয়েছেন মহিলা প্রতিনিধিত্বে কীভাবে নজির তৈরি করতে হয়। তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্বে নারী ক্ষমতায়নে সারা দেশে নজির গড়েছে বাংলা। সংসদ থেকে বিধানসভা, পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা, সর্বত্রই নারীশক্তির জয়জয়কার।
সম্প্রতি লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘নারীশক্তি’ নিয়ে বড় বড় কথা বলেছেন। যেমন বলেছিলেন লোকসভা ভোটের প্রচারে। তারপর মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করিয়েও গালভরা অনেক ভাষণ দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার কোনও ছাপ পড়েনি। সম্প্রতি সংসদে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব সম্পর্কে যা বলেছেন, তাও সর্বৈব মিথ্যা। তিনি যে কত বড় ভণ্ড, তা কতিপয় পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট হয়ে যায়।
আরও পড়ুন-কলকাতাই পছন্দের শহর বললেন ইনফোসিস কর্তা
এক, পার্লামেন্টে মহিলা সাংসদের প্রতিনিধিত্ব ২০১৯-এ ছিল ১৪.৪ শতাংশ। আর ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৩.৬ শতাংশে। তাহলেই বুঝেছেন মহিলা প্রতিনিধিত্বে কতখানি ভণ্ডামি করেছে মোদি সরকার। নামেই মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশের কোটা করেছেন। সংসদে যে সংখ্যক মহিলা সাংসদ রয়েছেন, তা কোটার কাছাকাছিও নয়! দুই, মহিলা প্রতিনিধিত্বে ১৩ শতাংশও অতিক্রম করতে পারেনি বিজেপি। এই তো গালভরা প্রতিশ্রুতির নমুনা। এটাই মোদি গ্যারান্টি! পুরোটাই ভাঁওতা। তিন, আর দেখুন তৃণমূলকে। বাংলা থেকে রেকর্ড-ব্রেকিং ৩৮ শতাংশ মহিলা সাংসদ পাঠিয়েছে তৃণমূল। পথ দেখিয়েছে দেশকে। তৃণমূল কংগ্রেস এমন একটা উদাহরণ স্থাপন করেছে, যা বিজেপি কেবল স্বপ্নেই দেখতে পারে, বাস্তবে করে দেখানোর ক্ষমতা নেই! এই পরিসংখ্যান দিয়ে তৃণমূলের তোপ, আপনার কথায়-কাজে একফোঁটাও মিল নেই, কেন বলুন তো মোদিজি?
আরও পড়ুন-বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম দফার সাড়ে ৬,৫৬৩ কোটি বরাদ্দ নবান্নর
এ-প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মোট ৭৯৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু আদতে ভারতীয় সংসদে মহিলা প্রতিনিধিত্বের সংখ্যা মাত্র ১৩.৬২ শতাংশ। ২০১৯ সালের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে যা ছিল সামান্য বেশি ১৪ শতাংশ। উন্নতি তো হয়ইনি, আরও কমেছে মহিলা প্রতিনিধিত্বের হার। ২০১৯ ছিল ৭৮ জন মহিলা সাংসদ। আর এবার অর্থাৎ ২০২৪-এ কমে ৭৪ জন। এঁদের মধ্যে বিজেপির মহিলা সাংসদ ৩০, কংগ্রেসের ১৪, তৃণমূলের ১১, সমাজবাদী পার্টির ৪, ডিএমকের ৩, জেডিইউ এবং এলজেপিআরের একজন করে। রাজ্যভিত্তিক হিসাবে এগিয়ে বাংলা। বাংলা থেকে ৩৮ শতাংশ মহিলা প্রতিনিধি গিয়েছেন সংসদে। কিন্তু বিজেপি সমগ্র দেশে লড়েও কোটার অর্ধেকও প্রতিনিধি পাঠাতে পারেনি। এখানেই চরম ব্যর্থ বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী মোদি।