আগামী ২৩ জুন ত্রিপুরার চারটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন। তেইশের বিধানসভা ভোটের আগে যা শাসক-বিরোধী দলগুলির কাছে কার্যত অ্যাসিড টেস্ট। উপনির্নাচনে চতুর্মুখী লড়াইয়ে কোমর বেঁধে মাঠে পড়েছে সবপক্ষ। পুরভোটে নজিরবিহীন উত্থানের পর এবার বিধানসভা উপনির্বাচনে বাড়তি অক্সিজেন নিয়ে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই প্রচারে ঝড় তুলেছে ঘাসফুল শিবির। ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে, প্রচারের ঝাঁঝ আরও বাড়াচ্ছে তৃণমূল। সুবল ভৌমিক, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুস্মিতা দেবদের নেতৃত্বে যেমন নিয়ম করে প্রতিদিন সকাল-সকাল বাড়ি বাড়ি গিয়ে “ডোর টু ডোর” প্রচার করছেন তৃণমূল প্রার্থীরা, ঠিক একইভাবে পথসভা চলছে রাস্তার মোড়ে মোড়ে। এরই মধ্যে উপনির্বাচনের প্রচারের ঝড় তুলতে আগামী মঙ্গলবার দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার যাবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, একদিনের প্রচারে অভিষেক একটি রোড শো করার পাশাপাশি জনসভাতেও প্রধান বক্তা হিসেবে হাজির থাকবেন।
আজ, রবিবার সকাল থেকে প্রচারে আরও ঝড় তোলে তৃণমূল। এদিন সকাল সকাল দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ৬, আগরতলা বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী পান্না দেব মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন ও আশীর্বাদ চান। কয়েকমাস আগেই প্রবল গেরুয়া সন্ত্রাসের মধ্যে আগরতলা পুরভোটে ২০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছিল তৃণমূল। ফলে ঘাসফুল শিবিরের প্রার্থীকে নিয়ে একটি বাড়তি উন্মাদনা রয়েছে আগরতলা জুড়ে। প্রদেশ তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস সভাপতি পান্না দেব ত্রিপুরা রাজনীতিতে লড়াকু নেত্রী বলেই পরিচিত। এদিন মূলত, বাড়ি বাড়ি প্রচারে পান্না দেব রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসঙ্গটি মানুষের সামনে তুলে ধরেন। দীর্ঘ বাম জমান ও গত চার বছরে বিজেপির শাসনকালে রাজ্যের বেকারত্ব ইস্যুটিকে
সামনে রেখে ভোট চান আগরতলার তৃণমূল (Trinamool Congress) প্রার্থী।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সোনিয়া গান্ধী, দ্রুত সুস্থতা কামনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
পাশের টাউন বড়দোয়ালি কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সংহিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছুটির দিনে সকাল সকাল কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে চৌধুরী রাম, ঠাকুর আশ্রম এলাকায় বাড়ি বাড়ি প্রচার করেছেন। এছাড়াও পথচলতি সাধারণ মানুষ ও দোকান-বাজার এলাকার ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন সংহিতাদেবী। এরপর ত্রিপুরার বিশিষ্ট ও বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব রাঙ্গা দারোগা মহাশয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।
অন্যদিকে, রবিবাসীয় সকালে সুরমা ও যুবরাজনগরে তৃণমূল প্রার্থীরাও বাড়ি বাড়ি প্রচারে জোর দেন। সুরমায় তৃণমূলের তরুণ প্রার্থী অর্জুন নমশূদ্র এলাকায় খুব জনপ্রিয় মুখ। প্রতিনিয়ত মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ থাকে তাঁর। এলাকাবাসীর তাঁকে ঘরের ছেলের মতোই আশীর্বাদ করছে বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।
এদিকে যুবরাজনগরের তৃণমূলপ্রার্থী মৃণালকান্তি দেবনাথ এলাকাবাসীর কাছে ডাক্তারবাবু হিসেবে পরিচিত। রবিবার সকালে তিনিও ডোর টু ডোর প্রচার করেন। ভোট প্রচারের পাশাপাশি এদিন দ্বহানবাসা ভৈরব বাড়ি মন্দিরে গিয়ে ত্রিপুরাবাসীকে সেবা করার সংকল্প নেন ও মানুষের কল্যানে ব্রতী হন।
এদিন সন্ধেতেও প্রদেশ তৃণমূল সভাপতি সুবল ভৌমিক-সহ রাজ্য শীর্ষ নেতৃত্ব দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে একাধিক পথসভা করেন। সবমিলিয়ে জমজমাট প্রচারে ত্রিপুরার উপনির্বাচন কার্যত জমিয়ে দিয়েছে তৃণমূল।