প্রতিবেদন: বিশবাঁও জলে সংবিধান সংশোধনী নিয়ে জেপিসি গঠনের প্রক্রিয়া। সরকারের স্বেচ্ছাচারিতার ফলে অযথা সময় নষ্ট হচ্ছে বলে তোপ দাগলেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, এই জেপিসির আসলে কোনও কার্যকারিতাই নেই। নজর ঘোরাবার জন্যই মোদি সরকারের এই কৌশল। শুধু শুধু সময় নষ্ট করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-ধরনায়-বিক্ষোভে উত্তাল ধর্মতলা চত্বর
বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে এই বিল। সংসদের বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর পেরিয়ে গিয়েছে দু’সপ্তাহ। প্রথমেই তৃণমূল কংগ্রেস সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, জেপিসিতে দলের কোনও প্রতিনিধি থাকবে না। তারপরে তৃণমূলের পথই অনুসরণ করেছে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম-আদমি-পার্টি এবং উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা। কংগ্রেস এখনও সরকারিভাবে তাদের সিদ্ধান্তের কথা না জানালেও, জেপিসিতে যোগদান নিয়ে তাদের অনীহার কথা জানিয়ে দিয়েছে আকার-ইঙ্গিতে। বিরোধীদের এই অনড় মনোভাব দেখে থমকে দাঁড়িয়েছে মোদি সরকার। রীতিমতো চাপে পড়ে গেছে। তাই আপাতত মৌনব্রত, নিয়েছে তারা।
এই অবস্থায় জেপিসি গঠন কীভাবে সম্ভব তা বুঝে উঠতে পারছে না তারা। এক কথায় কূল-কিনারা পাচ্ছে না বিজেপি।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কমিটি কি তাহলে বিশ বাঁও জলে? আরজেডিও তাদের দলের তরফে এই জেপিসিতে প্রতিনিধি পাঠানো নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করছে না। এখনও পর্যন্ত মোদি সরকার যৌথ সংসদীয় কমিটির এখন সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। এই নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এই সংবিধান সংশোধনী বিল ২০২৫ নিয়ে জেপিসি শুধুমাত্র মোদি সরকারের আইওয়াশ। ওয়াকফ সংশোধনী বিল, এক দেশ এক নির্বাচন বিল দু’টির জেপিসিতে সদস্য হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে কল্যাণ বলেন, বিরোধীদের কোনও বক্তব্যর কোনও গুরুত্ব নেই। সরকার বেছে বেছে কমিটিতে সদস্য নির্বাচন করবে। সংসদ থেকে জেপিসি, বিরোধীদের মতামত উপেক্ষা করছে সরকার। সংসদ থেকে নজর ঘোরানো, সময় নষ্ট ছাড়া জেপিসির আর কোনও কার্যকারিতা নেই। সরকার ইচ্ছেমতো কাজ করছে।
তৃণমূলের পাশাপাশি কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপির শাসনকালে জেপিসির প্রয়োজনীয়তা নষ্ট হচ্ছে। সেই কারণে বিরোধী দলগুলো জেপিসি বয়কট করছে। বিরোধীদের দাবি, ইন্ডিয়া জোট শিবির এই বিলের জেপিসির বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। এখনও যেসব দল জেপিসিতে অংশগ্রহণের প্রশ্নে সুস্পষ্ট মতামত জানায়নি, তারও মনে করছে এই জেপিসির আসলে মোদি সরকারের সূক্ষ্ম চাল। লক্ষ্য একটাই, গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করা। সবমিলিয়ে একটা বিষয় স্পষ্ট, জেপিসি নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে মোদি সরকার।