প্রতিবেদন : ইডির চার্জশিটের একাংশকে কায়দা করে বাজারে ছাড়ার ঘটনায় নীল ও কালো কালিতেই বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এ-বিষয়ে মামলা করছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসও (Trinamool Congress) এর তদন্ত দাবি করল। সোমবার হলদিয়ায় (Haldia) দলের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে এ-কথা বলেন, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। ৩ নং প্রশ্নোত্তর গোপন রেখে প্রচার কেন? সেই প্রশ্নও তুলেছেন কুণাল।
দলের (Trinamool Congress) স্পষ্ট বক্তব্য, এজেন্সি দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে অপদস্থ-সামাজিক সম্মানহানী ও রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে শুধুমাত্র চার্জশিটের ২ নং প্রশ্নোত্তরটি বাজারে ছাড়া হয়েছে। আর শুভেন্দু অধিকারী এটা নিয়ে লম্ফঝম্ফ করছে। এটা ক্রিমিনাল অফেন্স। এর যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার— সাফ কথা কুণালের।
আদালত থেকে এই ধরনের কোনও কপি উঠলে তা হয় সার্টিফায়েড কপি এবং সেখান থেকে জেরক্স নিলে সেটা হয় সাদা-কালো— যেমনটা আমার কাছে রয়েছে (সাদা-কালো কপি দেখিয়ে)। কিন্তু চার্জশিটের যে ক’টি লাইন বাজারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তা নীল কালিতে লেখা। এটা কী করে হয়? হোয়াটসঅ্যাপে যেগুলি ঘুরছে তা নীল হয় কী করে? প্রশ্ন কুণালের। এর সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, যদি ধরেও নিই এটা অরিজিনাল তাহলে হয় ইডির কোনও অফিসার চার্জশিট লেখার সময় তা ফোনে ছবি তুলে শুভেন্দু ও বিজেপিকে পাঠিয়েছেন। পরিকল্পনা করে ইডির ভিতর থেকে এটা বাইরে আসছে৷ নয়তো এজেন্সির চার্জশিটের লাইন বলে যা বাজারে ছাড়া হয়েছে তা জাল। এর যাথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার। গোটা ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থারই সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হচ্ছে— যা দুঃখজনক।
আরও পড়ুন-রাজ্যপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিরোধী দলনেতার অনুপস্থিতির যুক্তিকে কটাক্ষ কুণাল ঘোষের
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল চার্জশিটের (সাদা-কালো) কপি তুলে ধরে তার ২ নং এবং ৩ নং প্রশ্নোত্তর পড়ে শোনান। সেখানে দেখা যাচ্ছে ২ নং প্রশ্নোত্তরে লেখা রয়েছে, এবি-কে চেনো? এই লাইনটি কায়দা বাইরে ছাড়া হয়েছে। কিন্তু ৩ নং প্রশ্নোত্তরে রয়েছে, তুমি কখনও এবির সঙ্গে বা তার সহকারীর সঙ্গে কথা বলেছ? উত্তর রয়েছে, না আমি কখনও এবি বা তার সহকারীর সঙ্গে কখনও কথা বলিনি। এরপরই কুণালের বক্তব্য, সাধারণভাবে এটা দেখে আইনজীবীদের মনে হচ্ছে, এটি কোনও ব্যক্তির গোপন জবানবন্দির (১৬৪) অংশ। যদি সেটাও হয় তা তো আদালতে থাকার কথা। তা বাইরে এল কীভাবে? বিকৃত প্রচারের মাধ্যমে চার আনার দলবদলু ব্ল্যাকমেলার নেতা পিছনের দরজা দিয়ে শুভেন্দু এই ধরনের জিনিস বাজারে ছাড়ছে। ও নিজে ইডি-সিবিআই থেকে বাঁচতে বিজেপিতে গেছে। তীব্র কটাক্ষ কুণালের। তাঁর সংযোজন, চার্জশিটে চার লাইন লিখে দেওয়া কোনও ব্যাপার নয়। বিজেপি এজেন্সিকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করছে।
এদিন শুভেন্দুকে তোপ দেগে কুণাল বলেন, ও ক্রমশ পিছু হঠছে। ওর পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। ক’দিন আগেও তো বড় বড় কথা বলছিল, দেখুন না ডিসেম্বরে কী হয়। আর এখন বলছে সরকার ফেলার কথা বলিনি! এখন গণতন্ত্রের কথা মনে পড়ছে? একটা সরকার তো বাংলার মানুষের ভোটে গণতান্ত্রিকভাবেই জিতে এসেছে।