প্রতিবেদন : আরজি কর-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানাল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের স্পষ্ট কথা, এই রায় সারা দেশের জন্য। এই রায় বিজ্ঞানসম্মত। ইতিবাচক। সারা দেশে এই ধরনের অপরাধের কথা বলা হয়েছে ও তারই পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তরুণী ডাক্তারের ধর্ষণ ও খুনের মতো ঘৃণ্য অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। সেইসঙ্গে দোষীদের ফাঁসির দাবিতেও সরব হয়েছেন। হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার গিয়েছিল সিবিআইয়ের হাতে। এবার সুপ্রিম কোর্ট পুরো বিষয়টি মনিটর করবে।
আরও পড়ুন-২ শিশুকে যৌন নির্যাতন, প্রতিবাদে উত্তাল মহারাষ্ট্র
মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার ও প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ তাঁদের বক্তব্যে বলেন, স্বাস্থ্য-পরিষেবা সচল হোক, সুপ্রিম কোর্টের রায়কে মান্যতা দিন। সুপ্রিম কোর্ট যখন রায় দিয়ে বিষয়টি শুনেছে মান্যতা দিয়েছে, তখন এটা না শুনলে সুপ্রিম কোর্টকে অপমান করা হয়। অনেকেই কাজ করতে চাইছেন কিন্তু যেতে পারছেন না। আপনারা কাদের জন্য এটা করছেন? গরিব মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে মান্যতা না দিলে বুঝতে হবে তাঁরা নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে এই কাজ করছেন। সুপ্রিম কোর্ট যখন বিষয়টি দেখছে তাহলে কেন কর্মবিরতি চলবে? সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে, কাজে ফেরার জন্য আবেদন করছে তারপরেও কেউ না শুনলে মনে করতে হবে অশুভ চিন্তা নিয়ে এ-কাজ করা চলছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ-কাজ করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে শীর্ষ আদালতে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা করতে হবে সিবিআইকে, জানাতে হবে আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তে কতদূর অগ্রগতি হয়েছে৷ এই নির্দেশের পাশাপাশি শীর্ষ আদালতের তরফে এদিন সারা দেশের মহিলা চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা বলা হয়েছে৷ ৯ জন বিশিষ্ট চিকিৎসক এবং উচ্চপদস্থ কেন্দ্রীয় আমলাদের সমন্বয়ে গঠিত এই টাস্ক ফোর্স দেশের সব প্রান্তের চিকিৎসা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে মহিলা চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সুপারিশ করবে৷ তিন সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দেবে এই টাস্ক ফোর্স। দু-মাসের মধ্যে দিতে হবে চূড়ান্ত রিপোর্ট, মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়৷ আন্দোলনকারীদের কাজে ফেরার অনুরোধও করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ২২ অগাস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন-একযোগে প্রতিবাদ তিন প্রধানের, ক্লাবের আবেগ ভাঙিয়ে রাজনীতি নয়
কুণাল বলেন, কলকাতা পুলিশের কাছে তদন্ত থাকলে রবিবারের মধ্যে ব্রেক থ্রু হয়ে যেত। কিন্তু সেই সময় তারা পায়নি। সুপ্রিম কোর্ট তারিখ দিয়েছে। ২২ তারিখের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে। ২৩ অগাস্ট অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করা হবে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করিয়েছিলেন। ২২ তারিখ সিবিআই জানায় সুপ্রিম কোর্টকে তারা ২৩ তারিখের মধ্যে চার্জশিট দেবে। ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রেখে বিরোধীদের সুযোগ করে দেওয়া যাবে না। অপরাধী একা ছিল নাকি অনেকে ছিল তা বলতে হবে। একা থাকলে এটাই ফাইনাল চার্জশিট ধরে নেওয়া হবে। এখানে বিক্ষোভ ওখানে বিক্ষোভ করে বাম-বিজেপিকে অক্সিজেন দেওয়া চলবে না।