একুশের ভোটেই তথাকথিত কংগ্রেস ‘গড়’ ভেঙ্গে পড়েছিল তাসের ঘরের মতো৷ আর রবিবার সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরের ফল বুঝিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেসই আসল কংগ্রেস৷ বিজেপি-বিরোধিতার প্রশ্নে বিজেপির এজেন্টদের মুর্শিদাবাদের মানুষ ন্যূনতম বিশ্বাসও করে না৷ দুই কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল সে কথাই দৃঢ়ভাবে প্রমান করেছে৷
আরও পড়ুন-চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করল তৃণমূল কংগ্রেস
মুর্শিদাবাদকে সামনে রেখে নিজের রাজনৈতিক গুরুত্ববৃদ্ধির যে খেলা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন অধীর চৌধুরি, তা আজ আরও একবার মুখ থুবড়ে পড়েছে৷ ওই সাংসদদের স্রেফ মিডিয়া-সর্বস্ব রাজনীতি দিয়ে যে বিজেপি ঠেকানো যায় না, তা আজ অন্তর থেকে উপলব্ধি করেছেন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলা৷ আর তাঁরই প্রতিফলন দেখা গেল ইভিএমে৷ প্রমান হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসই আসল কংগ্রেস ৷ স্পষ্ট হয়েছে, মুর্শিদাবাদও বিশ্বাস করে, বিজেপির মোকাবিলা করার ক্ষমতা এবং যোগ্যতা তৃণমূল কংগ্রেসেরই রয়েছে৷ বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ নেহাতই কাগুজে বাঘ৷
আরও পড়ুন-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেকর্ড জয়ে মাতোয়ারা কালীঘাট-ভবানীপুর
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফল বুঝিয়েছিলো, নিজের গড়েই পায়ের তলার মাটি ঝুরঝুরে হয়ে গিয়েছে বহরমপুরের সাংসদের৷ গোটা রাজ্যের মতোই তথাকথিত শক্ত ঘাঁটি মুর্শিদাবাদেও খাতা খুলতে ব্যর্থ হয় কংগ্রেস৷ এমন কি হাতছাড়া হয় অধীর চৌধুরির ‘দুর্গ’ বলে পরিচিত বহরমপুুরও৷ বিধানসভা নির্বাচনে গোটা মুর্শিদাবাদেই একচেটিয়া দাপট দেখিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ সাধারণ নির্বাচনের সময় প্রার্থীর মৃত্যুতে মুর্শিদাবাদের দু’টি আসনে ভোট হয়নি৷ বাকি ২০টি আসনের মধ্যে ১৮টিতেই জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস৷ অধীরের লোকসভা কেন্দ্র বহরমপুরের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে ৬টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ আর বহরমপুর কেন্দ্রে জিতে যায় বিজেপি৷ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কান্দি, বড়ঞা এবং বহরমপুরে অনেকটা এগিয়ে ছিল কংগ্রেস৷ কিন্তু সেই তিন আসনও একুশের ভোটে হাতছাড়া হয়েছে কংগ্রেসের৷ ফলে মুর্শিদাবাদকে কংগ্রেসের ‘গড়’ বলারও অবসান হয়ে গিয়েছে তখনই৷ উপনির্বাচনের প্রচারে তৃণমূল কংগ্রেস বার বার বলেছে, বিজেপিকে হঠাতে পারে শুধু তৃণমূলই। কংগ্রেসের লড়াই শুধুই মুখে৷ ময়দানে নেমে প্রতি ইঞ্চিতে বিজেপির সঙ্গে লড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মুর্শিদাবাদের মানুষ এই কথা বিশ্বাস করেছে, আস্থা রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেসের উপর৷ তারই প্রতিফলন ঘটেছে ভোটের ফলে৷ দুই আসনের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের বার্তায় আস্থা রেখেছেন ওই জেলা৷ বিপুল ব্যবধানে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই প্রার্থীকে জয়ী করে মুর্শিদাবাদের স্বঘোষিত ‘অভিভাবক’ অধীর চৌধুরিকে আরও একবার ছুঁড়ে ফেলেছে তাঁরই জেলার মানুষ৷