প্রতিবেদন : জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে ভুয়ো ভোটার কার্ড (fake voter card) চক্রান্তের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করল তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই দাবি জানানো হয়েছে। দলের স্পষ্ট বক্তব্য, বিজেপি পরিচালিত এই চক্রান্তের মাথা কে? তাকে খুঁজে বার করে গ্রেফতার করতে হবে৷ এই প্রসঙ্গে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ মঙ্গলবার সকাল ৯টার মধ্যে জাতীয় নির্বাচন কমিশন তাদের যাবতীয় ত্রুটি স্বীকার করে বিবৃতি জারি করলে ভাল, না হলে তৃণমূলের তরফে ভোটার কার্ডের দুর্নীতি নিয়ে নতুন প্রমাণ পেশ করা হবে, সোমবার নয়াদিল্লিতে সাফ জানিয়ে দেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ’ও ব্রায়ান৷ এই প্রসঙ্গেই তাঁর দাবি, বাংলার বৈধ ভোটাররাই শুধু বাংলাতে ভোটদান করবেন, এটা নিশ্চিত করতে হবে৷ অন্য রাজ্য থেকে ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত কোনওভাবেই মানা হবে না, নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন ডেরেক ’ও ব্রায়ান৷ মার্চ, এপ্রিল ও মে— এই তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে ভোটার তালিকার যাবতীয় ত্রুটি সংশোধন করতে হবে, দাবি জানান ডেরেক ’ও ব্রায়ান৷
আরও পড়ুন- শান্তিতে উচ্চমাধ্যমিক, ভন্ডুল ক্যামেরা নিয়ে বামেদের নাটক
একই সুরে এদিন জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার ডেপুটি লিডার সাগরিকা ঘোষ৷ তাঁর কথায়, এটা একটা প্রতারণা৷ বাংলার ভোটারদের আসল এপিক কার্ড ব্যবহার করছে অন্য রাজ্যের ব্যক্তি৷ আমরা কি ড্রাইভিং লাইসেন্স, আধার কার্ড, পাসপোর্টের ডুপ্লিকেট দেখতে পাই? তাহলে এপিক কার্ড ডুপ্লিকেট কেন হবে? জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কোনও আধিকারিক এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাঁকে খুঁজে বার করা হোক৷ এর তদন্ত হোক৷ প্রধানমন্ত্রী যেভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চাইছেন, তা হতে দেব না৷ আমরা লড়াই করব, গণতন্ত্রকে রক্ষা করব৷ ডেরেক ’ও ব্রায়ান এবং সাগরিকা ঘোষের পাশে দাঁড়িয়ে সোমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে তোপ দেগেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার সাংসদ কীর্তি আজাদও৷ তাঁর কটাক্ষ, সুপ্রিম কোর্ট একবার সিবিআইকে খাঁচায় বন্ধ তোতাপাখি বলেছিল! আমার প্রশ্ন, নির্বাচন কমিশন কি খাঁচায় বন্ধ ময়না?
তাৎপর্যপূর্ণ হল, ভুয়ো ভোটার (fake voter card) এবং এপিক স্ক্যাম নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সুর চড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই ইন্ডিয়া জোটের সদস্য ৫টি রাজনৈতিক দল তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে, দাবি দলীয় সূত্রের৷ কয়েক মাসের মধ্যেই বিহারের বিধানসভা নির্বাচন৷ তার আগে তৃণমূলের তোলা এপিক স্ক্যাম ইস্যু সর্বভারতীয় স্তরে বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে আন্দাজ করেই এই দলগুলি এবার এপিক ইস্যুতে তৃণমূলের পাশে থাকতে মরিয়া হয়েছে৷ এপিক ইস্যুতে ধারাবাহিক আন্দোলনের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল৷ এই ইস্যুটিকে হাতিয়ার করে আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হতে চলা সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে লোকসভা ও রাজ্যসভায় সোচ্চার হবেন তৃণমূল সাংসদেরা৷