প্রতিবেদন : কুৎসিত, নিন্দনীয়, অমার্জনীয়। ছিঃ! আর কত নিচে নামবেন দিলীপ ঘোষ! দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়েও রুচিহীন মন্তব্য! একবার মা দুর্গার পিতৃপরিচয় জানতে চেয়েছিলেন। এবার মুখ্যমন্ত্রীকেও ছাড়লেন না! নর্দমার ভাষায় আক্রমণ। নিশ্চিত হার জেনে নির্লজ্জের মতো কুরুচিকর মন্তব্যে রাজনীতিকে কলুষিত করছেন দিলীপ। শালীনতার সব সীমা অতিক্রম করে গেলেন।
আপনাকে ধিক্কার! ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের সম্মাননীয় পিতা-মাতা সম্পর্কে এমন নোংরা মন্তব্যের পর দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানায় তৃণমূল। তারপরই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত জানাবে কমিশন। এখন দেখার কী পদক্ষেপ করে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন-ভোটের আগে বিজেপির তাণ্ডব শুরু তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির বাড়িতে বোমাবাজি, গুলি
তৃণমূলের দাবি, একজন প্রার্থীর এমন নির্লজ্জ রুচিহীন মন্তব্যের পর নির্বাচন কমিশনের উচিত তাঁকে ভোট-ময়দান থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া। বুধবার তৃণমূলের আটজনের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে সেই দাবিতে সরব হবে। তৃণমূলের সাফ কথা, আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী কোনও প্রার্থী কারও ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে সমালোচনা বা আক্রমণ করতে পারেন না। পাশাপাশি মহিলাদের অপমানজনক মন্তব্যও কোনও রাজনৈতিক দল বা কোনও প্রার্থী করতে পারেন না। দিলীপ ঘোষের নিন্দনীয় মন্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, বিজেপি একটা নারীবিদ্বেষী দল। তাই মা দুর্গাকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্যের পর মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়েও রুচিহীন কুমন্তব্য করলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর এই মন্তব্যের প্রতিবাদে গর্জে উঠল তৃণমূল।
মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁকে তাঁর ঘর থেকে উচ্ছেদ করেছে বিজেপি! পরভূমে গিয়ে জয়লাভ করা যে তাঁর কম্ম নয়, তা হাড়েহাড়েই বুঝতে পারছেন তিনি! অগত্যা মনের যত বিষ আছে, সব উগরে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর। কিন্তু, দিলীপবাবু এভাবে বিষোদ্গার করে বাংলার অগ্নিকন্যাকে রুখতে পারবেন না। বাংলার মানুষই এই কু-কথার জবাব দেবেন। মহিলা তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, একজন সাংসদ হয়ে এই আপনার মুখের ভাষা! দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর পিতৃপরিচয় নিয়ে যে ভাষায় আপনি আক্রমণ করেছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য। শুধু বাংলা নয়, সমগ্র ভারতবর্ষের মানুষ এর উচিত জবাব দেবে। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, মানসিক অবসাদে ভুগছেন দিলীপ ঘোষ। তা না হলে মুখ্যমন্ত্রীর পিতৃপরিচয় সম্পর্কে এমন কুরুচিকর মন্তব্য করতে পারেন! এর আগে মা দুর্গার পিতৃপরিচয় নিয়েও এমন নোংরা মন্তব্য করেছিলেন। জেনে রাখুন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’নামটি ভারতীয় রাজনীতিতে একটি বিরাট ও অবিনশ্বর অধ্যায়। দিলীপবাবু আদৌ কোনওদিন সেই উচ্চতায় পৌঁছতে পারবেন না। আপনি তো আপনার দলেই কোণঠাসা! ঘাড়ধাক্কা দিয়ে আপনাকে মেদিনীপুর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে আপনার পার্টি। দলবদলুরা আপনার জায়গা কেড়ে নিচ্ছে, সেখানে কথা বলার ক্ষমতা নেই আপনার। এখন মানসিক অবসাদ থেকে হতাশার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গালাগালি করে। মনে রাখবেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারা ভারতবর্ষের মেয়ে। তিনি দিল্লির বুকে দাঁড়িয়ে বলবেন দিল্লির মেয়ে, বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে বলবেন বাংলার মেয়ে, ত্রিপুরার বুকে দাঁড়িয়ে বলবেন ত্রিপুরার মেয়ে। আগে তাঁর উচ্চতায় উঠতে শিখুন, তারপর কথা বলবেন। নিজের দলের লোকেরাই আপনাকে মেদিনীপুর থেকে ফুটিয়ে দিয়েছে। তার পরও এত কীসের ফুটানি!
আরও পড়ুন-লোকসভা ভোটের আগে গ্রামপঞ্চায়েত পেল তৃণমূল
বর্ধমান-দুর্গাপুরের দলীয় প্রার্থী কীর্তি আজাদ বলেন, শয়তান জমিদাররা যখন নারীর সম্মান লুট করত, প্রতি পদে নারীর অসম্মান করত! দিলীপ ঘোষ ঠিক সেই লুটেরা জমিদারদের ভাষাতেই কথা বলছেন! তাঁর মানসিক চিকিৎসা করানো উচিত। রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন বরিষ্ঠ মহিলা রাজনীতিকের অপমানে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন বিজেপির তথাকথিত নেতারা, বাংলা তথা ভারতের মানুষ আপনাদের যোগ্য জবাব দেবেন।