প্রতিবেদন : বাংলার প্রতি গেরুয়া কেন্দ্রের প্রতিহিংসা ও বিমাতৃসুলভ আচরণের প্রতিবাদে লোকসভায় গর্জে উঠলেন তৃণমূলের ডেপুটি লিডার কাকলি ঘোষদস্তিদার। বাংলার সঙ্গে কীভাবে ধারাবাহিক আর্থিক বঞ্চনা চালিয়ে যাচ্ছে মোদি সরকার, তার প্রমাণ আগেই সর্বসমক্ষে তুলে ধরেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ মনরেগা, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা এবং সমগ্র শিক্ষা অভিযান প্রকল্প বাবদ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের মোট পাওনা ২০,০০০ কোটি টাকা৷ বারবার আর্জি জানানো সত্ত্বেও রাজ্যের খেটে খাওয়া মানুষের ন্যায্য পাওনা এই টাকা আটকে রেখেছে মোদি সরকার৷ মঙ্গলবার লোকসভায় এই প্রসঙ্গ তুলেই কেন্দ্রীয় সরকারের মুখোশ খুলে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ, লোকসভার দলের ডেপুটি লিডার কাকলি ঘোষদস্তিদার৷ কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতরাজ মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিংয়ের সামনে প্রশ্নোত্তর পর্বে কাকলি ঘোষদস্তিদার জানতে চান, কেন বাংলার পঞ্চায়েতগুলির কাজের টাকা আটকে রাখা হয়েছে? নির্বাচিত পঞ্চায়েতের তরফে সঠিক ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে৷ তার পরেও কেন আটকে রাখা হয়েছে বাংলার গরিব মানুষের টাকা? দিল্লি থেকে ৬৪ বার বাংলায় কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল গিয়েছে৷ তারা সঠিক জবাব পেয়েছে৷ তার পরেও কেন বাংলার পঞ্চায়েতের গরিব মানুষের ৭০০০ কোটি টাকা আটকে রাখা হয়েছে? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে না পেরে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতরাজ মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিং পুরো বিষয়টি কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয় বলে এড়িয়ে যান৷
আরও পড়ুন-বাংলা ও বাঙালির বিরুদ্ধে চক্রান্ত পাল্টা হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর
এরপরে সংসদে দাঁড়িয়ে জেডিইউ-এর সাংসদ ও মোদির মন্ত্রিসভার সদস্য লালন সিং মিথ্যাচার করেন বাংলার বিরুদ্ধে। নিজেদের মুখ বাঁচাতে পশ্চিমবঙ্গের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই কটূক্তির তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের প্রশ্ন, এটা কীভাবে বলা যায়? বাংলা তো ভারতেরই একটা অঙ্গরাজ্য। বাংলাকে সম্মান করা উচিত, অপমান নয়। আপনারা গরিব মানুষের টাকা আটকে রাখেন। বাংলার সংস্কৃতি আর ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করেন। বাংলার নাম ভুল করে বিহার বলেন। বাঙালিদের ‘বাংলাদেশি’ বলে দাগিয়ে দেন, দুর্ব্যবহার করেন। বাংলায় কথা বললেই জেলে বন্দি করেন, এমনকী দেশ থেকে বের করে দেন। এই প্রসঙ্গেই তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, হ্যাঁ, বাংলা বিশেষ ধরনের রাজ্য। কারণ, বাংলার শাসন ব্যবস্থা ভারতীয় সংবিধান অনুসারে চলে, বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে চলে না; তাই আপনাদের এত গাত্রদাহ! বাংলা মাথা উঁচু করে চলে, বিজেপির ঘৃণ্য বিভেদের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, ভবিষ্যতেও করবে।

