বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমে দাগি বিপ্লব রাজনৈতিক পর্যটক বলে কটাক্ষ তৃণমূলের

উন্নাও, হাথরস, প্রয়াগরাজ, দিল্লি, মণিপুর, ত্রিপুরা, বিলকিসে নেই এরা

Must read

প্রতিবেদন : কসবা-কাণ্ডে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’র নামে বিজেপির প্রতিনিধিদল রাজনীতি করতে এসেছে বাংলায়! আর সেই টিমে ত্রিপুরার বিজেপি সাংসদ বিপ্লব দেব! ছিঃ! তাঁর আমলে কী ঘটেছিল? উত্তর দিতে পারবেন? এই টিমের উদ্দেশ্যই বা কী? এই বিষয় নিয়েই দলের তরফে সরব হয়েছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। তথ্য তুলে ধরে বিজেপিকে ধুইয়ে দিলেন মন্ত্রী। তুললেন একের পর এক প্রশ্ন। মন্ত্রী বলেন, বাংলায় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমে বিজেপির প্রতিনিধিদল আসছে। এটা শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক প্রতিনিধিদল। এঁরা বাংলায় এসে, ঘুরবেন, দেখবেন, চলে যাবেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল যখন উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরা, অসম যেতে চেয়েছিল তখন তাঁদের বাধা কেন দিয়েছিল বিজেপি? এর থেকেই প্রমাণিত হয় বাংলায় গণতন্ত্র আছে আর বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে গণতন্ত্র নেই। দ্বিতীয় বিষয় হল, সত্যিটা কী? সত্যি এটাই, কলকাতা পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। এরপর অভিযুক্তদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তৎপরতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। শুধু তাই নয়, নির্যাতিতার বয়ানও নেওয়া হয়। তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়। অভিযুক্তদের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকেও অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশও স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম তৈরি করেছে তদন্তের স্বার্থে। এবং পুলিশের তৎপরতায় সন্তুষ্ট নির্যাতিতার পরিবারও। রাজ্য পুলিশের তদন্তে আস্থা প্রকাশ করছেন নির্যাতিতার অভিভাবক। তাঁদের মেয়ে বিচার পাবেন এই আশাও প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতার পরিবার। জাতীয় মহিলা কমিশন যখন এখানে এসেছিল তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেয় নির্যাতিতার পরিবার। এটাই হল আসল সত্যি। এবার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের কথা যদি বলতেই হয়, তাহলে এই টিমে যাঁরা আছেন বিপ্লব দেব, মনন মিশ্রা, সত্যপাল সিং, মীনাক্ষী লেখী, তাঁদের সত্যি কী? এঁরা ফাইভস্টার হোটেলে থাকবেন, খাবেন, গাড়ি নিয়ে আসবেন। বিপ্লব দেবের সত্যি কী? আপনাকে প্রশ্ন, আপনার আমলে কী ছিল? সংবাদমাধ্যমের কোনও স্বাধীনতা ছিল কি? সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে। খুন হয়েছে, ধর্ষণ হয়েছে আপনি কী করেছেন বিপ্লব দেব? এটাই তো আপনার রেকর্ড। আপনি এসেছেন সত্যি জানতে? সত্যপাল কী বলেছিলেন হাথরস কাণ্ডের সময়, মনে আছে? উনি বলেছিলেন, পুলিশ, রাজ্য সরকার এই ধর্ষণের ঘটনায় কী করবে? মীনাক্ষী সংসদে দাঁড়িয়ে বিপক্ষের এক সাংসদকে বলেছিলেন, চুপ করে বসুন। না হলে ইডি, সিবিআই পাঠাব। এটাই এঁদের রেকর্ড। আমরা এঁদের একটা প্রশ্ন করছি, কার্তিক মহারাজের কুকীর্তি নিয়ে ফ্যাক্ট খুঁজছেন না কেন? একইভাবে সরব হয়েছেন দলের সাংসদ সাগরিকা ঘোষও। বিজেপি রাজ্য মধ্যপ্রদেশে নারী নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরে একাধিক প্রশ্ন করেছেন তিনি। মধ্যপ্রদেশে ৭২৯৪টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২০২৪ সালে। প্রতিদিন গড়ে ২০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এই যখন পরিস্থিতি তখন মধ্যপ্রদেশ পুলিশের বক্তব্য, একা পুলিশের পক্ষে ধর্ষণ ঠেকানো সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে এনসিডব্লু এবং ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের মধ্যপ্রদেশ যাওয়ার কথা মনে পড়ে না? সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার মনে করিয়ে দিয়েছেন, আগরতলায় একটি আবাসনে একটি ৯ বছরের মেয়ের রহস্যময় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। গোটা শরীরে অসংখ্য আঘাত সমেত তাকে পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশ কেস করলেও বিজেপির বিপ্লব দেব কী করছিলেন? আর বাংলায় এসেছেন মিথ্যাচার করতে!
এই টিম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের নামে বিজেপি একটা রাজনৈতিক পর্যটকের দলকে এ-রাজ্যে পাঠিয়েছে। এর কোনও গুরুত্ব নেই। কারণ, যখন উন্নাও, হাথরস, প্রয়াগরাজ, দিল্লি, মণিপুর, ত্রিপুরা, বিলকিসের মতো ঘটনা ঘটে, বিজেপিশাসিত রাজ্যে নারী নির্যাতন, খুনের মতো ঘটনা যখন ঘটে তখন এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম, জাতীয় মহিলা কমিশন কোথায় থাকে? এই দলে আবার বিপ্লব দেবের মতো লোক রয়েছেন। তিনি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, এখনও তিনি ত্রিপুরার প্রতিনিধি। তাঁর আমলে ত্রিপুরায় কী কী ঘটেছে, কতগুলি নারী নির্যাতন, কতগুলি ধর্ষণ, কতগুলি হত্যা হয়েছে, সেই তিনি এসেছেন এখানে। কয়েক ঘণ্টা আগে ত্রিপুরায় এক ছাত্রীর ভয়ঙ্কর পরিণতির খবর এসেছে।

আরও পড়ুন-যা ঘটেছে তাই বলেছি : নির্যাতিতা, ধর্ষণের অভিযোগে থানায় তলব কার্তিক মহারাজকে

Latest article