নয়াদিল্লি : কোভিড যে জীবনে কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, সেই সত্য হাড়হিম ঘটনায় ফের বোঝাল দিল্লি। ফ্ল্যাটের জানলা-দরজা প্লাস্টিক দিয়ে সিল করে রান্নার গ্যাস খুলে আত্মঘাতী হলেন মা ও দুই মেয়ে। দিল্লির বসন্ত বিহারের (Delhi Vasant Vihar) কাছে এক অভিজাত আবাসন থেকে মিলেছে তিনজনের নিথর দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মরতে এতটাই মরিয়া ছিলেন এঁরা, যে ঘরকে প্রায় গ্যাস চেম্বারের ধাঁচে সাজিয়ে নিয়েছিলেন। ঘর থেকে মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও। মৃতদের নাম মঞ্জু দেবী(৫০), তাঁর দুই মেয়ে আংশিকা ও অঙ্কু।
আরও পড়ুন: নকল সার্টিফিকেট, ডিগ্রি, ওয়েবসাইট থেকে সাবধান !
স্বভাবতই দক্ষিণ দিল্লির বসন্ত বিহারের (Delhi Vasant Vihar) এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির ডিসিপি মনোজ সি জানিয়েছেন, বসন্ত বিহার থানায় একটি ফোন আসে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, ফ্ল্যাটটি ভিতর থেকে বন্ধ রয়েছে। তালা ভেঙে পুলিশ ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢোকে। ফ্ল্যাটে ঢুকে দেখতে পাওয়া যে সমস্ত দরজা, জানালা এবং ভেন্টিলেটর পলিথিন দিয়ে বন্ধ করা ছিল। রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটর ও নব ছিল খোলা এবং ঘরের মধ্যেই মৃতদের পাশে রাখা ছিল তিনটি ছোট মোমবাতি। কয়লাও জ্বালানো হয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, শ্বাসরোধেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান মঞ্জুদেবীর স্বামী। তারপর থেকেই পরিবারটি হতাশায় ভুগছিল। মঞ্জু দেবী নিজেও ভুগছিলেন। সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, দয়া করে ঘরে ঢুকে কেউ দেশলাই জ্বালবেন না। এতে আগুন লেগে যেতে পারে। খুবই বিষাক্ত গ্যাস… ভিতরে ভর্তি কার্বন মনোক্সাইড। এটা দাহ্য। ঘরে ঢুকে জানালা খুলে দেবেন এবং ফ্যান চালাবেন। গোটাটাই ইংরেজিতে লেখা। অতিমারির ছোবল যে কতটা সুদূরপ্রসারী, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন মঞ্জু দেবীরা।