কয়েক মাস আগেই পুরনিগমের ভোটে ছবিটা স্পষ্ট হয়েছিল। বাম-কংগ্রেস যখন রাস্তায় নেই, ত্রিপুরায় তখন প্রধান বিরোধী ও প্রকৃত বিকল্প হিসাবে উঠে আসছে তৃণমূল। মাত্র ২-৩ মাসের সংগঠনের পুরভোটে বাজিমাত করেছিল তৃণমূল। শূন্য থেকে শুরু করে ঘাসফুল প্রার্থীদের ভোট শতাংশ পৌঁছে গিয়েছিল গড়ে ২৫ শতাংশ। তারপর থেকেই অপশাসন, উন্নয়ন, বঞ্চনার রাজ্য ত্রিপুরার মানুষ তৃণমূলকে কেন্দ্র করে নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখায় বিভোর। স্বতঃস্ফূর্ত উন্মাদনা দেখা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে দেখেও।
আগামী ২৩ জুন গুরুত্বপূর্ণ চার কেন্দ্রে উপনির্বাচন। গত মঙ্গলবার প্রথম দফায় প্রচারে গিয়েই ঝড় তুলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০ তারিখ দ্বিতীয় দফায় সুরমা ও যুবরাজ নগর কেন্দ্রে প্রচারে যাবেন। যা নিয়ে এখন থেকেই উন্মাদনা তুঙ্গে তৃণমূল কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের।
কিন্তু অভিষেক সুরমায় পা রাখার আগেই ভয়াবহ সন্ত্রাস শুরু হয়েছে এলাকা জুড়ে। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা শুরু হয়েছে। রাতের সুরমাতে হামলা চালানো হয়েছে নিরীহ একটি পরিবারের সদস্যদের উপর। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার অপরাধেই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের এমন হামলা।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার উপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে অভিষেক টুইট করেন। এদিন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার একটি ভিডিও পোস্ট করে টুইটে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মানিক সাহা ত্রিপুরায় সন্ত্রাস দমনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, বাস্তবে ত্রিপুরা রাজ্যে ভয়াবহ রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত রয়েছে। ঠিক যেমনটি ছিল বিপ্লব দেবের শাসককালে। বিজেপির চরিত্রই সন্ত্রাসের এবং ত্রিপুরার জন্য জঘৃণ্যতম এজেন্ডা তারা পরিবর্তন করতে পারে না!”
After becoming the CM @DrManikSaha2, promised to curb lawlessness in Tripura.
Sadly, the reality of GRUESOME POLITICAL VIOLENCE in the state continues, as it was during @BjpBiplab‘s rule.
BJP’s CHARACTERISTIC of violence & nefarious agendas for Tripura CAN NOT CHANGE! pic.twitter.com/A1lYGZXSQy
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) June 16, 2022
প্রসঙ্গত, বিপুল দেবকে সরিয়ে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ত্রিপুরায় মানিক সাহাকে এনেছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর মানিক সাহা রাজ্যের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা যে ভাঁওতাবাজি ছিল, তা প্রমাণ হয়ে গেল সুরমার বঘটনার পরে। ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে বদ্ধপরিকর হিসেবে দাবি করা মানিক সাহাও যে ব্যর্থ তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রাজ্যের মানুষ। আসলে এ যেন নতুন বোতলে পুরোনো মদ!
অন্যদিকে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ৬ জন সাংসদ দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে একটি স্মারকলিপি জমা দিতে যান। গতকাল রাতে ত্রিপুরায় বিজেপির নারকীয় ধ্বংসলীলা চালানোর ঘটনার প্রতিবাদে এই স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। প্রতিনিধিদলে ছিলেন, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, জহর সরকার, প্রতিমা মণ্ডল, লুইজিনহো ফেলারিও এবং নুসরত জাহান।