করফাঁকি দিতে প্রয়াত স্ত্রীকে নিজের গলফ কোর্সে সমাহিত করে ‘কবরস্থান’ দেখালেন ট্রাম্প! বিতর্ক

কেউ বলছেন কূট ব্যবসায়িক বুদ্ধি। কারও মতে, অর্থলোলুপ লোক। এক সিদ্ধান্তের জেরে এভাবেই নিজের দেশে নিন্দার মুখে পড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Must read

প্রতিবেদন : কেউ বলছেন কূট ব্যবসায়িক বুদ্ধি। কারও মতে, অর্থলোলুপ লোক। এক সিদ্ধান্তের জেরে এভাবেই নিজের দেশে নিন্দার মুখে পড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কর ফাঁকি দিতে প্রয়াত স্ত্রীকেও ছাড়লেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের প্রথম স্ত্রী ও তাঁর তিন সন্তানের মা ইভানা মারি ট্রাম্প ২০২২-এর জুলাই মাসে ম্যানহ্যাটনের বাড়িতে মারা যান। ৭৩ বছর বয়স হয়েছিল ট্রাম্পের প্রথম স্ত্রীর। এক সময়কার নামী মডেল ইভানা ছিলেন চেক-মার্কিন নাগরিক। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। ১৯৯২ সালে শেষ হয় দাম্পত্য। যদিও পরেও তাঁদের মধ্যে নানা অনুষ্ঠানের সূত্রে দেখা সাক্ষাৎ হত। রিয়েলিটি শো সঞ্চালনা ও বই লেখার মতো নানা কাজে যুক্ত ছিলেন ট্রাম্পের প্রথম স্ত্রী। ’২২ সালে এক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যুর পর ইভানাকে কোনও সরকারি বা বেসরকারি সমাধিক্ষেত্রে সমাধিস্থ করা হয়নি, সাধারণত যা হয়ে থাকে। অদ্ভুতভাবে নিউজার্সিতে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত গলফ কোর্সে সমাহিত করা হয় প্রথম স্ত্রীর মৃতদেহ। সেখানেই এখনও ঘাস-আগাছার মধ্যে অনাড়ম্বরভাবে রয়েছে ইভানার সমাধি। পাশে কোনও বেদি বা ঘেরাটোপ নেই। ধূসর একটি ফলকে তাঁর পরিচিতি ও পাশে কয়েক গোছা ফুল। প্রথম দিকে আমেরিকাবাসীদের মনে হয়েছিল প্রাক্তন পত্নীর প্রতি আবেগবশতই ব্যক্তিগত গলফ কোর্সে তাঁকে সমাধিস্থ করেছেন ট্রাম্প। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে যে ধুরন্ধর ব্যবসায়ী ট্রাম্পের কূট-উদ্দেশ্য কাজ করছে তা বোঝা যায় পরে। এরপরই ইভানার সমাধিস্থলের স্থান-নির্বাচন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিসন্ধি প্রশ্নের মুখে।

আরও পড়ুন-রবীন্দ্রনাথ-নেতাজির ভাষা বললেই কেন অপমান? প্রশ্ন তৃণমূলের

একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যমের অন্তর্তদন্ত সূত্রে উঠে আসে তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য। দেখা যায় নিউজার্সির নিয়ম অনুসারে ব্যক্তিগত গলফ কোর্সকে কবরস্থান হিসেবে নথিভুক্ত করতে পারলে সেটি পুরোপুরি করমুক্ত হবে। পাশাপাশি খামার হিসেবে দেখাতে পারলেও কর কমবে। তাই এখন ট্রাম্পের ব্যক্তিগত গলফ কোর্সে প্রয়াত প্রথম স্ত্রীর অনাড়ম্বর সমাধির কাছাকাছি একটি জায়গায় খড়ের ছাউনি দিয়ে কয়েকটি ছাগল রেখে দেওয়া হয়েছে। যাতে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি আইনের ফাঁক বাঁচিয়ে পুরোপুরি করমুক্ত করেছেন ট্রাম্প। এই দুই মানদণ্ডে তাঁর বার্ষিক করের বোঝা ৮৮ হাজার ডলার কমেছে। প্রতি একর জমির জন্য যেখানে ৪৬২ ডলার দেওয়ার কথা সেখানে ট্রাম্পের সংস্থাকে দিতে হচ্ছে মাত্র ৬ ডলার। সব মিলিয়ে ব্যক্তিগত শোকের মোড়কে প্রয়াত স্ত্রীর সমাধিক্ষেত্রকেও করফাঁকির হাতিয়ার করেছেন আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট। তাঁর এই ‘হীন’ উদ্দেশ্য সামনে আসতেই মার্কিন মুলুকেই নিন্দার ঝড়। প্রশ্ন উঠছে, যে সময় অন্য বহু দেশের উপর কথায় কথায় শুল্ক আরোপ করছেন ট্রাম্প তখন ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষায় নানা অজুহাতে করফাঁকি দিচ্ছেন তিনি নিজেই।

Latest article