প্রতিবেদন: ক’দিন পরই আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মসনদে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগেই মার্কিন মুলুকের ভৌগোলিক সীমানা বৃদ্ধি নিয়ে তাঁর গোপন অভিপ্রায় সুযোগ পেলেই সামনে আনছেন ট্রাম্প। কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়িয়ে যে দুটি দেশের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেওয়ার স্বপ্ন তাঁর, সেগুলির মধ্যে একটি উত্তর আমেরিকার অন্যতম দেশ কানাডা। আর দ্বিতীয়টি হল ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড।
আরও পড়ুন-জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিতে প্রস্তাব সংস্কার কমিশনের
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড কেনার বিষয়ে নতুন করে আগ্রহ প্রকাশের পরই চর্চায় এসেছে গ্রিনল্যান্ডের মূল্যনির্ধারণের ইস্যুটি। সম্প্রতি ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলটির মূল্যনির্ধারণ করেছেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ ডেভিড বার্কার। আর এই সূত্রেই আগামীদিনে কোন পথে হাঁটবেন ট্রাম্প, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু। ঘটনা হল, গ্রিনল্যান্ড কেনার বিষয়ে ট্রাম্পের আগ্রহ নতুন নয়। প্রেসিডেন্ট হিসাবে আগের পর্বেও ২০১৯ সালে তিনি এই প্রস্তাব দেন। অবশ্য তারও অনেক আগে থেকেই ডেনমার্কের অন্তর্গত ৭ লক্ষ ৭২ হাজার বর্গকিলোমিটারের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড কেনার চেষ্টা চালায় আমেরিকা। সেজন্য আকর্ষণীয় নানা টোপ দেওয়া হয়। এবারও ভূরাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ গ্রিনল্যান্ড কেনার যুক্তি হিসাবে প্রতিরক্ষার কারণটিকে তুলে ধরেছেন ট্রাম্প। রাশিয়া আর চিনের বিরুদ্ধে নিজেদের সামরিক শক্তি জোরদার করতে প্রচুর ধাতব সম্পদে পরিপূর্ণ গ্রিনল্যান্ড সেরা বাজি হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। ১৯৪৬ সালে প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ডেনমার্ককে ১০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের স্বর্ণ দিয়ে এই দ্বীপটি কেনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে সেই প্রস্তাব ডেনমার্ক প্রত্যাখ্যান করে। এবারও নতুন করে মূল্যনির্ধারণের অঙ্ক তুলে ধরে সেই সম্ভাবনাকে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর আগে লুইজিয়ানা, আলাস্কা এবং ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডস কিনেছে। মার্কিন অর্থনীতিবিদ ডেভিড বার্কারের মতে, যদি গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন প্রতিরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ধরা হয়, তবে এর মূল্য আরও বৃদ্ধি পাবে। তাঁর অভিমত, গ্রিনল্যান্ডের মূল্য হতে পারে ১২.৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ৭৭ বিলিয়নের মধ্যে। গ্রিনল্যান্ডের সম্পদের মূল্য ১.১ ট্রিলিয়ন ডলার হতে পারে। যদিও একইসঙ্গে তিনি মনে করেন, গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদের পূর্ণ সুবিধা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাবে না, কারণ কোম্পানিগুলি ড্রিলিং এবং মাইনিংয়ের অধিকার কিনবে এবং তাদের নিজস্ব ব্যয় ও লাভ যোগ করবে। অবশ্য সব সম্ভাবনাই ভবিষ্যতের গর্ভে। ট্রাম্পের স্বপ্ন নিয়ে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউট বোউরুপ এগেডে সাফ জানিয়েছেন, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় এবং তা কখনও বিক্রি হবেও না।