প্রতিবেদন : ছ’মাস আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ‘বন্ধু’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ইউএসএআইডি থেকে ২১ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে। এই অস্বস্তিকর তথ্য সামনে আসার পর এবার ভারতের বিদেশমন্ত্রক পাল্টা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের বক্তব্য, ট্রাম্পের এই দাবির সারবত্তা নেই। পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রক মার্কিন দূতাবাসের তথ্য উল্লেখ করে জানিয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ভারত বা ইউএসএআইডি দ্বারা এমন কোনও তহবিল গ্রহণ বা প্রদান করা হয়নি। পাশাপাশি ভারত সরকারের সঙ্গে ইউএসএআইডি-এর স্বাক্ষরিত সাতটি ‘পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট’ ১৫ অগাস্ট থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন-সুশাসন আর দুর্নীতি দমনের নামে আক্রান্ত গণতন্ত্র, ছায়াপাত জরুরি অবস্থার
দ্বিতীয় দফায় ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মার্কিন প্রশাসন পরিকল্পিতভাবে ইউএসএআইডি বা ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে। সেদেশের করদাতাদের অর্থায়নে পরিচালিত এই সাহায্যে মার্কিন ব্যয়কে সুবিন্যস্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে প্রকল্পটি প্রায় অচল করে দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে ট্রাম্প ইউএসএআইডির প্রকল্পে ব্যাপক কাটছাঁট করার মাঝে মন্তব্য করেছিলেন যে ভারতে এই সংস্থার ২১ মিলিয়ন ডলারের অনুদান অন্য কাউকে নির্বাচিত করার জন্য ছিল। এই মন্তব্য শুনে বিজেপি সমর্থকরা বলতে শুরু করেন, এই অর্থের সম্ভাব্য প্রাপক ছিল কংগ্রেস। কিন্তু এর কয়েকদিন পর ট্রাম্প যখন তাঁর বক্তব্য পরিবর্তন করে বলেন যে এই অর্থ আমার বন্ধু, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য দেওয়া হয়েছে, তখন মুখ পোড়ে গেরুয়া শিবিরের। বিরোধী দলগুলিও এবিষয়ে তদন্তের দাবি জানাতে থাকে। এবারের সংসদ অধিবেশনে কেরলের এক সাংসদ বিদেশমন্ত্রককে এই বিষয়ে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। জানতে চান ইউএসএআইডি-এর তহবিল ভারতীয় নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয় কি না, গত তিন বছরে ভারতে ইউএসএআইডি প্রকল্পের ব্যয়ের বিবরণ এবং এনজিও ও ব্যক্তি সহ ইউএসএআইডি তহবিলের পরিমাণ। এর জবাবে বিদেশমন্ত্রক ট্রাম্পের দাবিকেই অসত্য বলে উল্লেখ করেছে। মার্কিন দূতাবাস ২১ মিলিয়ন ডলারের অর্থপ্রদান সম্পর্কে যা বলেছে তা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ইউএসএআইডি ২০১৪ থেকে ২০২৪ অর্থবছরের মধ্যে ভারতে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ২১ মিলিয়ন ডলারের কোনও তহবিল গ্রহণ বা প্রদান করেনি, এবং এর মাধ্যমে ভারতে ভোটার উপস্থিতি সংক্রান্ত কোনও কার্যক্রমও নেওয়া হয়নি।