প্রতিবেদন : বেনজির বিপর্যয়ের পর উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, জোশীমঠে সমস্ত নির্মাণকাজ, জাতীয় সড়কের কাজ এবং এনটিপিসির নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হচ্ছে। অথচ সেই নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জোশীমঠে এখনও রাতের অন্ধকারে ভারী মেশিন দিয়ে পাহাড় কাটা হচ্ছে। বেশ কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা যাচ্ছে মেশিনের ভারী আওয়াজ। ভূমিধসের মাঝে পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গ খননের এই তৎপরতা আরও মারাত্মক ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা। বুধবার এক সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে পাহাড়ে সুড়ঙ্গ খননের ভিডিও দেখানো হয়েছে। জোশীমঠের জনপদ যেখানে প্রতিদিনই তলিয়ে যাচ্ছে, যেখানে সব নির্মাণকাজে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেখানে পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে এই কাজ হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিপর্যয় রুখতে ব্যর্থতার পর নজরদারির ক্ষেত্রেও বিজেপি সরকারের এই গাফিলতি নিয়ে সমালোচনায় সোচ্চার রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষ।
আরও পড়ুন-‘কাল বিবেকানন্দের জন্মদিনে গঙ্গা আরতির প্রস্তুতি শুরু হবে’, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
এদিকে পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ জোশীমঠের মানুষ। রাজ্য সরকার এদিনই ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকদের প্রতি মাসে ৪ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছে। বাড়ি পুরো ভেঙে গিয়েছে এমন ১০টি পরিবারকে ১.৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় মানুষের প্রতিরোধের কারণে বুধবারও প্রশাসন বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভাঙার কাজ শুরু করতে পারেনি। হোটেল ভাঙার নির্দেশে ক্ষুব্ধ হোটেল মালিকদের স্বজনরা এদিন ধরনায় বসেছেন। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের আরও আগে নোটিশ দেওয়া উচিত ছিল। তাঁদের ক্ষতিপূরণের কোনও অশ্বাস না দিয়েই হোটেল ভাঙা হচ্ছে। আরও একধাপ এগিয়ে, হোটেল মালারি ইন-এর মালিক ঠাকুর সিংহ রানা জানান, ক্ষতিপূরণ না পেলে তিনি গায়ে আগুন লাগিয়ে সপরিবারে আত্মহত্যা করবেন।
আরও পড়ুন-গুরুগ্রামে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডের জেরে পুড়ে ছাই কমপক্ষে ৫০টি ঝুপড়ি
বুধবার সকাল পর্যন্ত জোশীমঠের ৭৩১টিরও বেশি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। শহরের রাস্তা, মন্দির এমনকী, জমিতেও ফাটল ধরেছে। মাটির তলা থেকে আসছে অদ্ভুত সব শব্দ। বাড়ি ধসে যাওয়ার আতঙ্কে এই শীতে রাতারাতি ভিটেমাটি ছাড়া শহরের বহু মানুষ। ঠাঁই নিয়েছেন আশ্রয় শিবিরে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৩১টি পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে। চামোলি জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেছেন, তাঁরা জোশীমঠের পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছেন। এলাকার যে সমস্ত বাড়ি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে সেই সমস্ত বাড়ির লোকজনকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়াকেই তাঁরা অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর তত্ত্বাবধানে শীঘ্রই হোটেলগুলি ভেঙে ফেলা হবে।