প্রতিবেদন : ভোট শেষের পরে এবার বুথ ফেরত সমীক্ষার নামে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কুৎসা-অপপ্রচার শুরু হয়েছে। বাংলার চ্যানেলগুলি তাদের এজেন্ডা অনুযায়ী সমীক্ষার নামে বেশিরভাগই বিজেপিকে এগিয়ে রেখেছে। কেউ বলছে, বিজেপি ২৩ থেকে ২৭টি পাচ্ছে। তৃণমূল পাচ্ছে ১৭টি। আবার কোনও চ্যানেল বলছে তৃণমূল পাচ্ছে ২৪টি। গোটা ভোট পর্বে বিজেপি তার সবরকম মেশিনারি দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল। সেই ধারা অব্যাহত রইল ভোট মিটে যাওয়ার পরও। বাংলার ৪২টি কেন্দ্রের মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের লোকসভা কেন্দ্র ধরে ধরে ব্যাখ্যা, হার-জিতের হিসেব কষা হয়েছে। আর সেখানেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বিজেপির ধ্বজা তুলে ধরতে কতটা মরিয়া মিডিয়ার একাংশ! এই বুথ ফেরত সমীক্ষা দেখার পর উন্মাদের প্রলাপ বলে চর্চা শুরু হয়েছে বাংলা জুড়ে।
আরও পড়ুন-ফের ভাইজান সলমনকে খুনের চক্রান্ত! খামারবাড়ির কাছে ধৃত ৪ বন্দুকবাজ
এরই মধ্যে জাতীয় স্তরে চর্চায় রয়েছে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক। আগামী কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে জোট শরিকরা শনিবার বৈঠকে বসেছিলেন। প্রায় আড়াই মাসের ভোট পর্বে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততা, উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ— মানুষের উৎসবের মেজাজে ভোট দেওয়া, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা, রোড-শোগুলিতে জনসুনামি হওয়া, এইসব ঘটনাকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনেনি। বাছাই করা কয়েকটি সংস্থাকে দিয়ে কিছু স্যাম্পল টেস্টের মতো করে নেওয়া এই বুথফেরত সমীক্ষা বা একজিট পোল দেখলেই বোঝা যায়, কত কুৎসিতভাবে বিজেপিকে নম্বর গেমে এগিয়ে রাখার মরিয়া চেষ্টা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচার পর্বে জনসভায়, রোড-শোয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছেন, ২০১৯ সালে তৃণমূল যে আসন লোকসভায় পেয়েছিল তার থেকে ২০২৪-এ বেশি আসন পাবে। ষষ্ঠ দফার ভোট শেষে তিনি বলেছিলেন, ৩৩-এর মধ্যে ২৩টি আসন ইতিমধ্যেই তৃণমূলের হয়ে গিয়েছে। সপ্তম দফায় তৃণমূল যা পাবে সেটাই বোনাস। তবে সপ্তম তথা শেষ দফা ভোটের পরে এ-কথা বলাই যায়, তৃণমুল পক্ষে ৯-এ ৯ হবে বিষয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই।
সংবাদমাধ্যমের একাংশ যে বিজেপির হাতের পুতুল একথা বহুবার বলেছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপির কথা অনুযায়ী যে তাদের খবরের দিক পরিবর্তনও নির্দিষ্ট করা হয় তাও কারও অজানা নয়। স্বাভাবিকভাবেই বুথ ফেরত সমীক্ষায় বিজেপিকে এগিয়ে রাখাটা যে তাদের ‘হিডেন এজেন্ডার’ মধ্যেই পড়বে তাতে আর আশ্চর্যের কী!
আরও পড়ুন-৫৭ লোকসভা আসনে ভোট পড়ল ৫৮.৩ শতাংশ, সপ্তমপর্বেও ভোটের হারে, দেশের সেরা বাংলাই
ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। গোটা ভোট পর্ব দেখে যেখানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বহিরাগত বাংলা বিরোধীদের এবার বিসর্জন দিয়েছেন মানুষ, সেখানে তাদেরকে একেবারে মাথায় তুলে নাচতে শুরু করেছে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। আবার সতর্কবার্তার মতো এই বাণী শুনিয়ে রাখা হয় যে বুথ ফেরত সমীক্ষা দিয়ে কিছু বোঝা যায় না। তা মিলতেও পারে, নাও মিলতে পারে। সাম্প্রতিক অতীতে দেখা গিয়েছে এই ধরনের বুথ ফেরত সমীক্ষা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেলেনি। বরং যা দেখানো হয়েছে তার উল্টোটাই হয়েছে। ২০২১-এর স্মৃতি এখনও টাটকা এক্ষেত্রে। তাই পরিশেষে এটুকুই বলা যায়, বাংলা তৃণমূলের ছিল, আছে, থাকবে। বাংলার মানুষ তাদের ঘরের মেয়েকেই চায়। তৃণমূল কংগ্রেসকেই চায়। বহিরাগত বাংলা-বিরোধীদের এখানে কোনও জায়গা নেই।