বেহারাদের কাঁধে চেপেই কৈলাসে পাড়ি দেন উমা

বোধন তলার চারপাশে তাঁকে দেখা যেত শ্যামাসঙ্গীত গাইতে। এই ইতিহাসকে জড়িয়েই শুরু হয়েছিল শিকরা কুলীন গ্রামে দুর্গাপুজো।

Must read

রাহুল রায়: শৈশবকালে অন্যান্য ছেলেমেয়েরা যখন নানান ধরনের খেলায় মেতে উঠত, ঠিক তখনই শিকরা কুলীন গ্রামের বাসিন্দা আনন্দমোহন ঘোষ এবং হেমাঙ্গিনী দেবীর একমাত্র পুত্রসন্তান রাখালদাস ঘোষ মেতে উঠতেন পূজা পূজা খেলায়। বোধন তলার চারপাশে তাঁকে দেখা যেত শ্যামাসঙ্গীত গাইতে। এই ইতিহাসকে জড়িয়েই শুরু হয়েছিল শিকরা কুলীন গ্রামে দুর্গাপুজো। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, জব চার্নক তখন সবে ক্যালকাটার পত্তন ঘটিয়েছেন। সালটা ১৭০০। তখনই বসিরহাটের শিকরা কুলীন গ্রামে গোল পাতায় হাওয়া মাটির আটচালায় দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু হয়। এই আরাধনা করতে শুরু করেন দেবিদাস ঘোষ। পরবর্তীকালে কালীপ্রসাদ ঘোষ পাঁচখিলানযুক্ত পাকা দুর্গা দালান তৈরি করেন। এরপর থেকে সেখানেই দেবী দুর্গার আরাধনা হচ্ছে। ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন রাখালদাস ঘোষ। যিনি পরবর্তীকালে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের মানস পুত্র এবং স্বামী বিবেকানন্দের গুরুভাই হিসেবে পরিচিত হন। তখন তাঁর নাম হয় স্বামী ব্রহ্মানন্দ। শৈশবকাল থেকেই ব্রহ্মানন্দ দুর্গাদালানে দেবীর রূপ দেখে ধ্যানে মগ্ন হতেন। নিজের জন্মভূমিতে প্রতিষ্ঠা করেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন। মৃত্যুর আগে তিনি বলে গিয়েছিলেন এ পুজো যেন বন্ধ না হয়। সেই থেকে যাবতীয় প্রথা মেনে চলে আসছে দুর্গাপুজো।

আরও পড়ুন-প্রেরণা মুখ্যমন্ত্রী, আবারও থিম সং লিখলেন চন্দ্রিমা

কালের নিয়মে বাড়ির সদস্যরা এখন দেশে- বিদেশে ছড়িয়ে রয়েছেন পেশার খাতিরে। কিন্তু এই পুজোর ক’টা দিন সকলেই ফিরে আসেন বাড়িতে। মহালয়ার পর প্রতিপদে পুজোর দেবী ঘট প্রতিষ্ঠিত হয়। ষষ্ঠীতে হয় বোধন অষ্টমীর দিন ভক্তদের জন্য লুচির আয়োজন করা হয়। এরপর দশমীতে কাহার সম্প্রদায়ের বেহারাদের কাঁধে চেপে মা পাড়ি দেন কৈলাসে। তারপর আবার একটা বছরের অপেক্ষা উমার বাপের বাড়িতে ফেরার।

ছবি : সৌমাভ মণ্ডল

Latest article