বাংলার সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গদাতা কলকাতার উমঙ্গ (Umang)। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কিডনির অসুখের সাথে লড়াই করার পর, অবশেষে কলকাতার ১২ বছর বয়সী উমঙ্গ গালাদার এই মাসের শুরুতে কিডনি প্রতিস্থাপন হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারের কয়েক ঘন্টা পরেই হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে তাঁর ব্রেন ডেথ হয়। তাঁর বাবা-মা প্রথমদিকে আশায় বুক বেঁধেছিলেন। তারপর মনবল বাড়িয়ে সিদ্ধান্ত নেন যে তাদের সন্তান যিনি শিক্ষাক্ষেত্রে অসাধারণ ও একজন পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা তাঁর মৃত্যুর পরেও সমাজে উদাহরণ হয়ে বেঁচে থাকবে। উমঙ্গের বাবা-মা তার লিভার এবং কর্নিয়া দান করেছেন। মৃত্যুর পরে উমঙ্গ একজনের জীবনদাতা হয়েছেন এবং আরও দুজনকে দৃষ্টিশক্তি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন-কিস্তওয়ারে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত এক জওয়ান
সাউথ সিটি ইন্টারন্যাশনালের অষ্টম শ্রেণীর এই ছাত্র চিন্তাশীল এক মানুষ ছিলেন। পরিবার তরফে জানানো হয়েছে যে তিনি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এবং এর জন্য পুরষ্কার পেয়েছেন। তাঁর বারো বছরের জীবনে, উমঙ্গ মনের মত করে জীবনযাপন করেছিলেন। প্রাণবন্ত এই কিশোর অল্প দিনের জীবনে চারপাশের প্রতিটি মানুষের উপর একটি ছাপ রেখে গেছেন। অসীম কৌতূহল সহ একটি উজ্জ্বল মন ছিল তাঁর। পড়াশোনায় ভাল হওয়া ছাড়াও তবলা বাজানো, যান্ত্রিক মডেল তৈরি করা, এআই-ভিত্তিক গেম কোড করা, রান্না করা তাঁর শখ ছিল।
আরও পড়ুন-ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রার পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি
উমঙ্গের মা, জ্যোতি, তাঁর কিডনি দান করার প্রস্তাব দেন। ১৫ মে অস্ত্রোপচার ঠিকঠাক হয়েছিল, কিন্তু উমঙ্গ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়, যার ফলে তাঁর মৃত্যু হয়। উমঙ্গের বাবা উজ্জ্বল, এনজিও ইন্ডিয়া অটিজম সেন্টারে কর্মরত। তিনি জানান সপ্তাহে তিনবার ডায়ালাইসিসের কঠিন রুটিন সহ্য করার পরেও, উমঙ্গ নিস্তেজ হয়ে পড়েনি। তার ইতিবাচকতা এবং অদম্য মনোবল অনুপ্রেরণা ছিল সকলের জন্যই।