দোহা, ১১ জুন: ভারতীয় ফুটবল দলের মাথার উপর থেকে সরে গিয়েছিল সুনীল ছেত্রীর মতো মহীরুহ। ইতিহাস গড়ার লক্ষ্য নিয়ে দোহা পাড়ি দিয়েছিল সুনীলহীন ভারত। কিন্তু লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতের গোলে এগিয়ে থেকে দুরন্ত লড়াই করেও রেফারির চরম ভুলে শেষ রক্ষা হল না। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের তৃতীয় রাউন্ডের আগেই স্বপ্নভঙ্গ ভারতের। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বিদায়ের পথে কোচ ইগর স্টিমাচও।
আরও পড়ুন-এপ্রিল থেকে বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা পাবেন সব সরকারি কর্মচারীরাই
ভারতের ব্যর্থতার থেকেও বড় হয়ে দাঁড়াল রেফারি ও লাইন্সম্যানের অপদার্থতা। কাতারকে সম্পূর্ণ অন্যায্য একটি গোল দিয়ে কার্যত ভারতের স্বপ্ন চুরি করা হল। গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধু বল বাঁচাতে গেলে তা পোস্টের পাশ দিয়ে মাঠের সীমানা পেরিয়ে বাইরে গেলেও কাতারি ফুটবলার আইমেন বল মাঠে ঢুকিয়ে জালে জড়িয়ে দেন। ভারতীয় ফুটবলারদের প্রতিবাদে কর্ণপাত করেননি রেফারি, লাইন্সম্যান। আইমেনের এই গোলেই ম্যাচে সমতা ফেরানোর পর আল রাউয়ি কাতারের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন। এগিয়ে থেকেও ১-২ গোলে হার ভারতের। খেলা শেষেও গুরপ্রীত, সাহাল আব্দুল সামাদরা রেফারির একাধিক সিদ্ধান্তের প্রতিপাদ করতে থাকেন। ম্যাচ শেষে ভারতীয় শিবিরের ক্ষোভ, অন্যায্য গোলটি না দেওয়া হলে কাতার দ্বিতীয় গোল করার সুযোগ পেত না। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের মতো প্রতিযোগিতায় কেন এই মানের রেফারিং, কেন ভিএআর প্রযুক্তি থাকবে না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কেন ভার নেই, ফিফা এবং এএফসি-তে রেফারিং নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাতে চলেছে ফেডারেশন।
আরও পড়ুন-যোগ্যশ্রীতে সুযোগ সংখ্যালঘু-সাধারণ মানুষেরও
হেরে যাওয়ায় প্ৰথমবার বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে ইতিহাস গড়া হল না সাহালদের। ‘এ’ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হয়ে পরের পর্বে যেতে হলে কাতারকে হারাতেই হত। ড্র করলেও সুযোগ থাকত। তখন কুয়েত ও আফগানিস্তানের মধ্যে ম্যাচও ড্র দরকার ছিল। কিন্তু তা হয়নি। কুয়েত জেতায় ৮ পয়েন্ট নিয়ে তারা ভারত, আফগানিস্তানকে পিছনে ফেলে তৃতীয় রাউন্ডে উঠল।
সুনীল ছেত্রী উত্তর ভারত গত দু’বারের এশিয়া চ্যাম্পিয়ন কাতারের অনভিজ্ঞ তরুণ দলের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় তুলে আনতে পারে কি না, তা দেখার অপেক্ষায় ছিলেন ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরা। বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধে দাপট দেখিয়েছে ভারত। কাতারের আক্রমণ রুখে পাল্টা আক্রমণ শানিয়ে প্রতিপক্ষ রক্ষণকে সমস্যায় ফেলেছে স্টিমাচের ছেলেরা।
বিপক্ষ গোলকিপারকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি পাঞ্জাবি স্ট্রাইকার। সুযোগ নষ্ট করেন ব্রেন্ডন, ছাঙতে, জিকশনরাও। যদিও ৩৭ মিনিটে বহুকাঙ্ক্ষিত সেই গোলটি করেন ছাঙতেই। বাঁ-পায়ের শটে কাতারের গোলকিপারকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন মিজো উইঙ্গার।
আরও পড়ুন-বিজেপি-কমিশনের চক্রান্তে থমকে ছিল উন্নয়ন, এবার সময় বেঁধে কাজ
১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ভারত। তবে পিছিয়ে পড়ে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে কাতার। দ্রুত তিনটি পরিবর্তন করে ফ্রেশ লেগ নামান কোচ। রক্ষণ জমাট রেখে কাতারের আক্রমণ সামাল দেন মেহতাব, আনোয়াররা। সাহাল, লিস্টন কোলাসো, এডমুন্ড, বিক্রমপ্রতাপ সিংদের নামিয়ে আক্রমণ ও রক্ষণে ভারসাম্য আনতে চেয়েছিলেন স্টিমাচ। কিন্তু ৭৩ ও ৮৫ মিনিটে দু’টি গোল ভারতের স্বপ্নে জল ঢেলে দেয়।