প্রতিবেদন : মোদি সরকারের উন্নয়নের ফানুস ফাঁসিয়ে দেওয়ার জেরে বরখাস্ত হলেন ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পপুলেশন সায়েন্সের ডিরেক্টর (International Institute for Population Sciences) কে এস জেমস (K.S. James)। বছরের পর বছর ধরে মিথ্যা উন্নয়নের গালভরা ভাষণ দিয়ে চলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উজ্জ্বলা যোজনা, স্বচ্ছ ভারত মিশন-এর মতো প্রকল্পগুলির রিপোর্টের আসল তথ্য বেরিয়ে এল কেন্দ্রেরই স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে-৫ এর সমীক্ষা রিপোর্টে। রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমত শোরগোল পড়ে যায় সরকারি মহলে। দ্রুত ধামাচাপা দিতে এরপরই বরখাস্ত করা হল ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পপুলেশন সায়েন্সের ডিরেক্টর কে এস জেমসকে (K.S. James)। মোদি সরকারের তরফে শুক্রবার সন্ধ্যায় জেমসকে ধরানো হল বরখাস্তের চিঠি। আগামী বছর দেশের লোকসভা নির্বাচন। তার আগে সরকারের ভাবমূর্তি যাতে ক্ষুন্ন না হয় তার জন্য স্বাধীন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির থেকে সরকারের প্রশংসা সূচক সমীক্ষা রিপোর্ট আশা করেছিল কেন্দ্র। তবে সেই আশায় জল ঢেলে দেয় ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে-৫।
স্বচ্ছ ভারতের ভাঁওতা : একদিকে যখন দেশের স্বচ্ছ ভারতের গালভরা গল্প শুনিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী সেখানেই বাস্তব রিপোর্ট বলছে, দেশে ১৯ শতাংশ পরিবার শৌচালয় ব্যবহার করেন না। ব্যতিক্রম শুধু কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষ্মাদ্বীপ।
আরও পড়ুন-টিম ইন্ডিয়া আজ মণিপুরে
উজ্জ্বলা যোজনার ভাঁওতা : রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের ৪০ শতাংশ পরিবার রান্নার জন্য এখনও কাঠ ও উনুনের ওপর নির্ভরশীল। গ্রামাঞ্চলে ৫৭ শতাংশ মানুষ রান্নার গ্যাস ব্যবহার করেন না। অর্থাৎ নরেন্দ্র মোদির উজ্জ্বলা যোজনার ভাঁওতা প্রকাশ্যে এনেছে এই রিপোর্ট।
মহিলা স্বাস্থ্য : দেশজুড়ে ভয়াবহ ভাবে বাড়তে শুরু করেছে রক্তাল্পতা রোগ। মূলত মহিলারাই এই অসুখে সর্বাধিক আক্রান্ত। পরবর্তী স্বাস্থ্য সমীক্ষায় দেশের মানুষের অ্যানিমিয়ার পরিমাপ বাতিলের তালিকায় রাখা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনে থাকা আইআইপিএস-এর এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার সন্ধ্যায় বরখাস্তের চিঠি ধরানো হয় সংস্থার প্রধান কে এস জেমসকে। উল্লেখ্য, হার্ভার্ড সেন্টার ফর পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট থেকে পোস্টডক্টরাল ডিগ্রি প্রাপ্ত এই আধিকারিক আইআইপিএস-এ যোগদানের আগে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি যোগ দেন আইআইপিএস-এ। কিন্তু তাঁর সমীক্ষা রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যাওয়ায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মিথ্যাচারের মুখোশটা খুলে দিয়েছে। কেন্দ্র এখন জবাব দিতে হবে, এই তথ্য ঠিক না ভুল? কেন কোনও কারণ ছাড়াই তড়িঘড়ি বরখাস্ত করা হয়েছে অধিকর্তা জেমসকে। তবে রিপোর্টে পরিস্কার বিজেপির দশ বছরে দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ।