নির্বিঘ্নে গঙ্গাসাগর, পুণ্যস্নানে ১.১০ কোটি পুণ্যার্থী

কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বিঘ্নে মিটল গঙ্গাসাগর মেলা। রেকর্ড পরিমাণ পুণ্যার্থীদের ভিড় সামাল দিয়েছে প্রশাসন।

Must read

সংবাদদাতা, গঙ্গাসাগর : কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বিঘ্নে মিটল গঙ্গাসাগর মেলা। রেকর্ড পরিমাণ পুণ্যার্থীদের ভিড় সামাল দিয়েছে প্রশাসন। ভিড়ের প্রেক্ষিতে গতবারের রেকর্ডকেও ভেঙে দিয়েছে এবারের গঙ্গাসাগর মেলা। বুধবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ১ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ১০ লক্ষ তীর্থযাত্রী এসেছেন সাগরে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুণ্যার্থী এসেছেন উত্তরপ্রদেশ, বিহার, হরিয়ানা থেকে। এমনকী প্রতিবেশী দেশ নেপাল থেকেও এবার পুণ্যার্থী এসেছেন। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি মাঘী পুর্ণিমা পর্যন্ত পুণ্যস্নান চলবে। সুতরাং এখনও কয়েক লক্ষ তীর্থযাত্রী গঙ্গাসাগরে আসবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সুজিত বসু, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, পুলক রায়, মানস ভুঁইয়া, বঙ্কিম হাজরা, সাংসদ বাপি হালদার, প্রাক্তন সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী, জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত-সহ অন্যরা।

আরও পড়ুন-‘ভুয়ো’ ডিগ্রি, এমসিআইয়ের রোষানলে নাইয়া

মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত কয়েক লক্ষ মানুষ সাগরে পুণ্যস্নান সেরেছেন। সাধু-সন্ন্যাসীদের পাশাপাশি সাগরতটে সাধারণ পুণ্যার্থীদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। পুণ্যস্নান সেরে বুধবার সকাল থেকেই একে একে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছেন তীর্থযাত্রীরা। প্রতিবারের মতো এবারও কোনও ছোট-বড় দুর্ঘটনা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সাগরমেলার পুণ্যস্নান মিটেছে। শুধুমাত্র কয়েকজন তীর্থযাত্রী স্নানের পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এয়ারলিফ করে জরুরিভিত্তিতে কলকাতার হাসপাতালে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, মেলায় আসা তীর্থযাত্রীর মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে চারজনই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। মোট ৯ জনকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে উড়িয়ে এনে কলকাতার একাধিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও মেলার নিরাপত্তায় কড়া মনোভাব ছিল রাজ্যের। মন্ত্রী জানিয়েছেন, মোট ১৩ হাজার পুলিশকর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত ৪৫৫টি পকেটমারির ঘটনা ঘটলেও ৪৩২টি ক্ষেত্রেই খোয়া যাওয়া জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে মোট ৮৯৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেলায় এসে নিখোঁজের সংখ্যা ৬৬৩২। যার মধ্যে ৬৬২৭ জনকেই উদ্ধার করে তাঁদের পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছে। সবার প্রচেষ্টায় মেলা পুরোপুরি সুশৃঙ্খল, নিরাপদ এবং দেশের মধ্যে একমাত্র পরিবেশবান্ধব মেলা হিসেবে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের। প্লাস্টিক ও থার্মোকলের পরিবর্তে জুট ও কাগজের ব্যবহার করা হয়েছে এবারের মেলায়। সমুদ্রতট সবসময় পরিষ্কার রাখার জন্য ৩ হাজার কর্মীও নিয়োগ করা হয়।

আরও পড়ুন-মাওবাদী বিকাশের যাবজ্জীবন বহাল রাখল হাইকোর্ট

মেলার শেষদিনেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তীব্র আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে। মঙ্গলবার গঙ্গাসাগরে গিয়ে রাজ্য বিজেপির ট্রেনি সভাপতি উল্টোপাল্টা মন্তব্য করেন। বিজেপির ট্রেনি সভাপতির মন্তব্যের পাল্টা অরূপ বিশ্বাস বলেন, রাজ্যে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে সাফল্য না পাওয়ায় তাঁর মাথার ঠিক নেই। ভোটের কথা মাথায় রেখে আমরা গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করি না। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এই মেলার আয়োজন করে সরকার। সবকিছুতেই লাভ খোঁজার প্রয়োজন নেই!

Latest article