কোটি তারার আলোক ছায়াপথে
অগণিত নক্ষত্রের রূপালি আগুন ঝরা রাতে, গভীর আবেগে, আকুল দৃষ্টিতে, এই বিপুল ব্রহ্মাণ্ড নিয়ে ভেবেছি অনেক, নিবদ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেছি ওই ছায়াপথ বরাবর…, বোঝার চেষ্টা করেছি আকাশের রহস্যময়তাকে, প্রতিদিনের আকাশে ওই তারাদের নাম রেখেছি গুনে গুনে, তবে পরের দিন তাদের প্রাচুর্য আবার সবটা গুলিয়ে দিয়েছে! এই চির মানব-বিস্ময়ের তৃষ্ণা মেটাতে সাম্প্রতিক কালে একদল বিজ্ঞানী খুঁজে পেলেন এক দানবীয় অথচ সৃষ্টি সেরা এযাবৎ কালের সবচেয়ে উজ্জ্বল নৈসর্গিক বস্তু— একটি উজ্জ্বলতম কুয়াসার, একটি ছায়াপথীয় নিউক্লিয়াস।
অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর গ্র্যাভিটেশনাল অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এ গবেষণারত বিজ্ঞানী ক্রিশ্চিয়ান উল্ফ ও রিসার্চ স্কুল অব অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এ গবেষণারত বিজ্ঞানী স্যামুয়েল লাই, ক্রিস্টোফার এ ওঙ্কেন, নীলেশ অমৃথা; চিলির ইউরোপীয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরির ড. ফুয়াঁ বিয়াঁ; অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ফিজিক্সে কর্মরত ড. উই জি হঁ, ড. রচেল এল ওয়েবস্টার; এবং প্যারিসের সর্বন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ড’ অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ডে প্যারিসের বিজ্ঞানী প্যাট্রিক টিসারান্ড-এর সম্মিলিত একটি গবেষণাপত্র সাম্প্রতিক কালে বিখ্যাত ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এই পত্রে তাঁরা দাবি করেছেন, তাঁরা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে উজ্জ্বল বস্তুটিকে খুঁজে পেয়েছেন, ওটা একটি কুয়াসার বা একটি উজ্জ্বলতম গ্যালাক্টিক নিউক্লিয়াস বা ছায়াপথীয় কেন্দ্রস্থল, নাম জে০৫২৯-৪৩৫১।
আরও পড়ুন-পুলিশকর্মীদের পোস্টিং-বদলিতে নয়া নিয়ম, আবেদন শুধু অ্যাপে
রেকর্ড ব্রেকিং ঔজ্জ্বল্য
সৃষ্টির সেই আদিম লগ্ন থেকেই আমরা আমাদের মাথার উপর ‘প্রথম দিনের সূর্যে’র ঔজ্জ্বল্যের সঙ্গেই সুপরিচিত, কিন্তু বিজ্ঞানীদের এই সাম্প্রতিক খোঁজ— জে০৫২৯-৪৩৫১ কুয়াসার ওই সূর্যের চেয়েও ৫০০ ট্রিলিয়ন অর্থাৎ ৫০০ লক্ষ কোটি গুণ বেশি উজ্জ্বল। ভাবা যায়! ওই মহাশূন্যে দৃশ্যমান অন্যান্য কুয়াসারের চেয়ে এটি সবচেয়ে উজ্জ্বল শুধু তা নয়, এই ব্রহ্মাণ্ডের এযাবৎকালের উজ্জ্বলতম বস্তুই হল এই আবিষ্কৃত কুয়াসারটি।
কুয়াসার বৃত্তান্ত
কুয়াসার আসলে একটি প্রায় সদৃশ নাক্ষত্রিক বস্তু বা সক্রিয় ছায়াপথীয় কেন্দ্রস্থল, যাকে ইংরেজিতে জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলা হয় ‘কসি স্টেলার অবজেক্ট’ বা ‘অ্যাকটিভ গ্যালাক্টিক নিউক্লিয়াস’। এটি কোনও একটি ছায়াপথের নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের একটি ছোট্ট অংশ যেটা ওই ছায়াপথের বাকি অংশের চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণভাবে অনেক বেশি উজ্জ্বল, যার ঔজ্জ্বল্যের কাছে বাকি অংশ প্রায় নিমীলিত হয়ে পড়ে! ক্রমশ এই অঞ্চলটি তার চতুর্দিকে নিবিড় ভাবে সৌর ভর জড়ো করে এবং রেডিও ওয়েভ বা বেতার তরঙ্গ থেকে গামা রশ্মি প্রবাহিত হয়। এই জটিল অঞ্চল থেকে নিঃসৃত তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ বরাবর প্রচুর পরিমাণে শক্তির নির্গমন ঘটে।
এই প্রকার কুয়াসার কিংবা অ্যাকটিভ গ্যালাক্টিক নিউক্লিয়াস মূলত একটি দানবীয় ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর দ্বারা পরিচালিত হয়, যাদের ভর কয়েক মিলিয়ন থেকে কয়েক দশক বিলিয়ন সৌর ভরের সমান। কৃষ্ণ গহ্বর বা কৃষ্ণ বিবর হল এই মহাবিশ্বের অস্তিত্ব ও তার প্রকৃতি সংক্রান্ত একটি জটিল মহাজাগতিক ধারণা। একটি ব্ল্যাক হোল একটি কালো অন্ধকার নৈসর্গিক অঞ্চল যা অত্যন্ত নিবিড় ভাবে সৌর ভর দিয়ে গঠিত, এবং যেখানে মহাকর্ষীয় বল এত বেশি শক্তিশালী যে সেখান থেকে কোনও বস্তু, এমনকী আলো এবং তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ পর্যন্ত এতটাও শক্তি উৎপন্ন করতে পারে না, যে ওই অন্তঃস্থ মহাকর্ষীয় বল উপেক্ষা করে গহ্বর ছেড়ে মুক্ত হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে।
আরও পড়ুন-ঝাড়খণ্ডের চাইবাসায় আইইডি বিস্ফোরণে আহত সিআরপিএফ সাব-ইন্সপেক্টর প্রয়াত
একটি কুয়াসারের অন্তরে দৈত্যাকৃতি কৃষ্ণগহ্বর এবং বহির্ভাগে গ্যাসীয় ভরের চাকতি পরিলক্ষিত হয়; এই গ্যাস যখন গহ্বরের দিকে ছুটে যায়, তখন সেটা প্রচণ্ড গরম হয় এবং শক্তি উৎপন্ন করে; ফলস্বরূপ ঔজ্জ্বল্য বেড়ে যায়। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে, যখন ওই অন্তরীক্ষে কোনও একটি ছায়াপথীয় বস্তু থেকে বেতার তরঙ্গ প্রবাহিত হতে দেখে, তখন প্রথম এই ধরনের মহাকাশীয় বস্তু সম্পর্কে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা জন্মায়। এর পর হাবল স্পেস টেলিস্কোপের বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের পর উঠে আসে, এইরূপ উজ্জ্বল কুয়াসার সেই সমস্ত ছায়াপথ বা গ্যালাক্সির মধ্যে দেখা যায় যারা পরস্পর মিথষ্ক্রিয়া করে এবং কখনও কখনও সম্পূর্ণরূপে যুক্ত হয়ে একটি নতুন গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ তৈরি করে। মহাকাশ বিজ্ঞানের কথায়, ওরা ইন্টার্অ্যাক্টিং গ্যালাক্সি বা মার্জিং গ্যালাক্সি হিসেবে পরিচিত।
তবে, তাইওয়ান আমেরিকান জ্যোতির্পদার্থবিদ ড. হং-ই চিউ ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্স-এর পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিখ্যাত ‘ফিজিক্স টুডে’ ম্যাগাজিনে এক বিশেষ ধরনের মহাজাগতিক বিভ্রাটকর বস্তুর বর্ণনা দিতে গিয়ে এই ‘কুয়াসার’ শব্দটির ব্যবহার করেছিলেন। তাঁর মতে, কুয়াসার হল বেতার তরঙ্গ উৎপাদনকারী একপ্রকার নক্ষত্রের মতো দেখতে মহাজাগতিক বস্তুর কসমিক কনসেনট্রেশন। এইসব কোয়াসারের বহির্ভাগে একপ্রকার লাল আলোর প্রভা দেখা যায়, একসময় যাদের মধ্যস্থিত তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণের ফ্রিকোয়েন্সি ও প্রোটন এনার্জি কমে যায় এবং ওয়েভলেন্থ বা তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। এরফলে ওই নৈসর্গিক বস্তুর আলোক বর্ণালির সরণ ঘটে দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের দিকে, যা রেডশিফ্টস্ অব কুয়াসার নামে চিহ্নিত। এই রেডশিফ্ট বর্ণালিবিক্ষণের ফলেই এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষ কুয়াসার চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। মনে করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের কুয়াসারটি পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রাপ্ত কুয়াসারটি উজ্জ্বলতম, সবচেয়ে ভারী এবং সবচেয়ে বড় আকারের কুয়াসার বলেই বিজ্ঞানীদের দৃঢ় বিশ্বাস।
আরও পড়ুন-আগেই সিবিআই এফআইআরে নাম ছিল অভিযুক্ত বিচারপতির
আস্ত সূর্য গিলে খায়
জে০৫২৯-৪৩৫১ কুয়াসারটির মধ্যেও একটি বিশাল কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল রয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত সমস্ত গহ্বরের চেয়ে এটাই সবচেয়ে বড়, ভরযুক্ত এবং দ্রুততার সঙ্গে বর্ধনশীল। মজার বিষয়, মানব শরীরে তো একটাই পাকস্থলী, গরুর দেহেও একটাই পাকস্থলী কিন্তু চারটে প্রকোষ্ঠ, তাই তো এত এত বিপুল পরিমাণে আহার করে, এমনকী উদ্ভিদের স্টার্চ পর্যন্ত হজম করে ফেলে। কিন্তু এই কুয়াসার কিংবা তার কেন্দ্রীয় কৃষ্ণ বিবর— যেন একটা পুরাণকালের রাক্ষস। প্রতিদিন কিনা একটা আস্ত সূর্যকে গিলে খায়!
কুয়াসারের মাঝখানের বিশাল ব্ল্যাক হোলটির চারপাশে মূলত বৃত্তাকার অ্যাক্রিশন ডিস্ক বা পরিবৃদ্ধি চাকতি দেখা যায়; এই ভর চাকতি চারপাশের বিচ্ছুরিত পদার্থ বা ভর দিয়ে গঠিত হয়। ওই মহাশূন্যে সাধারণত এই চাকতিগুলো ০-৬০ ডিগ্রি কোণে অবস্থান করে। এই নতুন কুয়াসারের ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত অ্যাক্রিশন ডিস্কটি এই ব্রহ্মাণ্ডে উপস্থিত অন্যান্য ডিস্কের তুলনায় সবচেয়ে বড়। এর ব্যাস প্রায় ৭ আলোকবর্ষ দৈর্ঘ্যের সমান, এই দূরত্ব আমাদের সৌরজগতের সূর্য থেকে নেপচুন গ্রহের কক্ষপথের দূরত্বের প্রায় ১৫ হাজার গুণ।
এই কৃষ্ণগহ্বরটি ওই পরিবৃদ্ধি চাকতি থেকে প্রতিদিন প্রায় এক সৌর ভর পরিমাণ কিংবা তারও বেশি ভর নিজের কেন্দ্রস্থ করে। বর্তমানে এর ভর সূর্যের ভরের প্রায় ১৭০০ কোটি গুণ, বছরে প্রায় ২৮০-৪৯০টি আস্ত সূর্যকে গিলে খায়! এইভাবেই এটি সবচেয়ে বড়, ভারী, এবং দ্রুততম বর্ধনশীল কৃষ্ণগহ্বর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। পরিবৃদ্ধি চাকতি থেকে ভরের সঙ্গে সঙ্গে গ্যাসও ব্ল্যাক হোলের দিকে ছুটে যায় এবং প্রচুর পরিমাণে আলোকশক্তি উৎপন্ন করে, প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১০৪৮.৩৭ আর্গ। এই জন্যই এই কুয়াসার মহাজাগতিক ঔজ্জ্বল্যের এক নতুন রেকর্ড গড়েছে। পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে এই কুয়াসারটি এতটাই দূরে অবস্থিত যে, এর আলো পৃথিবীর বুকে আসতে ১২০০ কোটি বছরেরও বেশি সময় লেগে গেল।
মহাজাগতিক খোঁজ
আশ্চর্যের বিষয়, যখন আমাদের কাছে অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ কুয়াসারের ঠিকানা আছে, তখনও আমরা এই মহাজাগতিক বিস্ময় ‘কুয়াসারে’র সন্ধান পাইনি, এমনটাই আক্ষেপ করেছেন বিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার ওঙ্কেন। ওই বিস্তীর্ণ আকাশের বুকে কুয়াসার অনুসন্ধানের জন্য প্রয়োজন নিখুঁত পর্যবেক্ষণ। সচরাচর এই ধরনের বৈজ্ঞানিক নিরীক্ষার জন্য প্রচুর পরিমাণে তথ্যের বিশ্লেষণ এবং কুয়াসার চিহ্নিতকরণের জন্য বিজ্ঞানীরা মেশিন লার্নিং মডেলের সাহায্য নিতেন, এবং এইসব মডেল মোটামুটিভাবে প্রাপ্ত কিংবা সংরক্ষিত তথ্যের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় অনেক সময় সঠিক ফল পাওয়া সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রেও এই জে০৫২৯-৪৩৫১ কুয়াশার টিকে তার ঔজ্জ্বল্যের জন্য ভূল করে একটি নিকটবর্তী ১৬ ম্যাগনিচুডের নক্ষত্র ভাবা হয়ে ছিল, এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির গাইয়া স্পেস টেলিস্কোপ ডেটা ক্যাটালগ-২০২২ এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু গতবছর অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ২.৩ মিটার টেলিস্কোপের সাহায্যে এটিকে কুয়াসার হিসেবে পরিগণিত করেন। আরও সূক্ষ্মভাবে নানা বিশেষত্বের সঙ্গে চিলির অ্যাটাকামা মরুভূমিতে অবস্থিত ইউরোপীয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরির খুব বড় দূরবীক্ষণ যন্ত্রের ‘এক্স-শ্যুটার স্পেকট্রোমিটারে’র সাহায্যে বিজ্ঞানীরা এই কুয়াসারটিকে নতুন করে আবিষ্কার করেন। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কাই-ম্যাপার সাউদার্ন স্কাই সার্ভে’ অনুযায়ী আবিষ্কৃত এই রেকর্ড ব্রেকিং কুয়াসারটির নাম রাখা হয়, ‘এসএমএসএস জে০৫২৯১৫.৮০-৪৩৫১৫২.০’, সংক্ষেপে বলা হয় জে০৫২৯-৪৩৫১।
আরও পড়ুন-ভূ-মানচিত্র তৈরিই লক্ষ্য ড্রোনের মাধ্যমে জরিপ
দর্শনামার্গ
বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান জারি আছে, আগামী দিনে আরও সূক্ষ্মতা, দক্ষতার সঙ্গে আরও নতুন নতুন কসমিক সম্ভাবনার সন্ধান দিতে ওঁরা একাগ্রচিত্ত। বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য, আগামীতে ইউরোপীয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরির বড় টেলিস্কোপের গ্রাভিটি+ ইন্টারফেরোমিটার আরও নিখুঁত ভাবে ব্ল্যাক হোলের ভর নির্ণয় করতে সক্ষম হবে। এছাড়াও তাঁরা আরও মনে করেন চিলির অ্যাটাকামা মরুভূমিতে তৈরি হচ্ছে ৩৯ মিটারের অতিরিক্ত বড় টেলিস্কোপ, যা ভবিষ্যতে আরও অনেক কুয়াসার এবং নৈসর্গিক বিস্ময় বস্তুর খোঁজ দেবে।
এইপ্রকার কুয়াসারের সন্ধান এবং গবেষণা বিজ্ঞানীদের গভীরভাবে ব্ল্যাক হোল রহস্যকে জানতে সাহায্য করবে, হয়তো জানা যাবে কেন কৃষ্ণগহ্বর এত বেশি ভর সঞ্চয় করে, কেনই বা কুয়াসার এত বেশি উজ্জ্বল, কুয়াসার গঠনের পিছনে একটি সক্রিয় নিউক্লিয়াসের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, অ্যাক্রিশন ডিস্কের চতুর্দিকে এত তাপ ও বিকিরণের রহস্য কী! হয়তো বোঝা সম্ভব হবে ছায়াপথ কেন তৈরি হয়, কীভাবেই বা তৈরি হয়, আবার তার বহির্ভাগে রেডশিফ্টস্ তৈরির মাধ্যমে কেনই বা ‘কসমোলজিক্যাল অরিজিন’ তত্ত্বের জন্ম দেয়। এইসব নতুন নতুন কুয়াসার আমাদের সেই বিগব্যাঙ ঘটনার পরবর্তী ব্রহ্মাণ্ডকে জানতে সাহায্য করবে। দেখাবে নতুন পথের ঠিকানা, ওই জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে এ এক অবাক সম্ভাবনা।