প্রতিবেদন : অমিত শাহর মিথ্যাচার, আর তারই পরিণতিতে এবার লোকসভা নির্বাচনের মুখে অশান্তি শুরু নাগাল্যান্ডে (Nagaland)। মণিপুরের শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ রাজ্যের গেরুয়া সরকার। প্রশাসন চালাতে প্রতিমুহূর্তেই হোঁচট খাচ্ছে তারা। এবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য নাগাল্যান্ডে ধিকি ধিকি করে জ্বলতে শুরু করেছে ক্ষোভ আর অশান্তির আগুন। মিথ্যাচার এবং প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে। নাগাল্যান্ড (Nagaland) ভেঙে পৃথক রাজ্য পূর্ব নাগাল্যান্ড গড়ার দাবিতে শুরু হয়েছে আন্দোলন। দাবি আদায়ের লড়াই জোরদার করতে তৈরি হয়েছে আন্দোলনকারী বেশ কয়েকটি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ‘ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশন’। মোট ৭টি জনজাতি গোষ্ঠীর এই যৌথমঞ্চের ডাকে বুধবার থেকে ডাক দেওয়া হয়েছে ‘জনতার জরুরি অবস্থা’। শুক্রবার পালিত হচ্ছে বন্ধ। আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি, দাবি না মানা হলে বয়কট করা হবে লোকসভা ভোট। স্বাভাবিকভাবেই প্রবল চাপের মুখে রাজ্যের এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
আরও পড়ুন- রাজ্যসভায় বিশিষ্ট লেখিকা সুধা মূর্তি, মনোনয়ন রাষ্ট্রপতির
মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন ৬টি জেলা নিয়ে আলাদা পূর্ব নাগাল্যান্ড গড়ার দাবি কিন্তু মাথাচাড়া দিয়েছিল কয়েকবছর আগেই। পূর্ব নাগাল্যান্ডের মন, তুয়েনসাং, কিফিরে, নোকলক, লংলেং এবং শামাতোরকে— এই ৬টি জেলা নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনও চলছিল তলে তলে। আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধি দল দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সওয়াল করেছিল পৃথক রাজ্যের দাবির পক্ষে। কিন্তু কোনও ইতিবাচক সাড়া না মেলায় ২০২৩-এ ফেব্রুয়ারিতে নাগাল্যান্ডের বিধানসভা ভোট বয়কটের ডাক দেয় আন্দোলনকারী সংগঠনগুলো। ঠিক এই সময়টাতেই মিথাচারের অভিযোগ উঠেছে অমিত শাহর বিরুদ্ধে। নাগাল্যান্ডে ভোট প্রচারে গিয়ে আন্দোলনকারীদের তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিজেপি এবং ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টির জোট ক্ষমতায় এলে ইতিবাচক সমাধান হবে। কিন্তু তারপরে কেটে গিয়েছে একবছরেরও বেশি সময়। পৃথক রাজ্যের দাবি মানা তো দূরের কথা, শাসক নেতাদের ধারেকাছেও ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি আন্দোলনকারীদের। তারফলে বিজেপি এবং তার বন্ধুদলের বিরুদ্ধে এবারে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে পৃথক রাজ্যের দাবিদারদের। লোকসভা ভোটের মুখে তীব্র গণ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন পূর্ব নাগাল্যান্ডের কন্যাখ নাগা জনগোষ্ঠীর নেতারা। বিরোধীতায় নেমেছে রাজধানী কোহিমা-সহ পশ্চিম ও মধ্য নাগাল্যান্ডের আদিবাসিন্দা টাংখুল নাগারা। ফলে কার্যত বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে নাগাল্যান্ড। লোকসভা নির্বাচনের মুখে গভীর অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।