ওয়াশিংটন: ভারতের উপর যে শুল্ক আরোপ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তা অবৈধ। তিন মার্কিন জনপ্রতিনিধি (হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর সদস্য) জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার মাধ্যমে ভারতের আমদানির ওপর ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত বাতিল করার লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব পেশ করেছেন। তাঁরা এই শুল্কগুলিকে ‘অবৈধ’ এবং আমেরিকান কর্মী, ভোক্তা, এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর বলে অভিহিত করেছেন। প্রতিনিধি ডেবোরা রস, মার্ক ভেসি এবং রাজা কৃষ্ণমূর্তি এই প্রস্তাবের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা ব্রাজিল থেকে আমদানির ওপর একই ধরনের শুল্ক বাতিলের জন্য আনা সেনেটের একটি দ্বি-দলীয় পদক্ষেপ এবং আমদানি শুল্ক বাড়ানোর জন্য প্রেসিডেন্টের জরুরি ক্ষমতা ব্যবহারের ওপর লাগাম টানার চেষ্টার পরবর্তী পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন-বিষ্ণুপুর বাইপাসে রাজ্য গড়ে তুলবে সাততলার আধুনিক মার্কেটিং হাব, মউ স্বাক্ষরের পর হল জমি পরিদর্শন
প্রকাশিত বিবৃতি অনুসারে, এই প্রস্তাবটি ইন্টারন্যাশনাল এমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট (আইইইপিএ)- এর অধীনে ২৫ আগস্ট, ২০২৫-এ ভারতের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ ‘সেকেন্ডারি’ শুল্ক তুলে নেওয়ার লক্ষ্য রাখে, যা পূর্ববর্তী পারস্পরিক শুল্কের সঙ্গে যোগ হয়ে ভারতীয় পণ্যগুলির ওপর মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছিল। কংগ্রেসওম্যান রস বলেছেন যে, ‘‘বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং একটি প্রাণবন্ত ভারতীয় আমেরিকান সম্প্রদায়ের মাধ্যমে নর্থ ক্যারোলিনার অর্থনীতি ভারতের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত।’’ তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে ভারতীয় সংস্থাগুলি এই রাজ্যে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে, যা জীবন বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রগুলিতে হাজার হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে৷ এর পাশাপাশি নর্থ ক্যারোলিনার উৎপাদকরা বার্ষিক শত শত মিলিয়ন ডলারের পণ্য ভারতে রফতানি করে। কংগ্রেসের সদস্য ভেসি যোগ করেছেন যে, ‘‘ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত অংশীদার, এবং এই অবৈধ শুল্কগুলি সাধারণ উত্তর টেক্সানদের ওপর একটি করের বোঝা, যারা ইতিমধ্যেই ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সাথে লড়াই করছে।’’
এদিকে, ভারতীয়-আমেরিকান কংগ্রেসের সদস্য কৃষ্ণমূর্তি মন্তব্য করেছেন যে শুল্কগুলি ‘‘বিপরীত ফলদায়ক, সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটায়, আমেরিকান কর্মীদের ক্ষতি করে এবং ভোক্তাদের জন্য খরচ বাড়িয়ে দেয়।’’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, এগুলি বাতিল করা হলে মার্কিন-ভারত অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার হবে। কৃষ্ণমূর্তি আরও বলেন, ‘‘আমেরিকান স্বার্থ বা নিরাপত্তা বৃদ্ধির পরিবর্তে এই শুল্কগুলি সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটায়, আমেরিকান কর্মীদের ক্ষতি করে এবং ভোক্তাদের জন্য খরচ বাড়িয়ে দেয়। এই ক্ষতিকর শুল্কগুলি বাতিল করা হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সাথে নিয়ে আমাদের অভিন্ন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রয়োজনগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে।’’ এই প্রস্তাবটি কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের একতরফা বাণিজ্য নীতিগুলিকে চ্যালেঞ্জ জানানো এবং ভারতের সাথে আমেরিকার সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ। এর আগে অক্টোবরে, রস, ভেসি, এবং কৃষ্ণমূর্তি সহ কংগ্রেসের সদস্য রো খান্না এবং আরও ১৯ জন কংগ্রেস সদস্য প্রেসিডেন্টকে তাঁর শুল্ক নীতিগুলি প্রত্যাহার করে ভারতের সাথে দুর্বল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মেরামত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ভারত শুল্ক বাতিল করা হল বাণিজ্য সংক্রান্ত কংগ্রেসের সাংবিধানিক কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধার এবং প্রেসিডেন্টকে তাঁর ভ্রান্ত বাণিজ্য নীতিগুলি একতরফাভাবে চাপিয়ে দেওয়ার জন্য জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখার জন্য কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাটদের একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ।

